সিলেট বিভাগ

চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি

কে এস এম আরিফুল ইসলাম, মৌলভীবাজার::

চা শ্রমিকের দৈনিক মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে শনিবার (১৩ই আগস্ট) মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল চৌমুহনী চত্বরে ১ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও চা শ্রমিকরা।

অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের প্রথম দিনের পাশ্ববর্তী খাইছড়া চা বাগান, ভুরভুরিয়া চা বাগানের শ্রমিকরাও এসে ভাড়াউড়া চা বাগানের শ্রমিকদের সাথে একত্রিত হয়েছেন।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা পরাগ বারই, সহ-সভাপতি পংকজ কন্দ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি প্রমূখ।

এর আগে চা বাগানের সব কাজ বন্ধ করে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ করাসহ বিভিন্ন জায়গায় রাস্থাঘাটে অবস্থান নেয়ার জন্য প্রতিটি চা বাগানের শ্রমিকদের আহবান করেছেন তারা।

এদিকে উপজেলার সাতগাঁও ইউনিয়নের, হুগলিছড়া চা বাগান ও আমরাইলছড়া চা বাগান, মাখড়িছড়া চা বাগান, সাতগাঁও চা বাগান ও ইছামতী চা বাগানের চা শ্রমিকরা এক হয়ে এক বিশাল সমাবেশ, মানববন্ধন ও অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতী পালন করছেন।

এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি চিতমোহন দাশ, সাতগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিলন শীল, সাবেক ইউপি সদস্য লছমন কানু, সাবেক পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক দুলাল বুনার্জী, ওয়ার্ড সদস্য বিকাশ দত্ত, বাগানের সর্দার সন্তোষ কর্মকার, দুলাল দাস, চা শ্রমিক জহরলাল তাঁতি প্রমূখ।

পরে সমাবেশে আসা নারী চা শ্রমিক উষা রানী বলেন, ‘আমাদের দুঃখ কেউ বুঝে না। আমরা ৪ দিন কর্মবিরতি করেছি। কিন্তু কেউ আমাদের এসে আশ্বাস দিলো না। আমরা এত কষ্ট করে কাজ করি কিন্তু আমাদের নায্য মজুরি দেয়া হয়না। চাল, ডাল, তেল ও মসলা সব কিছুর দাম বেড়েছে। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনার খরচ আছে, অসুখ হলে চিকিৎসা করাতে হয়। প্রতিদিনই জিনিসের দাম বাড়ছে। কিন্তু আমাদের মজুরি বাড়ছে না।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালিশিরা ভ্যালী সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, ‘আমরা গত মঙ্গলবার থেকে ৪ দিন দুইঘন্টা করে কর্মবিরতি পালন করছি ৩০০ টাকা মজুরির দাবীতে। কিন্তু মালিক পক্ষ আমাদের এই কর্মবিরতি পাত্তাই দেয়নি। মালিক পক্ষের কোন সারা মিলেনি। আজ আমরা আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট করছি। দেশের ২৩১ টি চা বাগানে এই ধর্মঘট পালিত হচ্ছে। ৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আন্দোলন কঠোর থেকে কঠোর হবে। আমাদের বিভিন্ন বাগানে চা শ্রমিকরা একত্রিত হয়েছে। সব বাগানে বাগানে সমাবেশ হবে।’
বাংলাদেশীয় চা সংসদের সিলেট বিভাগের চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, মালিক পক্ষের সাথে শ্রমিকপক্ষের আলোচনা কালে এভাবে কাজ বন্ধ করে আন্দোলন করা বেআইনি। আমরা আশা করছি তারা আন্দোলন বন্ধ করে কাজে যোগ দিবে। এখন চা বাগানের ভরা মৌসুম। কাজ বন্ধ রাখলে সবার ক্ষতি। তারাও এই সিজনে কাজ করে বাড়তি টাকা পায়।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close