জাতীয়
বাংলাদেশের উপর দিয়ে ৭ রাজ্যে ইন্টারনেট ট্রানজিট চেয়েছিলো ভারত! বাতিল করল বাংলাদেশ
বাংলাদেশের উপর দিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে ব্যান্ডউইথ নিতে চেয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলো ভারত। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। সম্প্রতি ভারতের প্রস্তাবের বিষয়ে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি সূত্র।
সূত্র বলছে, অনুমোদন প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছিলো। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তন না হলে এতদিনে হয়তো ট্রানজিটের অনুমোদন পেয়ে যেতো ভারত।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল (আইটিসি) কোম্পানি সামিট কমিউনিকেশন্স ও ফাইবার অ্যাট হোম এবং ভারতের টেলিকম অপারেটর ভারতীয় এয়ারটেল সম্মিলিতভাবে এই ব্যান্ডউইথ অবকাঠামো স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছিলো। সে সময় এই প্রক্রিয়া অনেকটাই এগিয়েছিলো।
প্রক্রিয়াটি বাস্তবায়নে ভারতীয় এয়ারটেল এ বিষয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠায়। পরে তা যাচাই করতে বিটিআরসিতে পাঠানো হয়েছিল।
সামিট ও ফাইবার অ্যাট হোম আখাউড়া সীমান্তে টেরেস্ট্রিয়াল কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন (টিসিএলএস) স্থাপন করবে এমন পরিকল্পনা ছিলো। এই টিসিএলএস থেকে ফাইবারের মাধ্যমে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানির সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনে সংযোগ দেওয়া, যার মাধ্যমে সেবা সিঙ্গাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ার কথা ছিলো। পরিক্ল্পনা অনুযায়ী, সীমান্তের টিসিএলএস থেকে ভারতীয় এয়ারটেল উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরা, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, নাগাল্যান্ড ও মেঘালয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা দেবে।
এতে মূলত লাভ হতো ভারতের। কারণ, ভারতের সেভেন সিস্টার্স থেকে চেন্নাই সাবমেরিন কেবলের ল্যান্ডিং স্টেশনের দূরত্ব ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার, এখান থেকে সিঙ্গাপুরের দূরত্ব আরও ৮ হাজার ৭০০ কিলোমিটার। এ ছাড়া দুর্গম পর্বতের কারণে ভারতের ভেতর দিয়ে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে ফাইবার নেটওয়ার্ক পৌঁছানো ও রক্ষণাবেক্ষণ মুশকিল ও ব্যয়বহুল। দীর্ঘ দূরত্বের কারণে ল্যাটেন্সি (ইন্টারনেট গতি) হয় ৫৫ মিলিসেকেন্ড, যা সিঙ্গাপুর পর্যন্ত ৮৭ মিলিসেকেন্ড।
বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে এই ট্রানজিট পেলে নেটওয়ার্কের দূরত্ব কমে যেতো ৩ হাজার ৭০০ কিলোমিটার এবং সিঙ্গাপুর পর্যন্ত ল্যাটেন্সি কমে যায় ৩৭ মিলিসেকেন্ড। সূত্র: ইউএনবি, এই সময়