সারাদেশ
রাসেল ভাইপার নিয়ে আতঙ্ক নয়, সচেতনতা বাড়াতে হবে

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া, বোড়া বা উলুবোড়া) দেখা যাওয়ার সাম্প্রতিক প্রতিবেদন এবং জনসাধারণের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ সম্পর্কে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় অবগত। এ প্রেক্ষিতে জননিরাপত্তা এবং জনকল্যাণ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় তথ্য ও দিকনির্দেশনা প্রদানে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেছে।
সাপের কামড় এড়াতে করণীয়:
– যেসব এলাকায় রাসেল ভাইপার দেখা গিয়েছে, সেসব এলাকায় চলাচলে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন।
– লম্বা ঘাস, ঝোঁপঝাড়, কৃষি এলাকায় হাঁটার সময় সতর্ক থাকুন। গর্তের মধ্যে হাত-পা ঢুকাবেন না।
– সংশ্লিষ্ট এলাকায় কাজ করার সময় বুট এবং লম্বা প্যান্ট পরুন।
– রাতে চলাচলের সময় অবশ্যই টর্চ লাইট ব্যবহার করুন।
– বাড়ীর চারপাশ পরিস্কার ও আবর্জনামুক্ত রাখুন।
– পতিত গাছ, জ্বালানী লাকড়ি, খড় সরানোর সময় বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করুন।
– সাপ দেখলে তা ধরা বা মারার চেষ্টা করবেন না।
– প্রয়োজনে জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ নম্বরে কল করুন বা নিকটস্থ বন বিভাগের অফিসকে অবহিত করুন।
সাপের কামড়ের ক্ষেত্রে করণীয়:
– দংশিত অঙ্গ নড়াচড়া করা যাবে না। পায়ে দংশনে- বসে যেতে হবে, হাঁটা যাবে না। হাতে দংশনে- হাত নড়াচাড়া করা যাবে না। হাত পায়ের গিড়া নাড়াচাড়ায় মাংসপেশীর সংকোচনের ফলে বিষ দ্রুত রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে গিয়ে বিষক্রিয়া করতে পারে।
– আক্রান্ত স্থান সাবান দিয়ে আলতোভাবে ধুতে হবে অথবা ভেজা কাপড় দিয়ে আলতোভাবে মুছতে হবে।
– ঘড়ি বা অলঙ্কার বা তাবিজ, তাগা ইত্যাদি থাকলে খুলে ফেলুন।
– দংশিত স্থানে কাঁটবেন না, সূই ফোটাবেন না, কিংবা কোন রকম প্রলেপ লাগাবেন না বা অন্য কিছু প্রয়োগ করা উচিত নয়।
– সাপে কাটলে ওঝার কাছে গিয়ে অযথা সময় নষ্ট করবেন না।
– যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যান।
– আতঙ্কিত হবেন না, রাসেল ভাইপারের বিষ প্রতিষেধক বা অ্যান্টিভেনম নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে পাওয়া যায়।
বেজি, গুইসাপ, বাগডাশ, গন্ধগোকুল, বন বিড়াল, মেছো বিড়াল, তিলা নাগ ঈগল, সারস, মদন টাক এবং কিছু প্রজাতির সাপ ‘রাসেল’স ভাইপার’ খেয়ে এদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এসকল বন্যপ্রাণীকে মানুষের নির্বিচারে হত্যার কারণে প্রকৃতিতে ‘রাসেল’স ভাইপার’ বেড়ে যাচ্ছে। তাই বন্যপ্রাণী দেখলেই অকারণে তা হত্যা, এদের আবাসস্থল ধ্বংস করা থেকে বিরত থাকুন।
স্মরণ রাখা প্রয়োজন, ‘রাসেল’স ভাইপার’ বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর ৬(১) ধারা অনুযায়ী সংরক্ষিত প্রাণী। ‘রাসেল’স ভাইপার’ ইঁদুর খেয়ে যেমন ফসল রক্ষা করে, তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই সাপের বিষ হতে অনেক জীবন রক্ষাকারী ঔষধ তৈরি হয়। সাপ মারা দণ্ডনীয় অপরাধ, সাপ মারা হতে বিরত থাকুন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর নির্দেশনায় বাংলাদেশ বন বিভাগ পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। স্থানীয়ভাবে সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ ও সচেতন সমাজের প্রতি অনুরোধ জানানো হলো। পরিস্থিতি সক্রিয়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী আপডেট প্রদান করা হবে।