আন্তর্জাতিক

উল্টে গেলো ম্যাক্রোঁর হিসাব-নিকাশ, নতুন ইতিহাসের মুখোমুখি ফ্রান্স

ফ্রান্সে নিজের জনপ্রিয়তা নতুন করে তৈরি করতে স্ন্যাপ ইলেকশন বা দ্রুত নির্বাচনের ডাক দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ। কিন্তু তিনি যা ভেবেছিলেন, বাস্তবে তা হলো না। উল্টে গেলো ম্যাক্রোঁর হিসাব-নিকাশ। নতুন এক ইতিহাসের মুখোমুখি এবার ইউরোপের এই দেশ।

নির্বাচনে অতি দক্ষিণপন্থিদের জনপ্রিয়তা কমাতে জোটবদ্ধ হয়েছিলো ফ্রান্সের বামপন্থি দলগুলো। যার মধ্যে অতি ছোট বামপন্থি দল যেমন আছে, তেমনই সমাজতান্ত্রিক, গ্রিন পার্টির মতো দলও আছে। তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিলো দক্ষিণপন্থিদের জনপ্রিয়তা কমানো।

রবিবারের নির্বাচনের পর দেখা গেলো নিউ পপুলার ফ্রন্ট সব চেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। যদিও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় তারা পৌঁছাতে পারেনি। সব মিলিয়ে তাদের দখলে ১৮২টি আসন। তার ঠিক পরেই আছে মাক্রোঁর মধ্যপন্থি দলের নেতৃত্বে তৈরি জোট এনসেম্বল। তৃতীয় স্থানে দক্ষিণপন্থি এনআর। আর চতুর্থ স্থানে রিপাবলিকান দল।

সোমবার ফলাফলের পূর্বাভাস দেখেই বামপন্থি জোটের অন্যতম নেতা জঁ লুক মেলঁশঁ ঘোষণা করেন, তারাই সরকার গড়বেন। লেফট উইং ফ্রান্স আনবোড (এলএফআই) দলের নেতা তিনি। এই ঘোষণার সময় তার পাশে ছিলেন জোটের অন্য নেতারাও। এরপর গ্রিন পার্টির প্রধানও একই কথা বলেন। তিনি জানান, আমরা জিতেছি। আমরাই সরকার গঠন করবো।

সমাজতান্ত্রিক দলের প্রধান অলিভার ফউরে বলেছেন, নতুন ইতিহাসের মুখোমুখি ফ্রান্স। পপুলার ফ্রন্টকেই ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তার ভাষণে তাদের লক্ষ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন ফউরে। জানিয়ে দিয়েছেন, কোনোভাবেই তারা মধ্যপন্থি জোটের সঙ্গে হাত মেলাবেন না।

এর আগে এই সোশ্যালিস্ট পার্টি বা সমাজতান্ত্রিক দল ক্ষমতায় এসেছে। দুবার ফরাসি সরকার চালানোর অভিজ্ঞতা আছে তাদের। এবারে যেই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, এমন ঘটনার মুখোমুখি আগেও হয়েছে সমাজতান্ত্রিক দল। তখন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ছিলেন কনজারভেটিভ দলের। কিন্তু লোকসভায় নেতৃত্ব দিয়েছে তারা। ফলে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা আছে এই দলের।

মধ্যপন্থিদের সঙ্গে জোটবদ্ধ সরকার গড়তে চান না মেঁলশঁ-র মতো নেতা। মাক্রোঁও চান না মেঁলশঁ-র মতো নেতার সঙ্গে সরকার তৈরি করতে। কিন্তু ফ্রান্সে কোনো জোটই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে যে দলই সরকার গঠন করবে, পার্লামেন্টে তাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে।

এর আগে ২০২২ সালে অতি দক্ষিণপন্থিদের হারাতে সবাইকে এক ছাতার তলায় আহ্বান জানিয়েছিল বামপন্থিরা। এবারও সেই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। সূত্র: আল জাজিরা, সিএনএন

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close