মতামত

আজ আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস

  • আজ আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস

পৃথিবীতে কতশত দিবস আছে, সেটা হয়তো আপনি নিয়ম করে মনে রাখেন না। তবে আপনি যদি পুরুষ হয়ে থাকেন, তবে আজকের দিনটি অবশ্যই আপনাকে মনে রাখতে হবে। কারণ, দিনটি শুধুই আপনার। আজ ১৯ নভেম্বর, আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস। প্রতিবছর ১৯ নভেম্বর তারিখে বিশ্বব্যাপী পুরুষদের মধ্যে লিঙ্গভিত্তিক সমতা, বালক ও পুরুষদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং পুরুষের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার প্রধান উপলক্ষ হিসেবে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়ে থাকে।

প্রতিবছরের মতো এবারও দিবসটি পালনের লক্ষ‌্যে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। বেসরকারি সংগঠন এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক পুরুষ দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী তারা নানা কর্মসূচি পালন করবে।এই লক্ষ্যে ২০২১ সালের পুরুষ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘নারী-পুরুষের লিঙ্গ সম্পর্ক উন্নয়ন’।

পুরুষ দিবস পালনের প্রস্তাব প্রথম করা হয় ১৯৯৪ সালে। তবে ১৯২২ সাল থেকে সোভিয়েত ইউনিয়নে পালন করা হতো রেড আর্মি অ্যান্ড নেভি ডে। এই দিনটি পালন করা হতো মূলত পুরুষদের বীরত্ব আর ত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে। ২০০২ সালে দিবসটির নামকরণ করা হয় ‘ডিফেন্ডার অফ দ্য ফাদারল্যান্ড ডে’। রাশিয়া, ইউক্রেনসহ তখনকার সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে এই দিবসটি পালন করতো।

বলা যায়, নারী দিবসের অনুরূপভাবেই দিবসটি পালিত হয়। ষাটের দশক থেকেই পুরুষ দিবস পালনের জন্য লেখালেখি শুরু হয়। ১৯৬৮ সালে আমেরিকান সাংবাদিক জন পি হ্যারিস নিজের লেখায় এ দিবসটি পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন।

নব্বই দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও মাল্টায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ফেব্রুয়ারিতে পুরুষ দিবস পালনের জন্য বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। যদিও অনুষ্ঠানগুলো খুব একটা প্রচার পায়নি। অংশগ্রহণও ছিল কম। পরবর্তী সময়ে ১৯ নভেম্বর পুরো বিশ্বে পুরুষ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।এই দিনকে ঘিরে জীবনধারা ও ফ্যাশনবিষয়ক ওয়েবসাইট ব্লোডস্কাই জানিয়েছে মজার তথ্য। এই সমাজে পুরুষেরাও বেশ কিছু কথা শুনতে শুনতে বিরক্ত হয়ে উঠেছে। সেই কথাগুলোর কয়েকটি তালিকাও প্রকাশ করেছে তারা। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেই কথাগুলো—

‘আসল পুরুষ কাঁদে না’

আমাদের সমাজ এই ধারণায় বিশ্বাস করে, কেবল নারী ও শিশুরা কান্নাকাটি করে। সম্ভবত তারা এ সত্যটি উপলব্ধি করতে পারে না যে একজন পুরুষেরও দুঃখবোধ থাকতে পারে, কষ্ট থাকতে পারে। এর সঙ্গে লিঙ্গের কোনো যোগসূত্র নেই।

‘পুরুষেরা গোলাপি ও হলুদ পোশাক পরে না’

পুরুষেরা গোলাপি ও হলুদ রঙের পোশাক পরলে এই সমাজে বাঁকা চোখে দেখা হয়। এর কী কারণ সেটা অজানা, তবে কোনো নির্দিষ্ট রং কোনো নির্দিষ্ট লিঙ্গের জন্য সৃষ্টি হয়েছে, এমন ইতিহাস নেই।

‘পুরুষেরা ব্যথা অনুভব করে না’

সত্যি? ঈশ্বর কি পুরুষদের ব্যথা এড়াতে আলাদা কোনো বিশেষ ব্যবস্থা তৈরি করেছেন? এমনটি যদি না হয়ে থাকে, তাহলে পুরুষেরা ব্যথা অনুভব করবেন না কেন? তাদের শরীর ও মনে তো ব্যথা অনুভব করার সমস্ত উপকরণ আছে।

‘গোঁফ ও দাড়ি প্রকৃত পুরুষ করে তোলে’

এই সমাজ গোঁফ ও দাড়ি না রাখলে পুরুষই ভাবতে চায় না। আপনার সমস্ত পুরুষত্ব যেন ফুটে ওঠে ওই গোঁফ ও দাড়িতে। যদিও এই ব্যাখ্যার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

‘পুরুষের উচিত নারীর দায়িত্ব নেওয়া’

আপনার মা, স্ত্রী, কন্যা, বোন এবং বান্ধবীর যত্ন নিঃসন্দেহে আপনি নিতে পারেন। এগুলো সেরা কাজ। তবে উপার্জন করে তাদের দায়িত্ব পুরুষদের গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করে আমাদের সমাজ, যেটা ঠিক নয়। পুরুষ যদি স্বনির্ভর হতে পারে, তবে নারীও পারে।

‘খেলাধুলায় আগ্রহ না থাকলে আপনি পুরুষ নন’

আপনি খেলাধুলায় আগ্রহী নন, এর অর্থ এই সমাজে আপনি পুরুষ নন। অথচ খেলাধুলা পছন্দ বা অপছন্দ ব্যক্তির ব্যক্তিগত ব্যাপার।

‘সিনেমা দেখে কাঁদলে আপনি পুরুষ নন’

সিনেমার কোনো দৃশ্য পুরুষ ও নারী উভয়ের কাছে সংবেদনশীল হতে পারে, সেটার জন্য যে কেউ আবেগে ভাসতে পারে। সিনেমা দেখে কাঁদা মেয়েশিশুর বৈশিষ্ট্যযুক্ত, এ কথার কোনো বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব নেই।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close