সারাদেশ
যে কারণে খুন হলেন ঝিনাইদহের এমপি আনার
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসার জন্য গিয়ে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন বাংলাদেশের ঝিনাইদহের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বেরিয়ে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন- হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আক্তারুজ্জামান শাহীন। তাদের ধারণা- বাংলাদেশ-ভারতে স্বর্ণ চোরাচালানের অন্যতম নিয়ন্ত্রক এই দুই বন্ধু। আর এই সোনা চালান নিয়েই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থেকে খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা তদন্তকারীদের। এসব তথ্য ঘিরে এই খুনের রহস্য আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
তদন্ত সূত্র বলছে- কলকাতায় বসে হত্যার চূড়ান্ত ছক এঁকে বাংলাদেশে চলে আসেন আক্তারুজ্জামান। পরে আমানসহ ছয়জন মিলে এমপি আজীমকে সঞ্জীবা গার্ডেন নামের একটি ফ্ল্যাটে ট্র্যাপে ফেলে ডেকে আনেন। এরপর তাকে জিম্মি করে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ট্রলি ব্যাগে ভরে ফেলা হয় অজ্ঞাত স্থানে।
আক্তারুজ্জামান শাহীন আনারকে হত্যার জন্য পাঁচ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগ। তারা হলো- হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া চরমপন্থি দল পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমানউল্লাহ আমান, মোস্তাফিজ ও ফয়সাল। সেই সঙ্গে আক্তারের বান্ধবী সিলিস্তি রহমানকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৩ মে নিউটাউনের আবাসনেই শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় আনারকে। খুনের পর টুকরো টুকরো করে কাটা হয় মরদেহ। ১৬ থেকে ১৮ মে পর্যন্ত তিনদিন ধরে খণ্ডিত অংশ অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়। কিছু অংশ ওই ফ্ল্যাটের ফ্রিজে রাখা হয়। এমনকি ফ্ল্যাট থেকে প্লাস্টিক ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, প্লাস্টিক ব্যাগে ভরেই খণ্ডিত অংশ বিভিন্ন জায়গায় ফেলা হয়েছে। তবে কারা ফেলেছে, কোথায় ফেলা হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে, এই ঘটনায় একটি গাড়ি জব্দ করেছে পুলিশ। গাড়িটির নম্বর WB18 AA 5473। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে গাড়িটিকে শনাক্ত করা হয়। এর পরই গাড়ির মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেই গাড়িটিকে আনা হয় নিউটাউন থানায়। উদ্ধার হওয়া গাড়ি থেকে ফরেনসিক এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা নমুনা সংগ্রহ করেন।