ডেস্ক রিপোর্ট
ষোলশহর, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ইং — নারী কেলেঙ্কারি, মাদক ও সশস্ত্র হামলার চেষ্টার অভিযোগে চট্টগ্রাম ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (CIU) সাবেক ছাত্র মো. মারুফ হোসেনকে আজ রাত ৮টা নাগাদ নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে হাতুড়ি এবং গাঁজাসহ আটক করেছে ষোলশহর রেলস্টেশনে উপস্থিত ছাত্র জনতা। মারুফ, যিনি CIU এর ইংরেজি বিভাগের সাবেক ছাত্র, একটি নাস্তার দোকানের সামনে ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন বলে জানা গেছে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ঘটনাস্থলে তার নারী সহপাঠীর সাথে বিশ্রী ভাষায় বাকবিতণ্ডা শুরু হলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে, তাদের সঙ্গে মারুফ অসভ্য আচরণ করেন এবং পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মারুফ পরবর্তীতে হাতুড়ি নিয়ে ওই সিনিয়রদের আঘাত করার চেষ্টা করেন, যার ফলে স্থানীয় জনসাধারণ তাকে আটকায় এবং তাকে গণধোলাই দেওয়া হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় জনগণের সহায়তায় তাকে স্টেশন মাস্টারের রুমে সোপর্দ করা হয় এবং বর্তমানে তিনি সেখানেই আটক রয়েছেন।
আবিদ বিন জাবেদ নামের একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষার্থী জানান, “সে যখন চিৎকার চেঁচামেচি করছিলো, আমি থামাতে গিয়ে মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করি যে অভিযুক্ত মারুফকে তিনি চেনেন কি-না। মেয়েটির প্রত্যুত্তর অসঙ্গতিপূর্ণ হওয়ায় আমরা বুঝতে পারি যে তারা একে অপরের পরিচিত৷ তখনই মারুফ আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে। এরপরেও তাদেরকে অনুরোধ করে আমরা তাকে সরিয়ে দেই। পরবর্তীতে আমরা আবার সেখানে গেলে আমরা শুনতে পাই যে মারুফ আমাদেরকে হাতুড়ি নিয়ে মারতে এসেছিলো। ঘটনাক্রমে, সে আবার উপস্থিত হলে হাতের পেছনে লুকিয়ে রাখা হাতুরি দেখতে পায় ও সে উদ্যত হলে পেছন থেকে ধরে ফেলা হয়। অতঃপর উপস্থিত ছাত্র জনতা তাকে গণপিটুনি দেয়।”
এছাড়াও, ২০২১ সালে ষোলশহর রেলস্টেশন এর ফুটওভার ব্রিজের উপর থেকে রাতেরবেলার একটা ছবি তুলে নিজের ফেইসবুক প্রোফাইলে আপলোড করেন আরিফ মইনুদ্দিন নামের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর একজন শিক্ষার্থী। তার সাথে তার পরেরদিনই বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হোন মারুফ। তখন আরিফকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করা হয় বলেও জানা গেছে। মারুফ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) নামক বগিভিত্তিক গ্রুপে জড়িত। ভিএক্স চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাসিরউদ্দিনের অনুসারীদের গ্রুপ বলেও তথ্য মেলে। কিন্তু উপস্থিত জনসাধারণের মনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগে বিশ্ববিদ্যালয় বহির্ভূত ছাত্রের সংশ্লিষ্টতার তথ্য বেশ বিস্ময় ও আতংকের সৃষ্টি করেছে।
এদিকে, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’২৪ এ ষোলশহরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপরে তার হামলার বিষয়ক কিছু ফুটেজ পাওয়া গেছে বলে ছাত্ররা জানায়, যা তদন্তের অধীনে আছে। অঅভিযুক্ত মারুফের সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদেরও খুঁজে বের করার জন্য তারা তৎপর রয়েছে। উল্লেখ্য, মারুফ এবং তার নারী সহপাঠী, যারা উভয়ই CIU থেকে বিএ (সম্মান) সম্পন্ন করে এমএ তে ভর্তি হয়েছিলেন, পরে দুজনই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপ আউট করেন।