গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার দেশকে বিপর্যায়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশ্বের কাছ থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জনগণের না, তিনি গদি রক্ষার স্বার্থ দেখেন।’
রোববার (৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গণতন্ত্র মঞ্চের ঢাকা থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত ৭দিন ব্যাপি রোডমার্চ কর্মসূচি পালন করার প্রাক্কালে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জোনায়েদ সাকি গণতন্ত্র মঞ্চের ১৪ দফা দাবি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমান সংসদ বিলুপ্ত করে সরকারকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। অবাধ, নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের জন্য অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে।’ এসময় সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করাসহ অন্য দাবিগুলোও তিনি তুলে ধরেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, হবেও না। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে আামদের এই আন্দোলন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের তামাশার নির্বাচনের জন্য আজকে আমেরিকা ভিসা নীতি দিয়েছে। এই ভিসা নীতি দেশের মর্যদাকে ক্ষুন্ন করেছে। ২০১৪ এবং ১৮ সালের মত আরেকটি নির্বাচন সরকার করতে চায় বলে আমেরিকা এই ভিসা নীতি দিয়েছে। সরকার ও সরকারের প্রধান মন্ত্রী দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখেন না।’
এই সরকার দেশকে অর্থনৈতিক সংকটে ফেলেছে উল্লেখ করে গণতন্ত্র মঞ্চের এই নেতা বলেন, ‘এই অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা করার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর নেই। তাই এই সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য গণতন্ত্র মঞ্চের এই রোডমার্চ কর্মসূচি। এরপরই গণঅভুত্থ্যানের মধ্য দিয়ে সরকারকে বিদায় করা হবে।’
গণতন্ত্র মঞ্চের এই কর্মসূচিতে সরকারের পক্ষ থেকে বাধা দেওয়ার আশংকা প্রকাশ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমাদের প্রথম সমাবেশ হবে গাজীপুর চৌরাস্তায়। দ্বিতীয় সমাবেশ হবে টাঙ্গাইলে। ওখানে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করার পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রশাসনও আমাদের সমাবেশ করার স্থান এখন পর্যন্ত নির্ধারণ করে দেয়নি। আমাদের ওপর যত হামলা আসুক না কেন আমরা দিনাজপুর পর্যন্ত রোডমার্চ করবো এবং রংপুরে আগামী ৭ জুন বড় সমাবেশ করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল হক। তিনি বলেন, ‘সরকার যে বাজেট দিয়েছে তা অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ক্ষেত্রে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করবে। গতকাল প্রধান মন্ত্রীর বক্তব্যই প্রমাণ করে সরকার আর্ন্তজাতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই।’
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ করে একটি র্যালি মৎস্য ভবন পর্যন্ত যায়। সেখান থেকে গাড়িতে করে দিনাজপুর পর্যন্ত রোডমার্চ কর্মসূচি শুরু করে গণতন্ত্র মঞ্চ।