নারায়ণগঞ্জ

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্নবিত্ত থেকে উচ্চবিত্তরাও

নারায়ণগঞ্জ শহরের বাজারগুলোতে নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত হয়ে উচ্চবিত্তরাও হিমশিম খাচ্ছেন নিত্যপণ্যের চাহিদা মেটাতে গিয়ে।

এবার নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির সেই ছোঁয়া লাগলো নারায়ণগঞ্জ শহরের কাঁচা বাজারগুলোতেও। বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে মূল্যবৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।

এবার জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কারণে মূল্যবৃদ্ধির উল্লম্ফন ঘটেছে। এই ভার বহন করা অনেকের পক্ষেই কষ্টদায়ক। সংকটকালে সুবিধাভোগী গোষ্ঠী অধিক মুনাফার লোভে বাজার আরও অস্থিতিশীল করে তোলে।
সংগত কারণেই বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের যথাযথ তৎপরতা জরুরি। প্রথমেই বাজার কারসাজি বন্ধ করতে হবে। পণ্যের যৌক্তিক মূল্য নিশ্চিত করতে হবে।

শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে দিগুবাবুর বাজারসহ বিভিন্ন কাঁচা বাজার ও মুদি দোকানে ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে চাল, আটা, ময়দা, ডিমসহ নিত্যপণ্যের দাম এখন আকাশছোঁয়া। অনেক ক্ষেত্রে এসব পণ্য যেন ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এরপর শাক-সবজির দাম হঠাৎ করেই কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। বেড়েছে মুরগি, মাছ ও মাংসের দামও।

এক সপ্তাহের ব্যবধানে শাক-সবজির দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। শিমের দাম ১৮০ টাকা থেকে ২০০ টাকা, বেগুনের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। ঝিঙে ৬০ টাকা কেজি, পটল ৫০ টাকা, ঢেঁড়শ ৫০ টাকা, এক হালি কাঁচকলা ৩০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, মূলার কেজি ৫০ টাকা, কুড়ি কচু ৪০ টাকা, শসার কেজি ৬০ টাকা, সবুজ শাক ১০০ টাকা, লাল শাক ৮০ টাকা কেজি, পেঁপে ৪০ টাকা কেজি।

দিগুবাবু বাজারে আসা শিল্পি নামে এক ক্রেতা বলেন, দীর্ঘদিন নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমূল্যে মানুষ নাজেহাল। কোনো পণ্যের দাম কমছে না, শুধু বাড়ছে আর বাড়ছেই। মধ্যবিত্তদের জন্য এখন আতঙ্কের জায়গা বাজার। যারা গোনা টাকা দিয়ে সংসার চালান তারা আর হিসাব-নিকাশ মেলাতে পারছেন না।

সবজি বিক্রেতা কামাল বলেন, তেলের দাম বাড়ায় সবজির দাম বেড়ে গেছে। পটোলের দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা ছিল দু-এক দিন আগেও। আর আজকে দাম ৫০ টাকা। অন্যসব সবজির দামও বাড়তি। করলার দাম কেজিতে বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। বাজার চড়া। সব জিনিসের দামই বাড়তি। ফলে পাইকারি পর্যায়েও সব পণ্যের দাম বেড়েছে। এর প্রভাব তো খুচরা বাজারে পড়বেই।

এদিকে প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা কেজি। সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৬ টাকা থেকে ১৬৫ টাকা লিটার দরে। চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮২ থেকে ৮৬ টাকা। মসুর ডালের কেজি ৯০ থেকে ১৩০ টাকা। পেঁয়াজ গত সপ্তাহের মতোই ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

তবে বিশ্ববাজারে দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার পাম তেল ও চিনির দাম কমিয়ে নির্ধারণ করলেও বাজারে সেগুলো এখনো বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। সরকার খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করেছে কেজিপ্রতি ৮৪ টাকা। অথচ পাইকারি বাজারে গতকালও খোলা চিনি বিক্রি হয়েছে ৮৭ টাকা কেজি দরে। যা খুচরায় এখনো ৯০ টাকা। প্যাকেটজাত চিনি কেজিপ্রতি ৯৫ টাকা দর বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। বাজারে নতুন দামের প্যাকেটজাত চিনি এখনো আসেনি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

এছাড়া মাছের বাজারও আছে আগের মতো অপরিবর্তিতই। এক কেজি বা তার ওপরের সাইজের ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকায় আর ছোট ইলিশের কেজি ৫০০-৬০০ টাকা। শিং মাছের কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে টাকি মাছ। রুই মাছের কেজি ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা। কাতল মাছও বিক্রি হচ্ছে রুই মাছের দরে। এক থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে। শোল মাছের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। নলা মাছ ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি।  চিংড়ি মাছ ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া ও পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা দরে। গরুর মাংস ৮৫০ টাকা, খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close