আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু এমপি বলেন, ‘বামপন্থি হিসেবে পরিচিতরা যে কথাগুলো বলছেন, তাদের কথার অর্থ, তাদের কথার ইঙ্গিত, তাদের নিজেদেরই বিপক্ষে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে বামপন্থি নেতারা যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা তাদেরই মূল রাজনীতির বিরুদ্ধে যাচ্ছে। বামপন্থিরা বিএনপি-জামায়াতের মতো বক্তব্য রাখছেন। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে পিরোজপুর জেলা সমিতি, ঢাকা আয়োজিত এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে আমু এ কথা বলেন।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমাদের দেশে যারা বামপন্থি তাদের কথা, তাদের রাজনীতি আর বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি ও কথা এক হওয়ার কথা নয়। কিন্তু লক্ষ্য করা যায়, বামপন্থি হিসেবে পরিচিতরা যে কথাগুলো বলছেন তাদের কথার অর্থ, তাদের কথার ইঙ্গিত, তাদের নিজেদেরই বিপক্ষে যাচ্ছে। অর্থাৎ তাদের যে মূল রাজনীতি, তার বিরুদ্ধে যায়। সেটা আমাদের বিরুদ্ধে না, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে না। এই জিনিসটা তারা বোঝেন কী বোঝেন না, এটা আমাদের বোধগম্য নয়।’
তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্টের খুনিদের কূটনৈতিক মিশনের চাকরি দেয়া, পরে রাজনীতিতে আনা, ফ্রিডম পার্টি গঠন করা, তাদের সংসদ সদস্য করা এবং বিরোধী দলে নেয়ার কাজ করেছেন জিয়া, একইভাবে করেছেন এরশাদও। এই দেশে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন জিয়া। তিনি বলেন, তারপরও বাস্তবতার কারণেই বিভিন্ন সময় আমাদের বিভিন্ন আন্দোলনে সহায়ক শক্তি হিসেবে তারা এসেছে, আমরাও ব্যবহার করেছি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। ১৯ বার শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ তাকে রক্ষা করেছেন।’ আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা ‘এই দুর্দিনে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে’ উল্লেখ করে বলেন, ‘লন্ডনের মতো জায়গায় প্রতিটি জিনিসের দাম চার গুণ বেড়েছে। পৃথিবীর সব জায়গায় এই অবস্থা। আমরা তো আমদানির্ভর দেশ। তারপরও আমরা যেসব দেশ থেকে আমদানি করি বা রপ্তানি করি, সেসব দেশের অবস্থা কী, সেটা দেখতে হবে। সব কিছু বিচার-বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, আল্লাহর রহমত আমাদের ওপর আছে। আমরা আশাবাদী, এই বছরের মধ্যে আমাদের সার্বিক অবস্থার পরিবর্তন হয়ে আমরা আগের মতো এগিয়ে যেতে সক্ষম হব।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। সেটা কমিশন আকারেই হোক অথবা ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী হোক। বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত সবার স্বরূপ উন্মোচন করা না হলে, নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাসের কাঠগড়ায় অপরাধী হয়ে থাকতে হবে। ইতিহাসের এ অধ্যায় বিস্মৃত হয়ে জোড়াতালি দিয়ে চললে, রাজনীতি অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।
পিরোজপুর জেলা সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এম শামসুল হকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এবং পিরোজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহ আলম।