নারায়ণগঞ্জ সদররাজনীতি

নারায়ণগঞ্জ সদর থানা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন

নারায়ণগঞ্জ মহানগর জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের আওতাধীন সদর থানা ওলামা দলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলনে সকলের সর্বসম্মতিক্রমে হাজী মনির হোসেনকে সভাপতি ও হাফেজ আব্দুল হান্নানকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।

মঙ্গলবার ( ২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর দেওভোগ জান্নাত কমিউনিটি সেন্টারে ব্যাপক আয়োজনে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান ও প্রধান বক্তা ছিলেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু।

এ ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সরকার হুমায়ুন কবির, মনির হোসেন খান, আনোয়ার হোসেন আনু, সদর থানা বিএনপির সভাপতি মাসুদ রানা, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এইচএম আনোয়ার প্রধান, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাগর প্রধান, মহানগর ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মোহাম্মদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক হাফেজ শিব্বির আহমেদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি হাজী মোহাম্মদ রফিক।
নারায়ণগঞ্জ সদর থানা ওলামাদলের আহ্বায়ক হাজী মোহাম্মদ মনির হোসেনের সভাপতিত্বে ও মহানগর ওলামাদলের সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ুমের পরিচালনায় অতিথিদের মধ্যে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি পারভেজ মল্লিক।

সম্মেলনের প্রধান অতিথি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, এই আওয়ামীলীগ সরকারের অপকর্মের দুর্গন্ধ শুধু বাংলাদেশে নয়, সরকারের অপকর্মের দুর্গন্ধ সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে গেছে। বিশ্ব সম্প্রদায় বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো মনে করে এই আওয়ামীলীগ সরকার গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে। বিশ্ববাসী আওয়ামীলীগ সরকারকে গণতন্ত্রের শত্রু মনে করে। আপনারা জানেন আমরা সবাই ধর্মপ্রাণ মুসলমান, পবিত্র মাহে রমজান মাসে আমরা বিশ্বাস করি শয়তানকে আল্লাহ বন্দি করে রাখেন। এখন বিশ্ব সম্প্রদায় বুঝেছে এই আওয়ামীলীগ গণতন্ত্রের শত্রু। তাদের দ্বারা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, পবিত্র মাহে রমজানে যেমন শয়তানকে বন্দী করে রাখে, ঠিক একই কায়দায় এই আওয়ামী লীগের মধ্যে যারা গণতন্ত্রের শত্রু, যারা নির্বাচনকে কলুষিত করে বিরোধীদলকে দমন নিপীড়ন চালায়, সেই গণতন্ত্র বিরোধী শত্রুদের জন্য বিশ্ব সম্প্রদায় স্যাংশন দিচ্ছে, ভিসা সাংশন। তাদেরকে শয়তানের মত বন্দি করার জন্য এই ভিসা স্যাংশন। স্যাংশনের কারণে আওয়ামী লীগের পায কাঁপুনি ধরেছে। অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে জো বাইডেনের সঙ্গে একটি সেলফি তুলেছিল। সেলফি তুলে সারাদেশে প্রচার করেছিল আমেরিকার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো। আমাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব বলেছিলেন ওই সেলফির ছবি বাধাই করে গলায় ঝুলিয়ে সারাদেশে ঘুরেন। কদিন আগেও শেখ হাসিনা বলেছিল আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে বিশ হাজার মাইল দূরে আমেরিকাতে যাবে না। কিন্তু কয়েক দিনের মাথায় দেখলাম নিজের ক্ষমতা আবারো অবৈধভাবে পাকাপোক্তা করার জন্য আমেরিকার বিভিন্ন কর্তা ব্যক্তিদের কাছে হাতে পায়ে ধরছে, তাকে যেন আবারও ক্ষমতায় বসানো যায়, সেই চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিশ্ব সম্প্রদায়ের গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো তারা কমিটমেন্ট দিয়েছে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন চায়, গণতন্ত্র সুরক্ষার জন্য বিশ্বের গণতান্ত্রিক সম্প্রদায় যা কিছু করণীয় তাই করবে তারা।

তিনি এর আগে বলেন, আজকে দেশ একটি দূর্যোগপূর্ণ মুহুর্ত অতিক্রম করছে। দেশের মানুষ অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। দেশের চরম দূর্ভোগ বিশৃঙ্খলা অপশাসন হত্যা খুন গুম করে দেশকে একটি নিমজ্জিত অতল গহ্বরে পতিত করছে। দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধির কারনে জনগণের অবস্থা বিপর্যস্ত। আজকে দেশ একটি দুর্ভিক্ষের দিকে যাচ্ছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকারের ইতিহাস হল দুর্ভিক্ষের ইতিহাস। ১৯৭৪ সনে এই আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষ উপহার দিয়েছিল। সেদিন এদেশের মানুষ অনাহারে মৃত্যুবরণ করেছিল।

তিনি আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশের এমন দুরাবস্থার জন্য দায়ী হলো অপশাসন এবং দুর্নীতি। দুর্নীতি আজকে এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে ফরিদপুরের একজন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, সে ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। একজন ছাত্রলীগের কর্মী যদি দুই হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে, তাহলে একবার চিন্তা করে দেখেন, যারা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা আছে, তারা কত শত কোটি টাকার বিদেশে পাচার করছে। দেশের জনগণ দেখেছে ২০১৪ সালে একতরফা এবং ২০১৮ সাল পাতানো নির্বাচন দেশে হয়েছে। এখন দেশের মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার সেই কালচারই ভুলে গেছে।

প্রধান বক্তা অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু বলেন, যতবারই আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছে ততবারই ইসলামের উপর আঘাত এসেছে। ইসলামকে কোণঠাসা করার জন্য বিধর্মীদের সাথে হাত মিলিয়ে ইসলাম ধর্মকে অপমানিত করা হয়েছিল। আজকে আমাদের সর্বপ্রথম পরিচয় হলো আমরা মুসলমান। আমরা আল্লাহর নির্দেশ পালন করে চলি। আমাদের এই দেশ স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশকে কে পরিচালনা করবে সেটা নির্ধারণ করার লক্ষ্যেই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে জাতীয়তাবাদী আদর্শে রাজনীতি করছি। আমরা দেখেছি এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পর জিয়া পরিবারের উপর স্টিমরোলার চালিয়েছে। এই অবৈধ সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ভয় পায়, তারেক রহমানকে ভয় পায়, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ভয় পায়, তারা তারেক রহমানের সহধর্মিনী জোবাইদা রহমানকেও ভয় পায়, এমনকি তারা তারেক রহমানের একমাত্র কন্যাকেও ভয় পায়। আজকে বাংলাদেশের ২০ কোটি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তারেক রহমান। তারেক রহমান যদি দেশে থাকতো তাহলে এই আওয়ামী লীগের কোন অস্তিত্ব থাকতো না। যে কারণে তারেক রহমান আজকে অসুস্থ অবস্থায় দেশের বাইরে চিকিৎসাধীন থাকার সুযোগে এই অবৈধ সরকার মিথ্যা সাজানো পাতানো মামলা দিয়ে তাকে সাজা দিচ্ছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close