নারায়ণগঞ্জনির্বাচনী হালচালরুপগঞ্জ

ভোটের দায়িত্বে যমুনা ব্যাংকের ২২ জন, তৈমূর-শাহজাহানের আপত্তি

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনে যমুনা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে আপত্তি তুলে তাদের প্রত্যাহারের দাবি করেছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার। তৈমূর আলম আসনটিতে সোনালি আঁশ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন।

এদিকে, একই অভিযোগ তুলে আপত্তি জানিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া। তারাই দুইজনেই সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলার রূপসী এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে তৈমূর আলম খন্দকার গণমাধ্যমে বলেন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের তালিকার মধ্যে ১৭৯ থেকে ২০০ পর্যন্ত যমুনা ব্যাংকের কর্মকর্তারা। যমুনা ব্যাংকের অন্যতম মালিক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী হলেন আমার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা যদি প্রিজাইডিং অফিসার বা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ পান, তাহলে নির্বাচন প্রভাবিত হবে। নির্বাচন কমিশনের কাছে আমার অভিযোগ ও আবেদন, কোনো প্রার্থীর আত্মীয়-স্বজন বা তাদের কোনো কর্মচারীকে যেন নির্বাচন পরিচালনার কাজে নিয়োগ দেওয়া না হয়।

তিনি বলেন, আমি আরেকটি আবেদন করতে চাই। রূপগঞ্জের প্রায় প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গাজী পরিবারের আওতার মধ্যে আছে। গাজী সাহেব, তার স্ত্রী, ছেলে, বেয়াইসহ আত্মীয়-স্বজন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতি পদে আছেন। প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের স্বার্থে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে আবেদন করব, যে প্রতিষ্ঠানে কোনো প্রার্থীর নিয়ন্ত্রণ আছে, সেই প্রতিষ্ঠানের কাউকে যেন নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া না হয়।

এছাড়া নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে শুধু স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ব্যবহার না করে ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি গণমাধ্যমে বলেন, সেনাবাহিনীকে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রাখলে চলবে না। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে হবে। সন্ত্রাসীরা যেন কেন্দ্রে সিল মারতে না পারে সে জন্য সেনাবাহিনীকে কেন্দ্রে অবস্থান করতে হবে। সেনাবাহিনী ডানে-বাঁয়ে ঘুরলে, পজিটিভ কোনো অ্যাকশনে না গেলে ভোটারদের লাভ হবে না। বরং সেনাবাহিনী বিতর্কিত হবে।

এদিকে বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে কেটলি প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা স্বতন্ত্র প্রার্থী রূপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া উপজেলার মুড়াপাড়া বাজার এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা করেন। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, রূপগঞ্জে যমুনা ব্যাংকের কিছু কর্মকর্তাকে প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীসহ তার পরিবারের সদস্যরা যমুনা ব্যাংকের পরিচালক। তাদের কর্মচারীদের যদি প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়, তাহলে সেখানে দুর্নীতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। তাই বলতে চাই, যাতে যমুনা ব্যাংকের কোনো কর্মচারী বা কর্মকর্তাকে নির্বাচনের কাজে সম্পৃক্ত না করা হয়।

স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া রূপগঞ্জে যমুনা ব্যাংকের ২২ কর্মকর্তাকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে বিরত রাখার জন্য সহকারী রিটার্নিং অফিসার রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে চিঠি দেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close