আইন ও অধিকারজাতীয়সারাদেশ
নোয়াখালীর সুধারাম থানায় সাহায্য চাইতে যাওয়া তরুণীকে ধর্ষণ, পুলিশ কনস্টেবল বরখাস্ত

নোয়াখালীর সুধারাম থানা বাউন্ডারির ভেতর ট্রাফিক কনস্টেবল কর্তৃক ধর্ষিতা তরুণী নোয়াখালীর সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এর পরপরই নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. সহিদুল ইসলাম ধর্ষক কনস্টেবল মকবুল আহমেদকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
একই সঙ্গে পুলিশ সুপার ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
জুডিশিয়াল আদালত সূত্র জানায়, ২২ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার সময় ভিকটিম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি বিপদে পড়ে পুলিশের সাহায্য চাইতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছি। এর উপযুক্ত বিচার না হলে পুলিশ সমাজের বিচারপ্রার্থী মা-বোনদের এভাবে ধর্ষণ করেই যাবে। তিনি নোয়াখালী এসে বিপদে পড়ে পুলিশের সাহায্য চাওয়া, বারবার ধর্ষিত হওয়া এবং পুলিশের অমানবিক আচরণের কথাও উল্লেখ করেন।
২২ ধারা জবানবন্দি শেষে ভিকটিম, আদালতের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, পুলিশ তাকে পতিতা বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। থানায় ও হাসপাতালে পুলিশ পাহারায় তাকে অকথ্য গালিগালাজ ও খারাপ ব্যবহার করেছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মিজান পাঠান বলেন, কেউ তার সঙ্গে খারাপ ব্যাবহার করেনি, তিনি পুলিশের প্রতি খারাপ আচরণ করেছেন। তিনি হাসপাতালে মেডিকেল টেস্ট করতে রাজি হননি। তাই তার মেডিকেল টেস্ট করানো যায়নি। তাই জুডিশিয়াল আদালতের হাকিমের আদেশে রোববার সিআইডি অফিসে ভিকটিম ও ধর্ষক দুজনের ডিএনএ টেস্ট সম্পন্ন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে জেলা শহর মাইজদী আসেন সেনবাগের বাসিন্দা ভিকটিম (২৩)। একপর্যায়ে তার পরিচিত এক সিএনজি চালকসহ তিন ব্যক্তি তাকে ট্রাফিক অফিসে কনস্টেবল মকবুলের কাছে নিয়ে যান। সেখানে মকবুল তাকে কয়েকবার ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে মকবুলসহ ৪ জনের নাম দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই সুধারাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। রাতেই জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ৪ আসামিকেই গ্রেফতার করে ভোর পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন।