জাতীয়নির্বাচনী হালচালরাজনীতি
ওবায়দুল কাদের আর নির্বাচন কমিশন মিলে মাকাল ফল মার্কা নির্বাচন করতে চাচ্ছে: নুরুল হক নুর
তফসিল বাতিল, সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিরোধী দলসমূহের ডাকা ৯ম দফা অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুলহক নুর বলেন, ‘দুর্বল পরাগায়নে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা শত ফুল ফুটাতে পারে নাই। ফুল যেহেতু ফুটে নাই সেহেতু ফল হওয়ার সম্ভাবনা নাই। এখন যা হবে সেটা মাকাল ফল। ওবায়দুল কাদের আর নির্বাচন কমিশন মিলে মাকাল ফল মার্কা নির্বাচন করতে চাচ্ছে। জনগণ এই মাকাল ফল মার্কা নির্বাচন প্রতিহত করবে। এক ব্যক্তিকে ক্ষমতায় রাখতে আজকে দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হয়েছে। সরকারের একঘেয়েমির কারণে ৯০ এরপর থেকে ৩ দশকে তিলে তিলে গড়ে ওঠা রপ্তানির বড় খাত গার্মেন্টস শিল্প এখন ঝুঁকিতে।
পাট, চিনি, চামড়ার পর সরকারের কারণে গার্মেন্টস শিল্পও আজ ধ্বংসের পথে। ইউরোপ-আমেরিকা পরিস্কারভাবে বলছে, শ্রমিকদের সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার, গণতন্ত্র, মানবাধিকার সুশাসন না থাকলে তারা বাণিজ্য অবরোধ, নিষেধাজ্ঞা দিবে।
ঢাকা মহানগর ৩৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য ইমতিয়াজ বুলবুলের ঘটনা উল্লেখ করে নুর বলেন, অন্যায়ভাবে বিএনপি নেতা বুলবুলকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। মারার পর চুপিসারে দাফন সম্পন্ন করেছে। এভাবে দেশে চলতে পারে না।
দেশের অস্তিত্ব রক্ষায় সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করে এই ফ্যাসিবাদ হঠাতে হবে। বিএনপি, জামায়াত-হেফাজত, বাম-ডান সকলকে এক হয়ে পাড়া-মহল্লায় ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণঐক্য গঠন করতে হবে। ৯৬ সালে আওয়ামীলীগ জামায়াতকে নিয়ে আন্দোলন করলে আজ আমাদের সমস্যা কোথায়? জামায়াতের মতো শক্তিকে বাইরে রাখা যাবে না। যারা বিভাজনের কথা বলছেন তারা প্রকারান্তরে সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। আমাদের এ লড়াই কারো বিরুদ্ধে নয়,এ লড়াই দেশের অস্তিত্ব রক্ষার ,এ লড়াই নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, নির্বাচনের আগে শত ফুল ফুটবে, কিন্তু ফুল ফুটেছে? বরং বিএনপির একজন নেতাকে কারাগারে নিয়ে জিম্মি করে নৌকায় উঠানো হয়েছে। এভাবেই বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে জিম্মি করে, হয়রানি করে নির্বাচনে নেওয়া হচ্ছে। গণঅধিকার পরিষদকেও জিম্মি করার চেষ্টা করা হয়েছিল, কিন্তু আমরা মাথানত করি নাই। ইন্ডিয়াটুডেতে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, দুই বেগমের যুদ্ধ! যেখানে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী চীন ও ভারত একদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে অন্যদিকে।
২৮ অক্টোবরের পর থেকে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের বিষষে যুক্তরাষ্ট্র চুপ রয়েছে। অনেকে বলছে ভারতের চাপে যুক্তরাষ্ট্র চুপ হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা দেশে আন্দোলন না করতে পারলে, যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ কি করবে? সুতরাং আমাদের গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গত ১ সপ্তাহে কারা হেফাজতে বিএনপির ৩ জন নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছে। কিন্তু এটা কোন স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, এটা রিমান্ডের নামে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
সভায় সঞ্চালনা করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম ফাহিম। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, ফাতিমা তাসনিম, আব্দুজ জাহের, সিনিঃ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবিউল হাসান, জিলু খান, যুব পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সহসভাপতি সাব্বির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, গণঅধিকার পরিষদ মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমসহ নেতাকর্মীরা।