আন্তর্জাতিকজাতীয়
আফ্রিকায় মাইন বিস্ফোরণে ৩ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী আহত হয়েছে
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অশান্ত এলাকায় মাইন বিস্ফোরণে বাংলাদেশি তিন শান্তিরক্ষী আহত হয়েছেন। শনিবার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আফ্রিকার এই দেশে নিয়োজিত জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন এমআইএনইউএসসিএ বলছে, শুক্রবার রাজধানী বানগুই থেকে ৫০০ কিলোমিটারের বেশি দূরের ওহাম-পেনডে প্রদেশের বোহোং এলাকায় ওই বিস্ফোরণ ঘটেছে। বিস্ফোরণে আহতদের মধ্যে দুই বাংলাদেশির অবস্থা গুরুতর।
জাতিসংঘের এই শান্তিরক্ষা মিশন বলেছে, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর পুঁতে রাখা বিস্ফোরক ডিভাইস ব্যবহারের তীব্র নিন্দা জানায় এমআইএনইউএসসিএ। আহত দুই বাংলাদেশি সৈন্যকে হেলিকপ্টারে করে বোয়ার শহরে এমআইএনইউএসসিএ-পরিচালিত একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, বৃহস্পতিবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় এক এলাকায় মাইন বিস্ফোরণে তানজানিয়ার তিন শান্তিরক্ষী আহত হন।
এমআইএনইউএসসিএর তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত আফ্রিকার এই দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে মাইন বিস্ফোরণে দুই নারী ও পাঁচ বছরের এক শিশুসহ অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছেন।
৫০ লাখ মানুষের এই দেশটি বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র এবং বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে আফ্রিকার এই দেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা বিরাজ করছে।
বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই বিশৃঙ্খলায় দেশটির হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতায় সেখানে বড় ধরনের মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে দেশটির সরকারি বাহিনীর দীর্ঘদিনের সংঘাত গত কয়েক মাসে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো দেশের প্রধান প্রধান সব শহর থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর গেরিলা কৌশল বেছে নিয়েছে। শহরের রাস্তাঘাটে বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক ডিভাইস ও মাইন পুঁতে রাখছে এই বিদ্রোহীরা।
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে ২০১৩ সালে ছড়িয়ে পড়া গৃহযুদ্ধ বেশ কয়েক বছর অব্যাহত থাকার পর সম্প্রতি সেখানে সহিংসতা আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত অক্টোবরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ফস্টিন-আর্চেঞ্জ তোয়াডেরা একতরফা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন। সেই সময় ফস্টিন-নেতৃত্বাধীন সরকার বিদ্রোহীদের দখলে যাওয়া দেশটির ৯০ শতাংশ ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারের দাবি জানায়।
কিন্তু দেশটিতে ব্যাপক নিরাপত্তাহীনতা এবং তীব্র খাদ্য সংকট অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এই সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।