জাতীয়
মিয়ানমারে বিকট বিস্ফোরণ, টেকনাফ সীমান্তে আতঙ্ক
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ৩০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ফের মর্টার শেল বিস্ফোরণের ব্যাপক শব্দ ভেসে আসছে। কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের হ্নীলা, জাদিমুড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপসহ আশপাশের এলাকার অধিবাসীরা বলছেন, বিস্ফোরণের শব্দে তাদের ঘরবাড়ি পর্যন্ত রীতিমতো কেঁপে উঠছে। এতে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে সীমান্তবর্তী এলাকায়।
স্থানীয়রা বলছেন, কয়েকদিন বিরতির পর শনিবার (২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে শুরু করেন তারা। রাতভর শব্দে উচ্চকিত ছিল সীমান্ত এলাকা। রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নাফ নদীর ওপারে টেকনাফ সীমান্ত এলাকা জুড়ে থেমে থেমে ভেসে আসছিল মর্টার শেল বিস্ফোরণের আওয়াজ।
টেকনাফ নাইট্যংপাড়া বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, মিয়ানমার সীমান্ত থেকে কিছুক্ষণ পর পরই ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। মনে হচ্ছে মর্টার শেলের আওয়াজ।
শাহপরীরদ্বীপ বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, মিয়ানমার থেকে ৫-১০ মিনিট পর পর মর্টার শেল বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। মাঝে কিছুদিন বন্ধ ছিল। গতকাল (শনিবার) রাত ৯টার দিকে আবার শুরু হয়েছে। বিস্ফোরণের শব্দে সারা রাত ঘুম হয়নি। এখনো না ঘুমিয়ে বসে আছি।
হ্নীলা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে মর্টার শেল বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। সীমান্তের বাসিন্দারা আমাকে জানিয়েছে। সারা রাত থেমে থেমে বিকট শব্দ এসেছে। আমার বাড়ি থেকেও বিকট শব্দ শুনতে পাচ্ছি।
এদিকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে কোনো রোহিঙ্গা নাগরিক যেন বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। বাহিনী দুটি জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিস্ফোরণের শব্দ অবশ্য টেকনাফবাসীর জন্য নতুন কিছু নয়। দীর্ঘ দিন ধরেই দেশটিতে বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী বাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘাত চলছে। সবশেষ গত জুলাইয়ে টানা কয়েকদিন ধরে তীব্র সংঘর্ষ হয় মিয়ানারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মি ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর। মাঝে সংঘাত কমে আসায় সীমান্তের অধিবাসীরা কিছুটা স্বস্তিতেই ছিলেন। শনিবার রাত থেকে ফের নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে তাদের মধ্যে।