সোনারগাঁও

আওয়ামী লীগ নেতার টাকায় বিএনপির ইফতার বয়কট করেছেন বিএনপির হেভিওয়েট নেতারা

সোনারগাঁও:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানা বিএনপির ইফতার মাহফিলকে কেন্দ্র করে বিএনপিতে আবারো অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি ইফতার মাহফিল গত বৃহস্পতিবার বিকেলে জামপুর ইউনিয়নের বস্তল এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ইফতার মাহফিলে বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি ও সুস্থতা কামনায় অনুষ্ঠিত হলেও ক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা সেখানে উপস্থিত হননি। ইফতার মাহফিলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে অনলাইন ভিডিও বার্তায় বক্তব্য রাখেন।

এছাড়াও অতিথি হয়ে এসেছেন ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, আলোচক ছিলেন, নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু এবং নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুলসহ জেলা উপজেলার গুটি কয়েকজন নেতা।

জানা যায়, উপজেলার বস্তল এলাকায় সোনারগাঁ থানা বিএনপির আয়োজনে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী বাবুল ওমর বাবুর অর্থায়নের এ ইফতার মাহফিল অনুষ্টিত হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠে। আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির অংশ না নেওয়ার কারণে বিএনপির ভোট বাবুর কব্জায় নিতে বাবু এ টাকা ডোনেশন দিয়েছেন বলে বিএনপির একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছেন।

এ নিয়ে মান্নান ও বাবু ওমরের সঙ্গে ঢাকার বসুন্ধরায় একাধিক বার বৈঠক হয়েছে বলে জানিয়েছেন সেই সূত্র। তবে দু’পক্ষেকে বৈঠকে বসাতে সহযোগিতা করেছেন শ্রমিক দলের আহবায়ক মো. মুজিবুর রহমান। মুজিবুর রহমান ও বাবুল ওমর বাবু একই ইউনিয়য়নের বাসিন্দা।

বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবি, আজহারুল ইসলামের মান্নানের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ইফতার মাহফিলে আওয়ামী লীগ নেতা ও সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাঁচপুরের ত্রাস বাবুল ওমর ২ লাখ টাকা দেওয়ার কারণে অনুষ্ঠান বয়কট করে সেখানে যাননি। জামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম সানোয়ার। তবে সভাপতি আাল মুজাহিদ মল্লিক সিঙ্গাপুরে অবস্থান করার কারনে সেখানে উপস্থিত হননি।

এছাড়াও বিএনপির শীর্ষ নেতা ও তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপিত মুজিবুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সভাপতি ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মুকুল, সোনারগাঁ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক সালাউদ্দিন সালু, ছাত্রদলের আহবায়ক জাকারিয়া ভূঁইয়া, কাঁচপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেলিম হক রুমি, সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সেলিম সরকারসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হননি।

বিএনপির ত্যাগী নেতাকর্মীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির আন্দোলন সংগ্রাম করে মামলা মোকদ্দমায় নিয়মিতভাবে আদালত পাড়ায় হাজিরা দিতে হচ্ছে। বস্তল এলাকার গোলজার হোসেন প্রধান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দহরমহর সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। সেখানে যুক্ত হয়েছেন খোদ বিএনপির সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান।গোলজার হোসেন প্রধান একজন ভূমিদস্যু। নিরীহ মানুষের জমি দখল করে বিভিন্ন কোম্পানির কাছে মোটা অংকের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। ভূমিদস্যুতার টাকার জোরে বর্তমানে প্রভাব বিস্তার করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে তুলে বিএনপির নেতাকর্মীদের দাবিয়ে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। গত সংসদ নির্বাচনের বিএনপি অংশ না নিলেও তিনি বর্তমান সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সারের পক্ষে মাঠে কাজ করেছেন। বর্তমানে বিএনপির উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ না দিলেও কাঁচপুরের ত্রাস ও ফুটপাতের চাঁদাবাজ বাবুল ওমর বাবুর পক্ষে নির্বাচনে কাজ করবেন। গোলাজার হোসেন প্রধান আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই কুল রক্ষা করা নেতা। তাকে বিএনপির বয়কট করার সময় এসেছে।
নেতাকর্মীদের দাবি, গোলজার হোসেন প্রধানের নিজস্ব বাহিনী রয়েছে। গোলজারের নেতৃত্বে বস্তল এলাকার মামুন, মহজমপুর গ্রামের সুমন ওরফে নান্টুর নেতৃতে ১০-১২টি মোটর সাইকেল মহড়া দিয়ে জামপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় আতংকিত করে তোলে। তারা জাল দলিলের মাধ্যমে জমি জমা দখলদারিত্ব ও নিরীহ মানুষের হামলা করে থাকে। আগামী নির্বাচনে জামপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে এ আতংক তৈরি করছেন বলে জানিয়েছেন তারা।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close