জেলা/উপজেলাবিভাগসারাদেশ

ভৈরবে স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পেতে এক নারীর সাংবাদিক সম্মেলন

স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পেতে এবং বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে গতকাল ভৈরব অনলাইন নিউজ ক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে স্বামীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ তুলে ধরেন ঝর্না বেগম। ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়ন এর কালিকাপুর গ্রামের অসহায় রোগাক্রান্ত মাহতাব উদ্দিন এর আইএ পাশ মেয়ে দীর্ঘদিন যাবত সরকারি এ কর্মকর্তার নির্যাতনের কাহিনী

সাংবাদিকদের সামনে লিখিত অভিযোগ তৃলে ধরে বলেন-

ভৈরব উপজেলার গকুল নগর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মনিরুজ্জামান আমাকে গত ২০১৭ ইং সালে ভূমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় এবং বলে মেয়েটি ইন্টারমিডিয়েট পাশ,গরীব,অসহায়।রফিকুল ঝর্নার সরলতার সুযােগ নিয়ে একটি সেলাই মেশিন কিনে দেয়।তার রেশ ধরে সে ঝর্ণার বাড়ীতে নিয়মিত যাতায়াত করে তার মাকে হাত করার জন্য ঝর্নাকে দামী প্রসাধনী সামগ্রী কিনে দিতো এবং টাকা পয়সার লােভ দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যেত। এক পর্যায়ে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। সে বলল আমি অবিবাহিত তুমি যদি রাজি থাক তবে তােমাকে বিবাহ করব এমন ফাঁদে ফেলে আমাকে কু-প্রস্তাব দিতো। আমি রাজি না থাকলে জোর করে তার কার্যালয়ের পিছনের রুমে নিয়ে গিয়ে আমাকে বিয়ে করবে বলে আমার সাথে শারিরীকভাবে মেলা মেশা করে এবং আমার অজান্তে তাহার মােবাইলে শারীরিক মেলা মেশার ছবি,ভিডিও ধারন করে আমাকে ব্ল্যাকমেইল শুরু করে। এবং এভাবে তার কু প্রস্তাবে রাজি না হলে এই ভিডিও ফেইজবুকে ছেড়ে দিবে বলে ভয়ভীতি দেখাইতো।

সে আমাকে মোল্লা দিয়ে কালিমা পরে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে পরে কাজী দিয়ে রেজিষ্ট্রি করে নিবে বলে আশ্বস্ত করেন।আমরা সিলেটেরএকটি অভিজাত আবাসিক ‘সুপ্রিম হােটেলে’ ৩দিন একসাথে ছিলাম।

সে আমার চাপে গত ১০ জুলাই ১৮ ইং সালে ১১লক্ষ ১ টাকা দেনমোহর ধার্য করিয়া কোর্ট মেরেজ সম্পন্ন করে।
বিয়ের ৩ মাসের মধ্যে আমার পেটে রফিকের বাচ্চা আসে।বাচ্চা নষ্ট করার জন্য সে আমাকে টেবলেট খাইয়ে দেয় এবং নিমিষেই আমার বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়।

বাচ্চা নষ্ট করার পর রফিকুল আমার সাথে পল্টি নিল, সে বলল আমার সাথে তার কোন সম্পর্ক নাই এবং কোন সময় সম্পর্ক ছিলও না। আমি উপায় অন্তর না দেখে আমার এলাকাবাসীকে বিষয়টি জানাই। এলাকাবাসী রফিকুলকে ভূমি অফিসে আটক করে ফেলে । বিষয়টি ভৈরব
ভূমি অফিসে অবগত হয়ে ভৈরব থানা পুলিশের সহযােগীতায় রফিকুলকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে নিয়ে
আসেন। নির্বাহী অফিসার বিষয়টি অবগত হয়ে বিবাহের সিদ্ধান্ত নিল, পরবর্তীতে বিয়ের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে
২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপুরণ নির্ধারণ করেন এবং আমার নিকট থেকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। তখন আমার হিতাহিত জ্ঞান না থাকার
কারনে কোথায় স্বাক্ষর দিলাম তা বুঝতে পারি নাই ।একদিন পর জানতে পারলাম আমার এতদিনের ঘরসংসার ও ইজ্জতের মূল্য
নাকি ২ লক্ষ টাকা দিয়ে মিমাংসায় স্বাক্ষর নিয়েছে।

