আইন ও অধিকারজাতীয়জেলা/উপজেলাঢাকা বিভাগনারায়ণগঞ্জনারায়ণগঞ্জ সদররাজনীতিসারাদেশ

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট না’গঞ্জ জেলার মানববন্ধন কর্মচূচী

সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি, নারায়ণগঞ্জ:
সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রদায়িক হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও সারাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবীতে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) সকালে নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এসময় জেলার সভাপতি সুলতানা আক্তার’র সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলার সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসাইন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নারায়ণগঞ্জ জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল, অর্থ সম্পাদক মুন্নি সরদার, নারায়ণগঞ্জ জেলার সংগঠক ফয়সাল আম্মেদ রাতুল ও সাইফুল ইসলাম।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ১৫ মার্চ হেফাজত নেতা মামুনুল হক’র একটি সাম্প্রদায়িক উসকানীমূলক বক্তব্য নিয়ে ফেসবুকে এক সনাতন ধর্মাবলম্বি যুবক স্ট্যাটাস দেয়। মঙ্গলবার ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাতের অভিযোগে পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করে। এরপরও ১৭ মার্চ মামুনুলের অনুসারী হেফাজতের ধর্মান্ধ গোষ্ঠী আশপাশের গ্রামগুলো থেকে ধারাই নদর তীরে সমবেত হয়ে মিছিল করে লাঠিসোটা নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক বাড়িতে এবং মন্দিরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এ ঘটনা থানা পুলিশকে জানানোর পরও পুলিশ বিলম্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এবং দুষ্কৃতিকারীদের নির্বিঘ্নে চলে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। ফলে ওই হামলার দায় সুনামগঞ্জের সিভিল ও পুলিশ প্রশাসন এবং সরকার কোনমতেই এড়াতে পারে না।

বক্তারা আরও বলেন, মুক্তচিন্তার মানুষ, সাংবাদিক সহ জনসাধারণ সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসন ও লুটপাটের সমালোচনা করলে, পত্রিকায় বা সামাজিক মাধ্যমে বক্তব্য দিলে তাদেরকে গ্রেফতার করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিনা বিচারে কারাগারে বন্দি রাখা হয়। অথচ ওই ধর্মান্ধ হেফাজত নেতা মামুনুল হক প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধু’র ভাস্কর্য ভাঙার ঘোষণা, হিন্দু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উসকানীমূলক বক্তব্য এবং নারীর প্রতি চরম অপমানজনক বক্তব্য দেয়ার পরও তাকে গ্রেফতার করা হয় না। অন্যদিকে যারা সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ও অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র চায়। যারা তিস্তা সহ ৫৪ টি নদীর পানির ন্যায্য দাবীতে আন্দোলন করে তাদের উপর চলে সরকারি লাটিয়াল বাহিনীর হামলা। আমরা এই হামলা মামলার তীব্র নিন্দা জানাই।

নেতৃবৃন্দ বলেন, একদিকে সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে অন্যদিকে হিন্দু সম্প্রদায়সহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও আদিবাসীদের উপর নির্যাতন, সম্পত্তি দখল চলছে। অন্যদিকে গুজরাট’র কসাই, গণহত্যাকারী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানানো হয়েছে। যার জন্যে আমাদের দেশের প্রাণ-প্রকৃতি আজকে ধ্বংসের সম্মূখীন। স্বাধীনতাত্তোর শাসক শ্রেণী মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে দেশ পরিচালনা করায় আমাদের দেশ এই পরিণতির দিকে যাচ্ছে। আজকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা শোষণমুক্ত ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সকল ছাত্র, যুবক ও দেশপ্রেমিক মানুষকে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাড়াঁতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close