নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সক্রিয়তায় নাশকতাবিহীন দূর্গোৎসব পালিত

বিশেষ প্রতিবেদক: সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গোৎসব সুষ্ঠু, সুন্দর ও নাশকতাবিহীব ভাবে পালন করতে পেরেছে নারায়ণগঞ্জ জেলার হিন্দু কমিউনিটি।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির ধারাবাহিকতায় নারায়ণগঞ্জের পুলিশ প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে।

যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বের দরবরে রোল মডেল হিসেবে নজির স্থাপন করেছে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনের বিরুদ্ধে। তারপরেও কিছু দুষ্কৃতিকারী চক্র যখনই সুযোগ পায় তখনই পরিকল্পিতভাবে নাসকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা লিপ্ত।

‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির নিদর্শনে নারায়ণগঞ্জ সহ সারা বাংলাদেশে ধর্ম নিরপেক্ষ স্থাপিত হয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার ছাপ যেনো ছড়িয়ে না পড়ে সে দিকে সর্বদা সচেষ্ঠ আছে এ জেলায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যগন।

আনন্দ ও উৎসব মুখর পরিবেশে সনাতনধর্মের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করেছে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু কমিউনিটি এমনটাই বলছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোস্তফা রাসেল পিপিএম (বার)বিপিএম।

তিনি আরো বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর এক ঝাঁক দায়িত্বশীল পুলিশ সদস্য , র‌্যাব, আনসার,জেলা প্রশাসনসহ সকলের ঐকান্তিক পরিশ্রম ও সহযোগিতায় এ জেলায় নাশকতা ও বিশৃঙ্খলা মুক্ত দুর্গাৎসব সফলভাবে উদযাপন করতে পারে, সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। ’এবং সফল হয়েছি। এ জেলা কোনো ধরনের অনিয়ম ও অপ্রত্যাশিত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

জেলা পুলিশের ঐকান্তিক পরিশ্রম সক্রিয়তায় নাশকতাবিহীন শান্তিপূর্ন পরিবেশে সনাতনধর্মের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গা পূজা উদযাপন ও বিসর্জন সম্পন্ন করা হয়েছে।

গত ৫ অক্টোবর (বুধবার) সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের দূর্গাৎসব ঘীরে সকল পূজা মন্ডপ গুলোতে বাংলাদেশ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিশেষ নির্দেশনায় সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়েছে।

এসময় কঠোর পরিশ্রম ও সার্বক্ষনিক সহায়তা করেন সদ্য পুলিশ সুপার পদোন্নতি প্রাপ্ত ও জেলার দায়িত্বরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) মো: জাহিদ পারভেজ চৌধুরী ও মো: আমীর খসরু,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(অপরাধ)। তাদের সর্বাত্নক সহযোগিতা ও পরিশ্রমের ফলেই এবারের দূর্গা উৎসব শান্তিপূর্ন ও সুশৃঙ্খলা ভাবে সফল করা সম্ভবপর হয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এ বছর জেলায় ২১৮টি পূজা মন্ডপের মধ্যে ১৯৯ টি অস্থায়ী ও ১৯ টি স্থায়ী পূজামন্ডপ স্থাপিত হয়েছে, এদের মধ্যে ১৯৯টি শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশে বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে পুলিশ সদস্য, আনসার বাহিনী সহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক দায়িত্বশীল ও প্রশংসনীয় তৎপরতায়।

এছাড়াও অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সাদা পোশাকধারী গোয়েন্দা তৎপরতা ও র‍্যাব সহ সকলের ঐকান্তিক পরিশ্রমে ছিলো চোখে পরার মত।

পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, দেশের সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা বিগত বছরের তুলনায় এ বছর কঠোর নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল পুলিশ ও আনসারের এক ঝাঁক সদস্য। প্রায় ৮ শতাধিক পুলিশ ও আনসার সদস্যের যৌথ প্রচেষ্টায় সুষ্ঠু দূর্গা পূজা ও বিসর্জন অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, শারদীয় দূর্গাৎসবের পূর্ব প্রস্তুতিমূলক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়ে ‘সিরিন্জ মিটিং’ পরিচালনা সহ গোয়েন্দা সংস্থার তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। কারণ কিছু সুস্কৃতকারীরা দূর্গাৎসবকে ঘীরে অহেতুক অপপ্রচারণা ছড়ানো সহ উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস কিংবা বক্তব্য ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। সেক্ষেত্রেও আমরা তাদের প্রতিহত করতে অবৈধ ‘অনলাইন ও সোশ্যল মিডিয়া’ সার্বক্ষণিক মনিটরিং এর আওতায় রেখেছি।

কিছু উসকানিমূলক পোস্ট আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ার ঘটনায় সাথে সাথে তাদেরকে চিহ্নিত করে, বিশেষ ভাবে সতর্ক করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দূর্গাৎসবকে ঘীরে কঠোর নিরাপত্তায় আমাদের ৮ শতাধিক পুলিশ সদস্য সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনকালে, থাকা-খাওয়া সহ সকল কিছু জেলা পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে করা হয়েছে।

সদ্য এসপি পদোন্নতি প্রাপ্ত ও জেলার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন ও অর্থ) মো: জাহিদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, বিগত বছরের তুলনায় এ বছরই প্রথম নারায়ণগঞ্জে সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশৃঙ্খলা ও নাশকতাবিহীন শান্তিপূর্ন পরিবেশে ৮ শতাধিক পুলিশ সদস্যের কঠোর পরিশ্রম ও নিরাপত্তায় দূর্গা পূজা উৎসব উদযাপন ও বিসর্জন করেছে।

ইতিপূর্বে দেশে বেশ্বিক মহামারী করোনার ভয়াবহতা কাটিয়ে জাঁকজমকপূর্ণ দূর্গাৎসব পালন করছে হিন্দু সম্প্রদায়।

এবার জেলার ৭টি থানায় দুর্গাপূজার মন্ডপগুলোর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সহ শহরের অন্যান্য পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করে সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর রেখেছেন জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: আমীর খসরু (অপরাধ) জানান, আমাদের পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিশেষ নির্দেশনায় ৮ শতাধিক পুলিশও আনসার সদস্য, সাদা পোশাধারী গোয়েন্দা, র‍্যাব ও পূজা উৎযাপন কমিটির সদস্য, আওয়ামীলীগের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সকল সচেতন মহল এক যোগে কাজ করছেন। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিহত করতে সকল আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এক সাথে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষন করেছেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close