অপরাধ
২৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও, প্রতারক সবুজের বিরুদ্ধে মামলা
গাজী ওভারসীজের ২৫ লাখ টাকা নিয়ে উধাও মাসুম বিল্লাহ সবুজ নামের এক কর্মচারী। এ ঘটনায় গত ১৫ নভেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেন গাজী ওভারসীজের স্বত্বাধিকারী রিপন গাজী।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মাসুম বিল্লাহ সবুজ গাজী ওভারসীজে সিনিয়র এক্সিকিউটিভ হিসেবে কর্মরত ছিলো। তার কাজ ছিলো বিভিন্ন অফিস এবং পার্টি হতে পাওনা টাকা সংগ্রহ করে গাজী ওভারসীজের হিসাব শাখার অথবা ব্যাংকে অফিসের হিসাব নম্বরে জমা প্রদান করা এবং অন্যান্য পাওনাদারদের কাছে টাকা বুঝিয়ে দেওয়া। তেমনিভাবে গত ৪ অক্টোবর গাজী ওভারসীজের আশুলিয়ার পার্টি আলাউদ্দিনকে ২৫ লাখ টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সবুজকে ডাচ বাংলা ব্যাংকের ১০ লাখ টাকার চেক ( নম্বর -১৯৬৯৩২৩) এবং ইসলামি ব্যাংকের ১৫ লাখ টাকার চেক (নম্বর- ৬৩৪৪০৭৯) প্রদান করা হয়। চেক দুটি দিয়ে ব্যাংক থেকে সবুজ ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে। সেই টাকা আলাউদ্দিনকে না দিয়ে নিজের হেফাজতে রাখেন এবং ৬ অক্টোবর অফিসে অবহিত না করেই সবুজ বাড়িতে চলে যান। পরবর্তীতে আলাউদ্দিন গাজী ওভারসীজের কাছে পাওনা টাকা চাইলে প্রতিষ্ঠান থেকে সবুজকে কল করা হলে তিনি কোনো সদোত্তর দিতে পারেন নাই। গাজী ওভারসীজ থেকে তার যশোরের বাড়িতে যোগাযোগ করা হলে তার পিতা আকবার হোসেন এবং তার আত্বীয় স্বজন সবুজের থেকে টাকা উদ্ধার করে দেওয়ার মৌখিক আশ্বাস দেন এবং সবুজকে চাকরিতে রাখার জন্য অনুরোধ করেন। সবুজও ৭ দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার মর্মে গাজী ওভারসীজে পূণরায় যোগদান করেন। কিন্ত ৭ দিন অতিবাহিত হয়ে গেলেও টাকা ফেরত না দেওয়ার অফিস থেকে চাপ দেওয়ায় বিগত ২৩ অক্টোবর অফিসে অবহিত না আবারো উধাও হয়ে যান সবুজ।
অনেকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ থাকায় সবুজের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি গাজী ওভারসীজের স্বত্বাধিকারী রিপন গাজী। পরবর্তীতে ৩ নভেম্বর সবুজের বাড়িতে যান তিনি। সবুজের পরিবারকে বিষয়টি পূণরায় অবহিত করেন।
রিপন গাজী জানান, ‘গাজী ওভারসীজের দুটি ব্যাংকের একাউন্ট থেকে ২৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে পার্টিকে না দিয়ে সবুজ নিজে আত্মসাৎ করে উধাও হয়ে যান। তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বলে সবুজ সৌদে আরবে গোপনে আলাদা ভিসার ব্যবসা করতে গিয়ে লস খেয়েছে। এখন সময় না দিলে এত টাকা কোথা থেকে দিব। প্রথমত তার পরিবার আমাকে টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে তারা অপারগতা জানান।’
তিনি আরো জানান, ‘২৩ অক্টোবরের পর থেকে সবুজ গাজী ওভারসিসের বিভিন্ন গ্রাহককে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে পূর্ববর্তী ভিসার টাকা চাচ্ছেন। আমরা সেই বিষয় নিয়ে আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি এবং আইনের দারস্থ হয়েছি।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্টন থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সেন্টু বলেন, মামলাটা আমরা গুরুত্বসহকারে দেখছি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথে একটু কথা বলেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই থোয়াই বলেন, আসামী গ্রেফতার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
এদিকে সবুজের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে গিয়ে উঠে এসেছে আরও কিছু প্রতারণার তথ্য। গত ২৩ অক্টোবর ভিসা বাবদ আবদুল্লাহ নামে এক ব্যক্তি থেকেও নগদ ৮ লাখ টাকা নিয়ে তার সাথে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেন সবুজ। এই ঘটনায় সবুজের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে আব্দুল্লাহ।