জাতীয়রাজনীতিসারাদেশ
তৃণমূলের ভোট প্রস্তুতিতে আওয়ামী লীগ
এ ছাড়া এ বছরই মেয়াদোত্তীর্ণ বেশ কয়েকটি পৌরসভার ভোট রয়েছে। আগামী বছর শুরু হবে জেলা পরিষদ নির্বাচন। ইউপিতে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আগের বিদ্রোহীদের নৌকা দেওয়া হবে না। আর জেলা পরিষদ নির্বাচন দীর্ঘ সময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছেন, ত্যাগী কিন্তু কোনো কিছু পাননি, এমন প্রবীণ নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে।
আওয়ামী লীগে ব্যস্ততা চলছে তৃণমূলের ভোট প্রস্তুতি নিয়ে। দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র পদে প্রার্থী বাছাই শুরু করেছে ক্ষমতাসীন দলটি। আগামী ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণের তারিখ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ইউপি ভোট শেষ করা হবে।
দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখনো দুই বছর বাকি থাকলেও দলীয় প্রতীকে ইউনিয়ন ও পৌরসভা ভোট হওয়ায় আমরা জনপ্রিয়তা যাচাই করার একটা সুযোগ পাচ্ছি।
এ বিষয়ে তারা বলছেন, যদিও সংসদ নির্বাচন আর স্থানীয় সরকারের নির্বাচন এক নয়। কিন্তু প্রতীকে ভোট হওয়ায় ঘরে ঘরে নৌকার বার্তা যাবে, এটা ভালো দিক। সে কারণে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনেও জয়ের ধারা ধরে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। তাই শুরু হয়েছে দলের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নামক এক ব্যক্তি বলেন, দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ডিসেম্বরের মধ্যে সব ইউপিতে ভোট হবে। বিগত নির্বাচনগুলোর মতোই জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, জনপ্রিয়, স্বচ্ছ ইমেজের প্রার্থীদের নৌকা দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে আমরা প্রার্থী বাছাইয়ের কাজটা শুরু করেছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নীতি অনুযায়ী যারা আগের কোনো নির্বাচনে বিদ্রোহী ছিলেন বা বিদ্রোহীদের সমর্থন দিয়েছিলেন, এবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাদের আর কোনোভাবেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ নেতা তৈরি করে। আমাদের প্রতিটি ইউনিয়নেই প্রায় ৫-১০ জন করে যোগ্য প্রার্থী রয়েছে। সবার কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে।
দীর্ঘদিন করোনার কারণে তৃণমূলে দলীয় কর্মসূচিও তেমন ছিল না। করোনার প্রকোপ কমে আসা এবং দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ এবং কিছু পৌরসভায় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা এখন চাঙা হয়ে উঠেছেন। সরগরম হয়ে উঠেছে তৃণমূলে ভোটের রাজনীতি। দলীয় প্রতীকে ভোট হওয়ার কারণে সবাই তাকিয়ে আছেন, কে হবেন নৌকার মাঝি। আনুষ্ঠানিক ভোটযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগেই পরীক্ষা দিতে হচ্ছে চেয়ারম্যান ও মেয়র প্রার্থীদের। ভোটারদের বাড়ি বাড়ি থেকে শুরু করে দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে নিয়মিত ধরনা দিতে হচ্ছে। কেউ কেউ কেন্দ্রীয় নেতা, বিশেষ করে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় নেতাদের বাসা-অফিসে যাওয়া-আসা বাড়িয়ে দিয়েছেন। মনোনয়নপ্রত্যাশীরা ভাবছেন, নৌকা পেলেই পাস। সে কারণে দলীয় প্রতীক পাওয়ার জোর চেষ্টায় ব্যস্ত সময় পার করছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।