নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে ট্রেনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা রুটে ট্রেনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহারসহ ৪ দফা দাবি আদায়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের আহবায়ক রফিউর রাব্বি। এসময় উপস্থিত ছিলেন, সিপিবির জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদের জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল প্রমুখ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গতবছর পদ্মাসেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা থেকে গেন্ডারিয়া অংশে তিনটি পৃথক রেললাইন নির্মাণকাজের জন্য ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে গত ৪ ডিসেম্বর থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধরাখার সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তারা ঘোষণা করেন তিনমাস এই রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে। কিন্তু প্রায় আটমাস বন্ধ থাকার পর গত ১ আগষ্ট এই রুটে পুনরায় ট্রেন চলাচল শুরু হলেও ট্রেনটিকে ‘কমিউটার’ নাম দিয়ে ভাড়া ১৫ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২০ টাকা করা হয়। চলাচলরত বর্তমান ট্রেনকে কমিউটার বলা হলেও পূর্বের সাথে তার গুণগত কোনও পার্থক্য নেই।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, কমিউটার ট্রেন হচ্ছে ডিজেল ইলেকট্রিক মাল্টিপল ইউনিট (ডিইএমইউ) ট্রেন। যার উভয় দিকে ইঞ্জিনচালিত, এসব ট্রেনের অভ্যন্তরেই ডিজেল থেকে বিদ্যুৎ তৈরী হয়। আর ঐ বিদ্যুতেই ট্রেন চলে। এইটি সাধারণ মেইল-ট্রেন থেকে বিভিন্ন দিক থেকে উন্নত। ঢাকা থেকে দেশের চারটি রুটে এই কমিউটার-ট্রেন বর্তমানে চলমান আছে। কিন্তু আমাদের ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বর্তমানে চলমান ট্রেন কোন দিক থেকেই আগের মেইল-ট্রেন থেকে উন্নত নয়।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে রেল কর্তৃপক্ষ রেলের ভাড়া ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে কিলোমিটার প্রতি ভাড়া ৩৯ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪৯ পয়সা নির্ধারণ করে। নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর রেল স্টেশন পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দূরত্বের জন্য বর্ধিত হারে তখন ভাড়া দাড়ায় সাত টাকা চুরাশি পয়সা (৭.৮৪ টাকা)। কিন্তু রেল কর্তৃপক্ষ ভাড়া নির্ধারণ করে ১৫ টাকা। আমরা তখনই দাবি করি ১৫ টাকা ভাড়া অযৌক্তিক, এইটি ১০ টাকা করা হলেও তা হবে ট্রেনের নির্ধারিত হাড়ে বর্ধিত ভাড়ার চেয়েও বেশি। কিন্তু তারা তখন জানান, মেইল-ট্রেনের সর্বনি¤œ ভাড়া যেহেতু ১৫ টাকা নিধারণ করা হয়েছে তাই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জের ভাড় ১৫ টাকা করা হয়েছে।

অন্যদিকে গত ২০২০ সালে করোনার কারণে রেল কর্তৃপক্ষ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেনের সংখ্য ১৬ জোড়া থেকে ৮ জোড়ায় নামিয়ে আনে। করোনা কাটলেও এ সংখ্যা এখনো বাড়ানো হয়নি। এখানে উল্লেখ্য যে, গত দেড় যুগে রেলে নতুন কোন বগি যুক্ত হয়নি। আসন ছেঁড়া, ভাঙ্গা, ফ্যান কাজ করে না, অপরিচ্ছন্ন বাগি, যাত্রী সেবার মান ক্রমাগত নিন্মমূখী এসব সমস্যা সমাধানের কোনও উদ্যোগ কর্তৃপক্ষের নেই।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রী মূলত নিন্মবিত্ত, নিন্ম মধ্যবিত্ত ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুবিধা বঞ্চিত কর্মজীবী, ছাত্র, শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ। বর্তমান বাজার অর্থনীতির নিষ্পেষণে ট্রেনের এই ভাড়া বৃদ্ধি বহন করা তাদের জন্য দুরূহ। তাই আজকের এই সংবাদ সম্মেলন থেকে আমরা দাবি জানাচ্ছি- অতিদ্রুত ট্রেনের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করতে হবে, ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি করে একে পূর্বের ন্যায় ১৬ জোড়া (১৬ বার নারায়ণগঞ্জ থেকে যাবে, ১৬ বার আসবে) করতে হবে, ট্রেনে বগির সংখ্য ন্যূনতম ১০ টি করতে হবে, ছাত্রদের ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেনে বিনা ভাড়ায় যাতায়াতের সুযোগ দিতে হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close