আইন ও অধিকারজাতীয়

সভা-সমাবেশে ডিএমপির নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার বিধান চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট

সভা-সমাবেশ বা মিছিল নিষিদ্ধ করা বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের ক্ষমতা সংক্রান্ত পুলিশ অধ্যাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে।

আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারসহ চারজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শুনানি বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) পর্যন্ত মুলতবি করেন।

রিটে এই অধ্যাদেশের অধীন পুলিশের দায়মুক্তির বিধান এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ রুলস-২০০৬ এর বৈধতাও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।

জনস্বার্থে ২০ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী, কে এম জাবির, চাঁদুপর বারের আইনজীবী সেলিম আকবর, ও রাজধানীর বাসিন্দা শাহ নুরুজ্জামান, মোহাম্মদ ইয়াসিন এ রিট দায়ের করেন।

রিটে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অ্যর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ এর সেকশন ২৯ ও ১০৫ এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (সভা, সমাবেশ, মিছিল এবং আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণ) রুলস-২০০৬ এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

১০৫ এ বলা হয়েছে, এ অধ্যাদেশের কোনো বিধান অথবা আপাতত বলবৎ অন্য কোন আইন বা তদুদ্দেশ্যে প্রণীত কোন বিধি, প্রবিধান আদেশ বা নির্দেশের অধীন সরল বিশ্বাসে কৃত কোন কাজ বা ক্ষতির জন্য কোন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোন কার্যধারা গ্রহণ করা যাবে না।

সমাবেশের স্বাধীনতা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরস্ত্র অবস্থায় সমবেত হইবার এবং জনসভা ও শোভাযাত্রায় যোগদান করিবার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের থাকিবে।

আইনজীবী আবদুল মোমেন চৌধুরী বলেন, অধ্যাদেশের সেকশন ২৯ সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটা মৌলিক অধিকারের বিরোধী। কারণ সংবিধান বলছে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধা নিষেধ-সাপেক্ষে সমাবেশ করার কথা। আর অধ্যাদেশে পুলিশ কমিশনারকে দেওয়া হয়েছে নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা। দুইটা ভিন্ন জিনিস। তাই এটা সাংঘর্ষিক। এ ছাড়া রুলসে অস্ত্র ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু অস্ত্র কেন ব্যবহার করা হবে?

এর জবাবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সব সময় সমাবেশ বন্ধ করা হয় না। যখন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তখন সমাবেশ বন্ধ করা হয়। যেমন একই স্থানে দুই দল সমাবেশ ডাকলে তো অশান্তি হয়। সংবিধানে বলা আছে জনশৃঙ্খলা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে। তাই জন শান্তির জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

আর সংবিধান অনুসারে তো সভা সমাবেশে অস্ত্র ছাড়া আসার কথা। কিন্তু যখন বোমা হামলা হয়। অস্ত্রের ব্যবহার হয়। আর এরকম কিছু হলে তো পুলিশের ঘাড়ে ওপর দায়পড়ে। সরকারের ওপর দায় পড়ে।

কোন কোন ক্ষেত্রে জনস্বার্থের মামলা করতে পারবে সেটা আপিল বিভাগের রায়ে আছে। এখানে সেই শর্ত পূরণ হয়নি। তাই এ রিট খারিজযোগ্য বলে উল্লেখ করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।

এরপর আদালত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মামলার শুনানি মুলতবি করেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close