শুল্ক আরোপ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো ও চীন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর শুল্ক আরোপের পর দেশ তিনটি পাল্টা পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, শুল্কের প্রভাব আমেরিকা তো বটেই, বিশ্বের জন্যও খুব খারাপ হবে। ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের এই পদক্ষেপ মুদ্রাস্ফীতি বাড়াবে। এমনকি এতে মার্কিন ভোক্তাদেরই মাশুল গুনতে হবে। ট্রাম্পও অবশ্য বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
ক্ষমতার মসনদে বসেই একের পর এক সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচিত সমালোচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কখনো গ্রিনল্যান্ড কিনতে চান, কখনো পানামা খালের দখল নিতে চান; আবার কখনো শুল্ক আরোপের মতো ঘটনায় নড়েচড়ে বসছেন খোদ মার্কিনিরা।
কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) তিনটি পৃথক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ট্রাম্প। এরমধ্যে কানাডা ও মেক্সিকোকে ২৫ শতাংশ করে শুল্ক গুণতে হবে। কারণ হিসেবে ট্রাম্প বলছেন, এই দুই দেশের বিপুলসংখ্যক নাগরিককে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আর পুরনো শত্রু চীনের ওপর বর্তমান হারের চেয়ে বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
কিন্তু কথায় আছে ‘ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়’। তাই ট্রাম্পের ঘোষণার পরপর পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেয় কানাডা, চীন ও মেক্সিকো সরকার। শনিবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, তারাও ১৫৫ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করবে। এরমধ্যে মঙ্গলবার থেকে ৩০ বিলিয়ন ডলার দামের পণ্যের ওপর তা কার্যকর হবে। আর বাকি ১২৫ বিলিয়ন ডলার দামের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক কার্যকর হবে ২১ দিনের মধ্যে। মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লদিয়া শেনবাউমও শুল্ক আরোপসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ শুধু তাদের জন্যই নয়, পুরো বিশ্বের অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। এরইমধ্যে এর প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে পড়তে শুরু করেছে। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক জোসেফ স্টিগলিৎজ বলেন, ট্রাম্পের শুল্কের জন্য খোদ মার্কিন ভোক্তাদেরই মাশুল গুনতে হবে। এতে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। এছাড়া, বিশ্বে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও কমে আসবে।
ট্রাম্প অবশ্য এরইমধ্যে বিষয়টি স্বীকার করেছেন। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ট্রাম্প বলেন, শুল্ক আরোপের ফলে স্বল্প মেয়াদে মার্কিন নাগরিকরাও যন্ত্রণার শিকার হতে পারে। এতে অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত অনেকটা নিজের পায়ে কুড়াল মারার মতো। সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা
