নারায়ণগঞ্জফতুল্লা
ফতুল্লা গাবতলীবাসীর গ্যাংস্টার গ্রুপের হাত থেকে যেন রেহাই নেই

গ্যাংস্টার গ্রুপের এর হাত থেকে যেন রেহাই নেই শিল্প অধ্যুষিত অঞ্চল ফতুল্লার গাবতলী এলাকার মানুষের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় কিছু দিন বন্ধ থাকলেও আবারও উদ্বেগের কারণ হয়েছে গ্রুপটি।
কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে গত ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি গ্রুপের কিছু সদস্য এবার মো. আবুবক্কর সিদ্দিক ও জুয়েল নামের দুই মাঝ বয়সী ব্যক্তির বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙ্গচুর করেছেন। ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন নগদ টাকা ও মুঠোফোনও। এছাড়া চাঁদাবাজি, ইভটিজিংয়ের মতো ভয়ঙ্কর সব অপরাধ কর্মকাণ্ড করে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়েছে।
গ্রুপের বিরুদ্ধে মো. আবুবক্কর সিদ্দিক সম্প্রতি ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করে জানিছেন, ‘গ্রুপটির সদস্যরা চলাচলরত পথচারীদের কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা বলে। তাই এলাকার লোকজন নিয়ে এমন কর্মকাণ্ডের বিরোধীতা করলে গত ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি লোহার রড. সুইচ গিয়ার চাকু, হকষ্টিক নিয়ে বাসায় গিয়ে দু’ দফা হামলা করে নগদ টাকা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। এ ঘটনায় হত্যার হুমটিও দিয়েছেন সদস্যরা।
অভিযুক্তরা হলেন নতুন বাজার ছোট মসজিদ এলাকার আকবর মিয়ার ছেলে উজ্জল (৩৭), গাবতলী আইডিয়াল স্কুল সংলগ্ন হাসেমের ছেলে ইমরান (৩৮), ব্যাংক টাউনের সামনের দুলাল মিয়ার ছেলে সাদ্দাম ওরুফে বল্টু (৩৫), লালমিয়ার চটপটির দোকানের সামনের আমজাদের শাওন (৩৩), ব্যাংক টাউনের সামনের মাজেদের ছেলে রুবেল ওরফে মাষ্টার রুবেল (৩৬), মাসদাইরের জহিরের ছেলে পারভেজ (৩২), কেতাবনগরের থাই মাসুদের ছেলে উৎস (৩০), ব্যাংক টাউনের সামনের মৃত হেলালের ছেলে আনিক (৩৪), এলাহীর ছেলে শাহীন (৩২), লিয়াকত মিয়ার ভাড়াটিয়া ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে রফিক (৪০), গাবতলী আইডিয়াল স্কুলের সামনের মেহেদীর ছেলে শাওন (২৫), ব্যাংক টাউনের সামনের মনুর ভাগিনা সুমন (২৭), লাল মিয়ার ছেলে আকবর (৩৫), মিছির আলীর ছেলে আরিফ (২৮), পাগলা খোকনের ছেলে জীবন (২৮) ও ধর্মগঞ্জের আল-আমিন (৩৭)।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর সদস্যরা আগেও এই গ্রুপের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ছিল। তাদের অস্ত্র ভান্ডার থেকে ২টি বিদেশী পিস্তুল, দুই ম্যাগজিন, ১৫ রাউন্ড গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার হয়। র্যাবের গোয়েন্দা তথ্য অনুসন্ধ্যানে ২০১৯ সালের অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে দুই দফা বেরিয়ে আসে এই গ্রুপটির সন্ত্রাসী কার্যক্রমের চিত্র।
তখন র্যাব প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে ছিলেন, এক সময় নারীদের ভ্যানিটি ব্যাগ চাকু বা বেল্ট দিয়ে কেটে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল ছিনতাই করতেন। অপরিচিত লোকজন আসলে হেনস্ত করে রেখে দিতেন টাকা পয়সা। করতেন নারী গার্মেন্টস কর্মীদের আসা যাওয়ার পথে উত্যক্ত। সব কু-কর্মই দল বেঁধে করে তারা। তাই এলাকাটির সভাই তাদের ভয়ে থাকতেন তটস্থ। গাবতলি নতুন বাজার এলাকায় এ অপরাধী চক্রটিকে সকলেই চিনেন ‘গ্যাংস্টার গ্রুপ’ নামে।
তখন আদমজীনগর র্যাব ১১-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিন জানিয়েছিলেন, গ্যাংস্টার গ্রুপের নামে তারা সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। এ গ্রুপের নেতৃত্ব দিতেন গাবতলী নতুন বাজার এলাকার সন্ত্রাসী উজ্জ্বল।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই ১২সদস্য বর্তমানে জামিনে বেড়িয়ে এসে আবারও এলাকাটিতে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। এলাকাবাসী রয়েছে ‘গ্যাংস্টার গ্রুপ’র আতঙ্কে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, আগে উজ্জ্বলের নেতৃত্বে তারা ছিনতাই, রাস্তা ঘাটে পথচারেীদের হেনস্ত টাকা পয়সা রেখে দিত, নারী গার্মেন্টস কর্মীদের উত্যক্ত করেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এবার কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তাদের অপরাধে মাত্রা আরও একধাপ বেড়েছে! তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলারও সাহস পায় না।
এ ব্যাপারে ফতুল্লা থানা পুলিশের উপ-পরিষদক (এসআই) শামীম জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলার তদন্তের দায়িত্ব আমি পেয়েছি, খুব শীঘ্রই তদন্তের কাজ শুরু করবো।