অপরাধনারায়ণগঞ্জসিদ্ধিরগঞ্জ

সিদ্ধিরগঞ্জে জামাই সমন্ধির নেতৃত্বে চাঁদাবাজী : সওজ, থানা ও ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করতে দোকান প্রতি তিন হাজার টাকা চাঁদা দাবি

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি:
ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ের ফুটপাথ থেকে থানা ও ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দৈনিক ২০০ টাকা আদায় করে নাসিক ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ছেলে ইলিয়াস হোসেন লিয়ন ও তার সমন্ধি রানা। নাসিক নির্বাচনের পর থেকে এ চাঁদা উত্তোলন করে আসছে রানার ভগ্নিপতি ও নাসিক ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ছেলে ইলিয়াস হোসেন লিয়ন। এর আগে থেকে অবশ্য লোক দিয়ে চাঁদা উত্তোলন করতো ইলিয়াসের সমন্ধি রানা।
গত ১৫ অক্টোবর সওজের নেতৃত্বে ফুটপাতের ৩ শতাধিক দোকান উচ্ছেদ করলে ইলিয়াস হোসেন লিওন বাহিনী দোকানদারদের কাছ থেকে দোকানপ্রতি সওজ, থানা ও ট্রাফিক পুলিশকে ম্যানেজ করতে এক কালীন ৩ হাজার টাকা দিতে বলে।
ব্যবসায়িদের অভিযোগ, ফুটপাতে দোকান নির্বিঘ্নে চলতে দৈনিক ২০০ টাকা চাঁদা আদায় করে লিওন ও রানা বাহিনী। যা থেকে থানা পুলিশ, ট্টাফিক পুলিশ, সওজ এবং সাংবাদিকদের ভাগ দিয়ে থাকে বলে তারা প্রচার করে আসছে। এসব চাঁদা আদায় করা হয় লিওনের তৈরিকৃত বাহিনীর প্রধান এর আগে র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া জামাল, রুহুল আমিন, আব্দুল কাদির, আলমগীর, সাদ্দাম, শীতল, নাইম, সুগন্ধা হাসপাতাল এলাকার বাপ্পী, কাসসাফ মার্কেট এলাকার দেলোয়ার, ফুল দোকানদার রনি’র মাধ্যমে। তারা চাঁদা উত্তোলন করে রানা ও ইলিয়াছের সেকেন্ড ইন কমান্ড কাম অর্থ উপদেষ্টা পলাতক মাল্টিপারপাস ব্যবসায়ী মাসুদ ও রানার কাছে জমা দেয়। মাসুদ সেই টাকা লিয়নের কাছে জমা দেয়। লিয়ন এ টাকা বন্টন করে দেয় উপরোক্ত দফতরগুলোতে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, জনবহুল শিমরাইল মোড়ের ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে সওজের অধিনস্থ সরকারি জায়গা দখল করে তিন শতাধিক ফুটপাথ দোকান গড়ে উঠে। এছাড়া আহসান উল্ল্যাহ সুপার মার্কেটের পশ্চিম, দক্ষিণ পাশে ও সুগন্ধা হাসপাতালের পাশে ডিএনডি ক্যানেলের পাশসহ মিনার মসজিদের আশপাশের ফুটপাতসহ সাড়ে ৬ শতাধিক দোকান থেকে চাঁদা উত্তোলন করে আসছে। এতে তাদের মাসিক আয় ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা। সওজ ও পুলিশ এসব দোকান উচ্ছেদ করলেও এক দুইদিন পরই লিয়ন বাহিনীর নেতৃত্বে আবারও দোকান গড়ে উঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ব্যবসায়ী জানান, লিওন বাহিনী ও তার সমন্ধি রানার সহযোগীরা প্রতিদিন সওজ, থানা পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক বিভাগের নাম করে এ টাকা উত্তোলন করেন। রানা ও ইলিয়াস হোসেন লিওন বাহিনীকে চাঁদা না দিলে তার সহযোগীরা অশ্লিল ভাষায় গালমন্দের পাশাপাশি নানা ধরনের হুমকি দেয়। ফলে বাধ্য হয়ে আমরা তার নিয়োজিত ব্যক্তিদের প্রতিদিন চাঁদা দেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত রানা আহম্মেদ ও তার ভগ্নিপতি ইলিয়াস হোসেন লিয়ন দাবি করেন, তাঁরা কোনো চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত নন। তাঁদের নাম ব্যবহার করে কেউ চাঁদা তুললে আইনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান তাঁরা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মশিউর রহমান জানান, অবৈধ দোকানপাট কয়েকবার উচ্ছেদ করা হয়েছে। দোকান থেকে চাঁদা ওঠানোর সঙ্গে থানার পুলিশ জড়িত নয় বলে তিনি দাবি করেন।
নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথের নির্বাহী পরিচালক শাহানা ফেরদৌস জানান, খুব শিগগির এসব অবৈধ স্থাপনা আবারও উচ্ছেদ করে ওই জায়গা দখলমুক্ত করা হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close