ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মাদকমুক্ত করতে না পারলে বাংলাদেশ সোমালিয়া হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকালে ‘মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধকল্পে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন’ বিষয়ক এক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন। নগরীর মোটেল সৈকতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সহযোগিতায় চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় এই কর্মশালার আয়োজন করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের নির্দেশের মতো মাদকের বিরুদ্ধেও ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাদকমুক্ত ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়তে হবে। এটা করতে না পারলে এই দেশ সোমালিয়া হয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা জননেত্রী শেখ হাসিনা তিলে তিলে গড়ে তুলছেন। গত ১৩ বছরে এদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। মাদকমুক্ত প্রজন্ম গড়তে না পারলে এ দেশে দক্ষ জনগোষ্ঠীর অভাব তৈরি হবে।’
মাদকের বিস্তার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যারা ফেনসিডিল খেত, তারা এখন ইয়াবাসহ অন্য মাদক সেবন করে। বড়লোকের ছেলেরা ফ্যাশন করতে মাদক সেবন করে। মাদক এখন পাড়া-মহল্লায় ঢুকে গেছে। এখনই প্রতিটি মহল্লায় মাদকবিরোধী কর্মশালা করতে হবে।’
প্রসঙ্গক্রমে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে তুলনা করে মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে পাকিস্তানের এখন দিন আর রাতের পার্থক্য। পাকিস্তানের টাকার মান আমাদের চেয়ে অনেক কম। আমাদের ১ টাকা পাকিস্তনের দেড় টাকার ওপরে। পাকিস্তনের চেয়ে সবক্ষেত্রে আমাদের দৃঢ় অবস্থান আছে। বাংলাদেশ যে শক্ত মজবুত জাতি হিসেবে দাঁড়িয়েছে, সেটি সরকারের ধারাবাহিকতার জন্যই সম্ভব হয়েছে।’
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব তেলের বাজারে পড়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা দেখছি যে টিসিবির গাড়ির দিকে মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার সরবরাহ বাড়ানোর চেষ্টা করছে। তবে বাস্তবতাও মানতে হবে। যুদ্ধের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এর প্রভাব আরও তিন মাস পরে আরও বেশি পড়বে।’
একই সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মোকাব্বির হোসেন বলেন, ‘ইয়াবার পর আইস, এলএসডি, ডিওবি এখন মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেভাবে মাদক ছড়িয়ে পড়ছে, পাঁচ-সাত বছর পর কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী কমে যাবে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঠিকানাবিহীন মাদকের লেনদেন হচ্ছে, অভিযান করে ঠেকানো সম্ভব নয়। এনফোর্সমেন্ট করে ঠেকানো সম্ভব নয়।’
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক আব্দুস সবুর মন্ডল, বিজিবির ডেপুটি রিজিয়ন কমান্ডার কর্নেল রাশেদ আজগর, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেনও বক্তব্য রাখেন।