মতামত
বাংলা ও আরবী হিজরী সনঃ একই বৃন্তে দু’টি ফুল

বাংলা ও হিজরী সনের প্রথম তারিখটি কিন্তু একই। ১ মুহাররম ১ হিজরী। চাঁদের হিসাবে ১৪৪৩ হিজরী চান্দ্র্যবর্ষ। সূর্যের হিসাবে বছরে গড়ে ১০ দিন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪২৮ হিজরী বঙ্গাব্দ সৌরবর্ষ ।
যদি প্রশ্ন করা হয়, কোন্ দিন থেকে আজ আরবী ১৪৪৩ বছর অতিক্রান্ত হলো? অথবা বাংলা ১৪২৮ সনের পয়লা তারিখটি কি? জবাব হবে একটাই। আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মভূমি মক্কা ছেড়ে মদীনায় হিজরত বা দেশত্যাগের দিনটি। এ উত্তরই ১০০% সঠিক। বিষয়টি নিজে বুঝুন এবং ইতিহাসের এ বাস্তবতাটি অপর ভাইকেও পৌঁছে দিন।
চান্দ্র্য আরবী হিজরী সন গণনা শুরু করেন আমীরুল মুমিনীন হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব রা.। আজ ১ মুহাররম তাঁর শাহাদাৎ দিবস। ২৪ হিজরীর ১ মুহাররম, দুদিন আগে ফজরের নামাজে ইমামতি করাবস্থায় ছদ্মবেশী এক ইরানী অগ্নিউপাসক মুশরিক কর্তৃক বিষমাখা ছুরিতে প্রাণঘাতী আহত হয়ে, এইদিন নিহত হন। সনের বিস্তারিত পঞ্জিকা তৈরি করেন আমীরুল মুমিনীন হজরত আলী আল মুরতাজা রা.।
হিজরী বাংলা সন প্রবর্তন করেন বাদশাহ জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবর।বিস্তারিত পঞ্জিকা তৈরি করেন আকবরের নবরত্নসভা সদস্য মন্ত্রী আমির ফাতহুল্লাহ শিরাজি। ধর্মীয় তারিখ ও বাঙালী মুসলমানের চাঁদের হিসাব সামনে রেখে এর সংস্কার করেন বাংলাদেশের ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ।
আরবী বা বাংলা সনই বলেন, আর হিজরী বা বঙ্গাব্দই বলেন, আসলে এ দুটোই মুসলিম উম্মাহর ঐতিহ্যবাহী ইসলামী সন। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঐতিহাসিক হিজরতের সময়টিকে মূলভিত্তি ধরেই পরবর্তীতে এ সন প্রচলিত হয়। পার্থক্য কেবল একটি। হিজরী চাঁদের হিসাবে চলছে আর বাংলা সন সূর্যের হিসাবে চলছে। বলতে গেলে এ দুটোই হিজরী সন।
লেখক, মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভী
চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালক,
ঢাকা সেন্টার ফর দাওয়াহ এণ্ড কালচার।
শায়েখ, আলামি খানাকাহে রহমানী ঢাকা।