সিলেট বিভাগ
ডিসির কাছে আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট: ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদ
মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের সদর উপজেলার মনুমুখ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন ‘সরকারি বরাদ্ধ কারচুপি ও অনিয়ম’ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক (ডিসির) কাছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন অত্র ইউনিয়নের ৭জন ইউপি সদস্য। তবে এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভূয়া ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে করা হয়েছে বলে দাবী করেন ইউপি চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেন।
ডিসি বরাবর দেওয়া লিখিত অভিযোগকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে এমদাদ হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগই মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। টিসিবির পন্য নিয়ে যে অভিযোগ আমার নামে তোলা হয়েছে, সেটা মিথ্যা। টিসিবির পন্য বিতরণের সরকারের একটা নীতিমালা রয়েছে। সেই নীতিমালা অনুযায়ী টিসিবির পন্য বিতরণ করা হয়েছে। আমি এতটুকুই বলতে পারি যে, আমাকে ফাঁসাতে সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। ইউপি সদস্যরা টিসিবির মাল তাদের ওয়ার্ডে নিয়ে নিজেরা বিতরণ করার কথা বলে। কিন্তু টিসিবির মাল নীতিমালা অনুযায়ী ইউনিয়নে বিতরণ করা হবে, ওয়ার্ডে দেওয়া যাবে না বলায় তারা পরিকল্পিতভাবে টিসিবির পন্যের বিতরণের বিষয়ে আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিছেন। তাছাড়া বিতরণ শেষে টিসিবির যে পন্য রয়েছে, সেগুলো রুমে রাখা হয়েছে।’
এমদাদ হোসেন আরো বলেন, ‘অভিযোগের চিঠিতে লেখা ছিল যে, টিসিবির পুরো মালামাল উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণ না করে আমি নিজে বিভিন্ন দোকানে চড়া দামে বিক্রি করেছি, এবং বাড়িতে নিয়ে রেখেছি। কিন্তু তারা আমার বিরুদ্ধে করা অভিযোগের কোন প্রমাণ দিতে পারেনি, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। এসব অভিযোগের কোন সঠিক তথ্য প্রমাণ নেই তাঁদের কাছে। যারা ডিসির কাছে লিখিত অভিযোগ করছে তারাই আমার কাছে দাবী করেছে প্রত্যেকের ওয়ার্ড প্রতি টিসিবির মাল বিতরণ করা হবে, এবং ওয়ার্ড প্রতি দেওয়ার জন্য। তারা নিজেরা নিয়ে দেবে বলছে, তখন আমি বলছি সেটা নীতিমালায় নেই। আইনে নেই, এবং দেওয়ার কোন নিয়মও নেই।’
এমদাদ হোসেন বলেন, ‘অভিযোগকারী ইউপি সদস্যরা টিআর কাবিখার টাকা প্রত্যেকের নামে উপজেলা পরিষদ থেকে ট্রেজারী চেক সংগ্রহ করেন। প্রত্যেকের নামে প্রকল্পের, তাদের নামে সরকারি অ্যাকাউন্টে পে চেক থাকে। অভিযোগকারীগন টিআর-কাবিখার উন্নয়ন সহায়তাসহ সকল বরাদ্দ পেয়েছেন। সদস্যরা ২/৩ টি করে প্রকল্প পেয়েছেন। ১ শতাংশ টাকা দিয়ে ইউপি ভবন সংস্কার করা হয়েছে, যা পরিষদের সর্ব সম্মতি সভার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে হাটবাজার আর এফ কিউ পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য ও নারী সদস্য এবং চেয়ারম্যান, ঠিকাদারের মাধ্যমে করা হয়েছে। সেখানে আমি টাকা আত্মসাত করার কোন প্রশ্নই উঠেনা।’
এমদাদ হোসেন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের ভাগ্য বদলের জন্য আমার চেষ্টা অব্যাহত আছে। আমি যে কাজগুলো করছি মানুষের জন্য। ওরা প্রতিহিংসাবসত, ওঁদের পিছনে একটা শক্তি আছে যারা বিগত ১৬ এর নির্বাচনে বিজয়ী হতে পারেনি। এবারও বিজয়ী হতে না পেরে আমার ইউনিয়নের সদস্যদের উসকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে, আমার মানসম্মান ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। নির্বাচনে বিজয়ী হতে না পেরে ইউপি সদস্যদের উসকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে ও আমার মানসম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. ফজলুর রহমান বলেন, ‘গত কিছুদিন ধরে দেখছি বিভিন্ন মাধ্যমে কে বা কারা মনুমুখ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমদাদ হোসেনকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করছেন। যা অত্যান্ত নিন্দনীয়। আমরা জন্মলগ্ন থেকে এমদাদ হোসেন ভাইকে দেখে আসছি, খুব সৎ ও নীতিবান ব্যাক্তি। জনকল্যাণে নিয়োজিত থাকেন সবসময়। সমাজ সেবাকে ইবাদত মনে করে কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। কিন্তু এক শ্রেণীর লোকজন চেয়ারম্যানকে সমাজে ছোট কারার জন্য পিছনে লেগেছে। আমরা তার তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানাই।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযোগকারী নারী ইউপি সদস্য রেজিয়া বেগমকে সোমবার সাড়ে ৫ টার দিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন। তাছাড়া আরেক অভিযোগকারী ইউপি সদস্য আব্দুল শাহিনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ডিসি বরাবর দেওয়া অভিযোগের বিষয়ে কিছু বলবেন না বলে জানান। উল্লেখ্য, ‘গত ০৫ ফেব্রুয়ারি ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেন অত্র ইউনিয়নের ৭জন ইউপি সদস্য। অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দকৃত সরকারি, আধা-সরকারি (টিআর/কাবিখা) কাজে ১ শতাংশ, অন্যান্য প্রকল্পের কাজ না করে চেয়ারম্যান নিজে মনগড়া প্রকল্প দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন।’