আন্তর্জাতিকজাতীয়

চীনের মুসলিম গণহত্যার প্রতিবাদে সাইকেল র‌্যালী

চীনের জিনজিয়াংয়ের রাজধানী উরুমকিতে মুসলিম উইঘুরদের গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে গণহত্যার ১৩তম বার্ষিকী পালন করেছে বিবিএসএস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) কর্মসূচির অংশ হিসেবে সংগঠনের উদ্যোগে এক সাইকেল র‌্যালী ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্টিত হয়। এতে বিভিন্ন স্কুল কলেজের ছাত্র – ছাত্রী, সাংবাদিক, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান তৌফিক আহমেদ তফছির। উক্ত কর্মসূচিতে সংগঠনের মহাসচিব ও গাজী টিভির প্রযোজক শফিকুল ইসলামের পরিচালনায় সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা এমদাদুল হক ছালেক, বাংলাদেশ জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা মহিউদ্দিন,বিশিষ্ট সাংবাদিক মুস্তাফিজুর রহমান , জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা নাসির উদ্দিন মুন্সী, যুব সংগঠক এম এইস মিল্টন প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে তৌফিক আহমেদ তফছির বলেন, আজ ৫ জুলাই। বিগত ২০০৯ সালের আজকের দিনে সারা বিশ্বে উইঘুর মুসলমানদের উরুমকি দাঙ্গা ও গণহত্যার ১৩তম বার্ষিকী পালন করছে। যা ঐ সময়ে জিনজিয়াং এর রাজধানীর রাস্তায় উইঘুর মুসলমানদের হান চীনাদের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছিল। জিনজিয়াংয়ে জাতিগত অস্থিরতার কারণে সৃষ্ট মারাত্মক দাঙ্গার সম্মুখীন হয়েছিল। উইঘুর জাতিগোষ্ঠীর আবাসস্থল এই অঞ্চলে চীনা সরকারের ক্রমবর্ধমান কঠোর শাসনের অনেকগুলি টার্নিং পয়েন্টের মধ্যে একটি। চীন সরকার অবশেষে আনুমানিক ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন লোককে আটক করে যাকে নিপীড়নের একটি পদ্ধতিগত প্রচারাভিযান হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। যার মধ্যে রয়েছে বন্দী শিবিরে চীনা মুসলমানদের ব্যাপক ভাবে বন্দী করা। চীনা সরকার শক্তি ও নিপীড়নের মাধ্যমে চীনে উইঘুর এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর প্রতি তার ক্রমবর্ধমান আচরণের জন্য এগিয়ে যাওয়ার পথ তৈরি করেছিল।

তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে জুলাই ২০০৯ এর ঘটনাগুলি বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশে শুরু হয়েছিল। চীনের দক্ষিণ-পূর্বে শাওগুয়ানে একটি খেলনা কারখানায় কর্মরত পুরুষ উইঘুর কারখানার কর্মচারীদের বিরুদ্ধে চীনের সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী হান থেকে নারী সহকর্মীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আনা হয়েছিল, যার ফলে দুটি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে করে দুইজন উইঘুর সম্প্রদায়ের মুসলমান নিহত হয়। যদিও বিষয়টি অস্পষ্ট এবং যৌন নিপীড়নের কোন প্রমাণ নেই, আর তাই উইঘুররা জিনজিয়াং এর রাজধানী উরুমকিতে ৫ জুলাই থেকে গুয়াংডং ঘটনার তদন্তের আহ্বান জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হয়, কিন্তু বিষয়টি পরবর্তীতে শহরের উইঘুর এবং হান বাসিন্দাদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষে পরিণত হয়, দাঙ্গা দমন করতে চীনা আধাসামরিক বাহিনীকে ডাকা হয়।

তিনি আরও জানায়, এই উইঘুর বিক্ষোভগুলি সমগ্র অঞ্চলের অন্যান্য শহরে ছড়িয়ে পড়ে, এবং বিদেশী সাংবাদিকদের পরিদর্শন করার এবং উত্তেজনা সম্পর্কে রিপোর্ট করার অনুমতি দেওয়া হলেও, বিক্ষোভের সম্পূর্ণ মাত্রা প্রকাশ করা হয়নি। এ ঘটনায় আনুষ্ঠানিকভাবে মৃতের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭জনের উল্লেখ করা হয়েছিল, যাদের বেশিরভাগই হান, এতে আরো ১,৭০০ জন আহত এবং ১০০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। দাঙ্গার সময় চীনা নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ১২ জন উইঘুর নিহত হয় এবং আরও নয়জনকে বেশ কয়েক মাস পরে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়।

অন্যদিকে আমরা বাংলাদেশের মুসলমানরা চীনা সরকারী বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে উইঘুর মুসলমানদের পাশে সবসময় দাঁড়াব।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close