ধর্ম

জীবনী গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচনে ধর্ম উপদেষ্টা মাওলানা আতহার আলীকে বাদ দিয়ে জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না

এমদাদুল্লাহ্, বজ্রধ্বনি:

অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মাওলানা আতহার আলী ছিলেন বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী। তিনি ছিলেন একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ। তাঁর গতিশীল নেতৃত্বের কারণে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের নেজামে ইসলাম পার্টি থেকে ৩৬ টি আসনে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছিল। তার মৃত্যুর কারণে নেতৃত্বের যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল সেটা এখনও পূরণ হয়নি। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, এ কে ফজলুল হক ও আইয়ুব খানের সাথে তিনি রাজনীতি করেছেন। একইসাথে তিনি একটি মাদরাসার অধ্যক্ষ, মহাদ্দিস ও মসজিদের ইমাম ছিলেন। মাওলানা আতহার আলীকে বাদ দিয়ে দেশের জাতীয় ইতিহাস রচিত হতে পারে না।

আজ (২৫ নভেম্বর) সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের শফিউর রহমান অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত নেজামে ইসলাম পার্টির প্রতিষ্ঠাতা, মুজাহিদে মিল্লাত আল্লামা আতহার আলী রহ. এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা এবং জীবনী গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মওলানা শফিকুর রহমান রচিত এ গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, অনেক তথ্য ও উপাত্ত সংগ্রহ করে বইটি রচনা করেছেন তিনি। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বড় আকারের গ্রন্থ। এই বই আমাদের পথ দেখাবে। এ বই এদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি সমৃদ্ধ আলেখ্য।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের অভ্যূদ্বয়ের ইতিহাস গ্রন্থে যুক্তফ্রন্টের আলাদা অধ্যায় আছে। সেখানে মাওলানা আতহার আলীর নাম আছে। তবে অতীতে তাঁর অবদানকে ইতিহাসে খাটো করে দেখানো হয়েছে। আগামীদিনে যে ইতিহাস বই রচিত হবে সেখানে তাঁকে যথাযথভাবে উপস্থাপন করা হবে।

ড. খালিদ আরো বলেন, বাংলাদেশ পার্লামেন্টের লাইব্রেরিতে মাওলানা আতহার আলীর উর্দু ভাষায় অনেক বক্তৃতা আছে। পাকিস্তান পার্লামেন্টের লাইব্রেরিতেও তাঁর বক্তৃতা আছে। এগুলোকে সংকলিত করলে সমসাময়িক রাজনীতির স্পষ্ট চিত্র পাওয়া যাবে। তাঁর গোছানো বক্তৃতায় আমাদের মাতৃভাষা, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি বৈষম্য ও জনগণের অধিকার নিয়ে কথা আছে। তাঁর বক্তৃতা যদি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে উপস্থাপন করা হয় তাহলে তাঁকে নিয়ে রচিত বই সমৃদ্ধ হবে, জাতি অনেক কিছু জানতে পারবে।

কিশোরগঞ্জ আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা শাব্বীর আহমদ রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আতহার আলী রহ. এর জীবনী গ্রন্থের লেখক ও আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার শায়খুল হাদিস মাওলানা শফিকুর রহমান জালালাবাদী।

এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর শায়খুল হাদিস মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক আবদুল হালিম, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মূসা বিন ইজহার, লেখক ও গবেষক মাওলানা যায়নুল আবিদীন, মাওলানা শরীফ মুহাম্মাদ, মাওলানা রুহুল আমীন সাদী।

এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার শায়খুল হাদিস মাওলানা ইমদাদুল্লাহ্, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারমের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মিজানুর রহমান, নরসিংদী দত্তপাড়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা শওকত হোসাইন সরকার, জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতী রেজাউল করীম আবরার, মাকতাবাতুল আযহারের স্বত্বাধিকারী মাওলানা উবায়দুল্লাহ্ আজহারী, লেখক শায়খ আতিকুল্লাহ্, ঢাকা মেইলের বার্তা সম্পাদক মাওলানা জহির উদ্দীন বাবর, বার্তা টুয়েন্টিফোর ডটকমের সহকারী সম্পাদক মুফতি এনায়েতুল্লাহ, আওয়ার ইসলাম সম্পাদক মাওলানা হুমায়ুন আইয়ূব, লেখক অধ্যাপক আহমাদ মিয়া, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শওকত হক, অ্যাডভোকেট মাওলানা শায়খুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক রমজান আলী, খেলাফত মজলিসের কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি শায়খুল হাদিস মাওলানা আবদুল আহাদ, তাড়াইল সাচাইল দারুল হুদা কাসেমুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম শায়খুল হাদিস মাওলানা ফয়জুদ্দীন, কলামিস্ট মাওলানা জুবায়ের আহমাদ, লেখক ও অনুবাদক মাওলানা আব্দুল্লাহ ফারুক, লেখক মাওলানা জুবায়ের আশরাফ, মাওলানা জাকারিয়া আমিনী প্রমুখ।

অনলাইন এক্টিভিস্ট মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ্ রাহমানীর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে ক্বেরাত পরিবেশন করেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্বারি হাফেজ মাওলানা এমদাদুল হক।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close