কুমিল্লাচট্টগ্রাম বিভাগ

কুলিয়ারচরের বোনকে ইভটিজিং করার প্রতিবাদ করায় কলেজ ছাত্র খুন!

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় দুর্বৃত্তদের হামলায় কটিয়াদী সরকারি কলেজের বিএসএস সেশন ২০/২১ অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র মোঃ আলম মিয়া(২৩) নামে এক ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) ভোর ৪ টা পনের মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত মোঃ আলম মিয়া ভাটির জগতচর গ্রামের খুরশিদ মিয়ার ছেলে।

পরিবার ও স্থানীয় জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের উত্তর লক্ষীপুর গ্রামে ওয়াজ মাহফিল শুনতে গিয়েছিলেন সেখান থেকে বাড়িতে ফেরার পথে লক্ষীপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের আঙগুর মিয়ার বাড়ির কাছে আসলে রাস্তায় কয়েকজন বখাটে মোঃ আলম মিয়ার মা-বোনদের দেখে নানা অশালীন অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে।

এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে মোঃ আলম মিয়ার ওপর হামলা করে বখাটেরা। এ সময় আলম মিয়ার মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করে তারা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় মোঃ আলমকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার করে প্রথমে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন।

সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শনিবার ভোর ৪ টা পনের মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এলাকায় উত্যেজনার বিরাজ করছে। আলম মিয়ার মৃত্যুর খবর পেয়ে ভাটি জগতচর এলাকাবাসী আজ সকালে হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিচার দাবী করে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

আলম মিয়ার বোন মোছাঃ চুমকি বলেন, আমরা ওয়াজ শুনে বাড়িতে ফেরার পথে আমার ভাই ইপ্টিজিংয়ে বাধা দিলে রকি নামের একজন আমার ভাইকে ধরে রাখে আর শাওন, ভাইয়ের মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করে তাতে আলম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। পরে এলাকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার অবস্থা আশংকা জনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলমকে ঢাকায় রেফার করেন।

আজ শনিবার ভোর ৪ টা পনের মিনিটে ঢাকায় হাসপাতালে মৃত্যু হয়। আলম মিয়ার দুলাভাই মোঃ সুজন মিয়া বলেন, আমার শ্যালক অত্যান্ত ভালো লোক ছিলো সে কোন দিন কারো সাথে ঝগড়া বিবাদ করেনি আমি এই হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির চাই। তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই হত্যার সুষ্ঠু ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

এ ঘটনায় নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান এনামুল হক আবু বাক্কার ও বর্তমান চেয়ারম্যান আব্বাস উদ্দিন সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ নিহতের পরিবারকে তার হত্যার সুষ্ঠ বিচার পাবে বলে আশ্বাস প্রদান করেন।

এ ব্যাপারে কুলিয়ারচর থানার ওসি মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা বলেন, অভিযুক্তরা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য নয়। আর এটা স্কুল-কলেজ থেকে আসা-যাওয়ার পথে কোনো ইভটিজিংয়ের ঘটনাও নয়। ওই দিনমস বিকেল আলম মিয়া তাঁর মা-বাবা ও বোনদের নিয়ে ওয়াজ শুনে বাড়িতে যাওয়ার পথে বখাটেরা উত্ত্যক্ত করে। এরই জের ধরে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে বখাটেদের হাতে আলম গুরুতর আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে ৮ জনের নামে নিহতের ভগ্নিপতি সুজন থানায় মামলা করেন। আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close