পরে জানতে পারলাম দৈনিক যুগান্তর ৪ ডিসেম্বর ২০ইং সংবাদ ছাপা হয়েছে যাহার হেড লাইন“নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনায় ভৈরবে ভূমি কর্মকর্তাকে বদলি”।এছাড়াও বিভিন্ন অনলাইন পাের্টালে একাধিক নিউজ হয়েছে বলে জানতে পারি ।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি ২১ইং জেলা প্রশাসক কিশােরগঞ্জ বরাবর,পুলিশ সুপার
কিশােরগঞ্জ বরাবর, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২১ইং ভৈরব উপজেলা নির্বাহী
অফিসার বরাবর, আমি এর বিচার দাবী করে আবেদন করেছি যা বিচারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে এক পর্যায়ে ঝর্না আক্তার ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃশাহিন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানার বিরুদ্ধে অভিযোগে বলেন, যে আমি নির্যাতিত হাওয়ার পর মামলা করতে থানায় গেলে ওসি সাহেব প্রথমে মামলা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরেরদিন মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানান এবং গালমন্দ ও করেন।একেইসাথে ইউএনওর কাছে এ বিষয়ে একাধিকবার মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার আজো পাইনি এবং তিনিও আমাকে নানাভাবে গালমন্দ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন এ বিষয়ে তার আবেদনের প্রেক্ষিতে আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট একটি প্রতিবেদন প্রেরন করেছি এ বিষয়ে তিনি আর কিছু বলতে রাজি হননি।

এছাড়াও ঝর্না বলেন রফিকুল ও তার ১ম স্ত্রী নাজনিন আক্তার সহ গুন্ডা ভাড়া করে আমাকে জানে মেরে ফেলার জন্য এসিড নিক্ষেপ করে, যা আমি আমার দু হাত দিয়ে প্রতিহত করতে সক্ষম হই । যাহার ফলে আমার দুহাতে প্রচুর পরিমানে জখম হয়। দীর্ঘ ৪ মাস চিকিৎসার ফলে এখন কিছুটা উন্নতির দিকে তবে আমার ডান হাতের ৩টি আঙ্গুল নিস্তেজ হয়ে গেছে।
রফিকুল মােবাইল ফোন দিয়ে আমাকে বর্তমান কার্যালয় ইটনা রাইটুটি ভূমি অফিসের ঠিকানা দেয় যেতে। আমি গত ১২ এপ্রিল ২১ইং তার দেয়া ঠিকানা মােতাবেক যাই । যাওয়ার পর সে বলে আমাকে চিনে না এবং আমার সাথে খারাপ আচরন করে এবং একপর্যায়ে লাঠি দিয়ে আমাকে মারধর করতে শুরু করে এবং আমি আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পরি । তারপর এলাকাবাসি ও অফিসের লােকজনের সহযােগীতায় আমাকে তার হাত থেকে উদ্ধার করে ।
এ বিষয়ে ইটনা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে গেলে প্রথমে আমার সাথে ভাল আচরন করেন কিছুক্ষন পর
রফিকুল ও তার প্রথম স্ত্রীর সাথে কথা বলার পর নির্বাহী অফিসারও আমার সাথে খারাপ আচরন শুরু করেন। এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সাংবাদিকদের সামনে বার বার কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ঝর্না বেগম ।

সে আরো জানান কর্মহীন প্যারালাইসিস পিতার ২ ভাই বােন প্রতিবন্ধি পরিবারের একজন নিরিহ সহজ সরল মেয়ে আমি আমার উপরােক্ত ঘট নার সঠিক বিচার আপনাদের মাধ্যমে মহামান্য রাষ্ট্রপতি,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,মাননীয় সংসদ সদস্য
ভৈরব-কুলিয়ারচর সহ দেশ বাসীর নিকট এর সঠিক বিচার দাবি করছি। এসময় তার মা হেলেনা বেগম সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য সহ বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close