জাতীয়নারায়ণগঞ্জ
শীতলক্ষ্যার পাড়ে নিখোঁজ আপনজনের অপেক্ষায় স্বজনেরা

নারায়ণগঞ্জের আল আমিন নগর এলাকায় শীতলক্ষ্যার তীরে কেউ নিজের আপনজনের মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। কেউবা আবার অপেক্ষায় আছেন আপনজনের মৃতদেহকে অন্তত একবার দেখার আশায়।
রোববার ২০ মার্চ দুপুরে মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চ ডুবে যাওয়ার ঘটনায় নিখোঁজ হয় ডেমরার বাসিন্ধা আব্দুল আল জাবেদ। কিন্তু তার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন তার পিতা আব্দুল ওয়াহিদ সিদ্দিকী ও তার শ্বশুর আহসান উল্লাহ।
আব্দুল আল জাবেদের স্বজনেরা তার লাশের অপেক্ষায় নৌকা দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোজাখোজি করলেও তার পিতা ওয়াহিদ সিদ্দিকী এখনো ছেলের জীবিত হওয়ার আশায় বিভিন্ন হাসপাতালে খোঁজ করাচ্ছেন। তিনি অশ্রুজড়িত কন্ঠে বলেন, গতকাল সকালে আমার ছেলে আমাকে বলল, সে ঘুরতে যাবে। আমার সাথে কত কথাই তো হলো, এখন সে নিখোঁজ। এটা আমি কিভাবে মানব ?
আহসান উল্লাহ বলেন, আমার মেয়ের জামাইরে এখনো পাইনি। সে নিখোঁজ আছে। আমরা নিজেরা নৌকা ভাড়া করেও খুঁজতেছি।
আব্দুল আল জাবেদের শ্যালক সাব্বির আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, আমার বোনের বিয়ে হয়েছে পুরোপুরি এক বছরও হয়নি। এরমধ্যে এমন একটা ঘটনা ঘটছে। আমার বোনকে সান্তনা দেওয়ার কোন ভাষা নেই। সে দুইবার অজ্ঞান হয়ে গেছে। বেপোরোয়া জাহাজের চলার কারণে এমন অনেক দূর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু কোন বিচার হয়না। বিচার না হলে এই ধরনের ঘটনা আরো ঘটবই। আপনজন না হারাইলে কেউ কষ্ট বুঝব না।
এর আগে রোববার দুপুরে সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন রূপসী-৯ কার্গো জাহাজ নারায়ণগঞ্জ টু মুন্সীগঞ্জগামী আফসার উদ্দিন নামে লঞ্চটি ঠেলে প্রায় ২০০ ফুট দূরে নিয়ে ডুবিয়ে দেয় এ ঘটনায় ঘাতক লঞ্চটি আটক করেছে নৌ-পুলিশ।
ঘটনা তদন্তে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও নৌমন্ত্রনায়ল পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সোমবার বিকাল পর্যন্ত ৮ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় জাহাজের চালকসহ ৮ জনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।