খেলাধুলাজাতীয়বিনোদন

আফগানদের হারিয়ে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয়

বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া ১৫৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে নাসুম আহমেদের ঘূর্ণিতে কুপোকাত আফগান ব্যাটিং অর্ডার।  শেষ পর্যন্ত আর এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে না পারলে ১৭.৪ ওভারে ৯৪ রানে গুটিয়ে গেছে আফগানিস্তান। আর বাংলাদেশ পেয়ে গেছে ৬১ রানের দুর্দান্ত এক জয়। নাসুমের চার উইকেটের সঙ্গে তিনটি উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে মাত্র ২০ রানেই ৪ উইকেট হারায় আফগানরা। চারটি উইকেটই তুলে নেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। এরপর আর ম্যাচে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সফরকারীরা।

নাসুমের বল যেন বুঝতেই পারছিলেন না হজরতউল্লাহ জাজাই। প্রথম বলটি ঠেকালেন, পরের বলটিতেই ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন গুরবাজ। তবে ভাগ্যচক্রে বলটি পড়ে নো-ম্যান্স ল্যান্ডে। পরের বলটি লংঅনে ঠেলে দেন রহমতউল্লাহ গুরবাজ। চতুর্থ বলে কাভার দিয়ে বল বের করতে গিয়ে ইয়াসির আলীর তালুবন্দি হন রহমতউল্লাহ গুরবাজ। দলীয় ১ রানেই প্রথম উইকেট হারায় আফগান।

পরের ওভারে হজরতউল্লাহ জাজাইও ফিরতে পারতেন। মাহেদি হাসানের বলে কভার পয়েন্টে থাকা মুনিম শাহরিয়ার জাজাইয়ের ক্যাচ ফেলে দেন। তবে দুই দুইবার জীবন পাওয়া জাজাই তৃতীয় ওভারের প্রথম বলে ফেরেন মোহাম্মদ নাঈমের হাতে ক্যাচ দিয়ে। এর এক বল পরেই দারউইশ রাসুলি নাসুমকে সুইপ করতে গিয়ে হন বোল্ড। এতেই মাত্র ৮ রানে তিন উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

পরের ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন নাজিবুল্লাহ জাদরান। তবে উইকেটের পেছনে লাফিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি লিটন দাস। এদিকে নিজের তৃতীয় ওভারে বল হাতে এসে আবারও আঘাত হানলেন নাসুম। এবারে তার শিকার করিম জানাত।

৫ম ওভারের তৃতীয় বলে মাহেদি হাসানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে মাত্র ৬ রান করে ফিরলেন জানাত। চেয়েছিলেন এক্সট্রা কাভার অঞ্চল দিয়ে বল বাইরে পাঠাতে কিন্তু মাহেদি সুযোগ হাতছাড়া করেননি। এতেই মাত্র ২০ রানে চতুর্থ উইকেট হারায় আফগানরা।

এক বল বিরতিতে নাসুম তুলে নিয়েছিলেন মোহাম্মদ নবীকেও। কিন্তু এ যাত্রায় রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান আফগান অধিনায়ক। এরপর পঞ্চম উইকেটে নাজিবুল্লাহ এবং নবী মিলে ৩৭ রানের জুটি গড়ে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সাকিব আল হাসান আর বেশি সময় টিকতে দেন নবীকে। ১৯ বলে ১৬ রান করা নবীকে আফিফের তালুবন্দি করান সাকিব।

এরপর আবারও ধস আফগানদের ব্যাটিং অর্ডারে। দলীয় ৬২ রানে ফিরে যান নাজিবুল্লাহ (২৭), ৬৬ রানে রশিদ খান (১)। এরপর আজমতউল্লাহ ওমরজাই ফেরেন দলীয় ৮৫ রানে। এরপর আর মাত্র ৯ রান যোগ করতেই গুটিয়ে যায় আফগানরা। শেষ পর্যন্ত ১৭.৪ ওভারে ৯৪ রানে থামে আফগানদের ইনিংস। আর বাংলাদেশ পায় ৬১ রানের বিশাল জয়।

বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে মাত্র ১০ রানের বিনিময়ে ৪টি উইকেট নেন নাসুম আহমেদ। এছাড়া তিনটি উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম, দুটি নেন সাকিব আর একটি উইকেট নেন মোস্তাফিজুর রহমান।

সিরিজের শেষ ম্যাচে আগামী শনিবার (৫ মার্চ) একই ভেন্যুতে মুখোমুখি হবে দুই দল।

সংক্ষিপ্ত স্কোরকার্ড

বাংলাদেশ: ২০ ওভার; ১৫৫/৮; (মুনিম ১৭, নাঈম ২, লিটন ৬০, সাকিব ৫, মাহমুদউল্লাহ ১০, আফিফ ২৫, ইয়াসির ৮, মাহেদি ৫, নাসুম ৩*, শরিফুল ৪*); (ফজলহক ৪-০-২৭-২, মুজিব ৩-০-২৪-০, রশিদ ৪-০-১৫-১, নবী ২-০-১৯-০, কায়েস ২-০-২১-১, ওমরজাই ৪-০-৩১-২, জানাত ১-০-৫-০)।

আফগানিস্তান: ১৭.৪ ওভার; ৯০/১০; (হজরতউল্লাহ ৬, রহমতউল্লাহ ০, রাসুলি ২, নাজিবুল্লাহ ২৭, জানাত ৬, নবী ১৬, ওমরজাই ২০, রশিদ ১, কায়েস ৮, মুজিব ৪, ফজলহক ০*); (নাসুম ৪-০-১০-৪, মাহেদি ৩-০-১৭-০, মোস্তাফিজ ৩-০-১৯-১, শরিফুল ৩.৪-০-২৯-৩, সাকিব ৪-০-১৮-২)।

ফলাফল: বাংলাদেশ ৬১ রানে জয়ী।

প্লেয়ার অফ দ্য ম্যাচ: নাসুম আহমেদ (৪-০-১০-৪)

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close