বিজ্ঞানস্বাস্থ্য বার্তা

জেনে নিন মধুর যত গুণ ও উপকারিতা ।

মধু শুধু খাবার হিসেবে নয়, রূপচর্চার ক্ষেত্রেও ব্যবহার করা হয় ।এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং নিয়মিত মধু সেবন করলে অসংখ্য রোগব্যাধি থেকে মুক্ত থাকা যায়।

মধু আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়ায়। এটি কর্মশক্তি বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। শিশুরা দুধের সঙ্গে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে খেলে সারা দিন সক্রিয় থাকবে। মধু হজমশক্তিকে বাড়িয়ে তোলে। মধুর কপার, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ শরীরের হিমোগ্লোবিন গঠনে সহায়তা করে। প্রতিদিন এক চা-চামচ মধু খাওয়ার গুণাগুণ বলে শেষ করা যাবে না।

এক গ্লাস কুসুমগরম পানির সঙ্গে মধু মিশিয়ে খেলে বিপাকক্রিয়া ভালো কাজ করবে। ওজন কমাতে সহায়তা করবে।

ওজন বাড়াতেও মধু সহায়তা করে থাকে। ১ গ্লাস কুসুমগরম দুধের সঙ্গে ১ চা-চামচ মধু আমাদের ওজন বাড়াতেও সাহায্য করবে।

যুগ যুগ ধরে শুধু শরীর নয়, সৌন্দর্যচর্চায়ও মধুর ব্যবহার হয়ে আসছে। মধু ত্বককে উজ্জ্বল, কোমল ও মসৃণ করে। রূপচর্চায় মধু সাধারণত ‘ফেইস মাস্ক’ ও ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে মধু তৈলাক্ত ত্বকের চেয়ে শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের জন্য বেশি উপকারী।

ডায়রিয়ায় যে পানিশূন্যতা হয়, তা প্রতিরোধে ১ লিটার পানিতে ৫০ মিলিলিটার মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।

সাধারন মানুষ জানে না যে মধুর মধ্যে কত ধরনের আর কি পরিমান খাদ্য মূল্য সঞ্জিত হয়ে আছে। বিজ্ঞানীরা বলেন মানব শরীরের পক্ষে অত্যাবশ্যক ৮০ প্রকারের প্রয়োজনীয় মৌল উপাদান মধুর মধ্যে পাওয়া যায়।

মধুতে নানা ধরনের ভিটামিন রয়েছে। ভিটামিনের অভাবে আমাদের শরীর বেরিবেরি, রিকেট, স্কার্বি প্রভূত জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে। মধু খেলে শরীরে অনেক ধরনের ভিটামিন ও ঢুকতে পারে। বি-১, বি-২, বি-৩ ,বি-৫, বি-৬, বি- ই আর কে ভিটামিনের সন্ধান ও মধুতে পাওয়া গেছে।

ভিটামিন বি-২-১.৫ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-১-০.১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন বি-৬-৫.০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন সি-৫.৪ মিলিগ্রাম। মধুর ব্যবহার তাই চিকিৎসা ক্ষেত্রে এত ব্যপক ও বহুমুখী। এতবেশি খাদ্য মূল্য এর মধ্যে রয়েছে যে, প্রাচীন যুগ, মধ্য যুগ এমনকি বর্তমানের বৈজ্ঞানিক যুগেও মধুর ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।

রাতে ঘুমানোর আগে ১ চা-চামচ মধু এবং সামান্য দারুচিনিগুঁড়া পানিতে মিশিয়ে গ্রহণের অভ্যাস আমাদের অনিদ্রা দূর করতে পারে।

গাজরের সঙ্গে ১ চা-চামচ মধু মিশিয়ে খেলে দৃষ্টিশক্তি বাড়বে।

বেশ কিছু রোগের জীবাণু ধ্বংসে মধুর জুড়ি নেই। এ ছাড়া পোড়া বা ক্ষতের জায়গায় খাঁটি মধু লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

১ চা-চামচ মধুর সঙ্গে ১ চা-চামচ রসুনের রস প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

সাধারণ সর্দি–কাশিতে আদার রস, লবঙ্গের গুঁড়া এবং মধু মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যাবে।

নারীদের মেনোপজের সময়ে শরীর ভালো রাখতে গরম দুধের সঙ্গে হলুদগুঁড়া আর মধু বেশ ভালো কাজ করে।

গর্ভবতী মায়েদের ক্যালরি বাড়ানোর জন্য এবং আয়রনের চাহিদা পূরণের জন্যও মধু ব্যবহার খাওয়া যেতে পারে। শিশুদের বেলায় এক বছরের আগে মধু না দেওয়াই ভালো। কারণ, এর আগে হজমের সমস্যা হয়ে গ্যাস কিংবা ডায়রিয়াও হয়ে যেতে পারে।

Tags

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close