আন্তর্জাতিকখেলাধুলাজাতীয়বিনোদন

সাফ ওমেন চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ

সাফের ইতিহাসে নতুন এক ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ। আজ নেপালের দশরথ রঙ্গশালায় অনুষ্ঠিত সাফ ওমেন চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে কৃষ্ণার জোড়া গোলে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে ৫টি আসরের সব কটিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। তবে এবারের আসরের সেমি-ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছে ভারতকে। ফলে আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল নতুন চ্যাম্পিয়ন পাচ্ছে সাফ। আর সেই শিরোপাটি নিজের করে নিল সাবিনা কৃষ্ণারা।
বৃৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে উইনিং কম্বিনেশন নিয়েই আজ মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ এবং নেপাল। সেমিফাইনালের একাদশ নিয়েই মাঠে নামে দল দুটি। তবে যথারীতি পুরো সুস্থ হয়ে উঠতে না পারায় প্রথম ১০ মিনিট খেলেই মাঠ ছাড়তে হয় সিরাত জাহান স্বপ্নাকে। কিছুটা চিন্তার রেখা ফুটে উঠে বাংলাদেশ শিবিরে। হাসি ফোটাতে সময় নেননি স্বপ্নার পরিবর্তিত হিসেবে আসা শামসুন্নাহার জুনিয়র। মাঠে আসার ৪ মিনিট পরেই গোল করে দলকে এগিয়ে দেন শামসুন্নাহার।
ম্যাচের ১৪ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে মনিকা চাকমা ক্রস করলে চলন্ত বলটিকে জালের দিকে ঘুরিয়ে দেন ডি বক্সে থাকা শামসুন্নাহার। কোনাকুনি শটের বলটি জড়িয়ে যায় নেপালের জালে (১-০)।
এর আগে অবশ্য প্রথম মিনিটেই স্বাগতিক শিবিরে আক্রমন করেছিল বাংলাদেশ। বল নিয়ে সাবিনা স্বাগতিক শিবিরে ঢুকে গেলেও তাকে আটকে দেন নেপালের গোল রক্ষক আনজিলা টুম্বাপো। পরের মিনিটেই আক্রমনে যায় নেপাল। ডি বক্সের বাইরে থেকে রাসমি কুমারির ক্রসের বল গ্রিবে নিয়ে নেন বাংলাদেশের গোল রক্ষক রূপনা চাকমা।
ম্যাচের ২৭তম মিনিটে আবারো দারুন একটি আক্রমন রচনা করে বাংলাদেশ। গ্যালারি ভর্তি দর্শকের চিৎকারের বিপরীতে গিয়ে সামসুন্নাহার জুনিয়র ডি বক্সের মধ্য ঢুকে শট নেয়ার সময় নেপালের এক ডিফেন্ডার পেছন থেকে স্লিপ করে করে ব্যকপাস করেন গোল রক্ষককে। ৩৫তম মিনিটে প্রতিআক্রমনে গিয়ে ফ্রি কিক পায় নেপাল। ফ্রি কিক থেকে অনিতা বাসেনেটের জেড়ালো মটের বল বেরিকেট পেরিয়ে জালে প্রবেশের মুহুর্তে দক্ষতার সঙ্গে কর্নারের বিনিময়ে বল ফিস্ট করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক রূপনা।
ম্যাচের ৪৩ তম মিনিটে দ্বিগুন ব্যবধানে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। সাবিনার কাছ থেকে ডি বক্সের সামনে থেকে বল পেয়ে সেটিকে এগিয়ে দেন মারিয়া মান্ডা। দ্রুততার সঙ্গে সেটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ পায়ের শটে গোল করেন কৃষ্ণা রানী সরকার।  ফলে ২-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
বিরতি থেকে ফিরে অবশ্য সফরকারীদের উপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে স্বাগতিকরা। সফলও হয় নেপাল। ম্যাচের ৭০ মিনিটে অনিতা বাসনেট গোল করে ব্যবধান কমিয়ে আনেন (২-১)। উৎসবে মাতোয়ারা হয়ে উঠে মাঠভর্তি আনুমানিক ২০ হাজার দর্শক। তবে তাদের থামাতে বেশী সময় নেয়নি বাংলাদেশ। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে আবারো গোল করে বাংলাদেশকে ৩-১ গোলে এগিয়ে দেন কৃষ্ণা। নিমিষেই স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা স্টেডিয়াম। শেষ পর্যন্ত ওই ব্যবধান নিয়েই মাঠ ছাড়ে গোলাম রব্বানি ছোটনের শিষ্যরা। আর প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের কৃষ্ণা রাণী সরকার।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close