অপরাধনারায়ণগঞ্জ

সরকার মাফিয়াদের উপর নির্ভর করেছে : রফিউর রাব্বি

সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহবায়ক রফিউর রাব্বি বলেছেন, যেখানে গণতন্ত্র থাকে না, দুর্বৃত্ত শক্তি হয় সর্বশক্তিমান সেখানে বিচার ব্যবস্থা স্বাধীন হতে পারে না, সেখানে সুশাসন থাকে না। ত্বকী হত্যার দশ বছর হতে চলল অথচ এখনো পর্যন্ত তৈরী করে রাখা অভিযোগপত্রটি আদালতে পেশ করা হয় নাই। রাষ্ট্র ক্ষমতায় জোর করে থাকতে গিয়ে সরকার বিচার ব্যবস্থার টুটি চেপে রেখেছে। জনগণকে বাদ দিয়ে মাফিয়াদের উপরে নির্ভর করেছে সরকার। এই মাফিয়া চক্র শুধু ত্বকীকে হত্যা করেনি তারা দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি সবকিছুকে ধ্বংস করেছে। সরকার এদের পৃষ্টপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। ত্বকীর ঘাতকরা সরকারের ছত্রছায়ায় সিন্ডিকেট করে নারায়ণগঞ্জে পরিবহন থেকে শুরু করে সর্ব ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি, ভূমিদস্যুতা, মাদক ব্যাবসা, বালু চুরি, তেল চুরিসহ সকল অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে।

তানভীর মুহাম্মতদ ত্বকী হত্যার ১১৬ মাস উপলক্ষে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি বলেন, শিশু হত্যাকারীরা ঘৃণ্যজীব-আবার ত্বকীর ঘাতকদের পুরস্কৃত করেন। সংবিধান বলছে, রাষ্ট্রের চোখে সকল নাগরিক সমান। কিন্তু আজকে ভিন্ন বাস্তবতা তৈরী হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এ বৈষম্যমূলক, গণবিরোধী বিচার-ব্যবস্থার পরিবর্তন চাই। সংবিধানে উল্লেখিত জনগণের অধিকারগুলোর বাস্তবায়ন চাই। সাগর-রুনী, তনুসহ, নারায়ণগঞ্জে সংঘটিত সকল হত্যার বিচার চাই।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের যুগ্ম আহবায়ক মাহাবুবুর রহমান মাসুম বলেন, আপনি ওসমান পরিবারের পাশে থাকবেন বলে ত্বকী হত্যার বিচারটা বন্ধ করে দিলেন। আপনি তাদের পাশে থাকেন আপত্তি নেই, কিন্তু আমাদরে সন্তান হত্যার বিচারটা করেন। এই ওসমান পরিবার নারায়ণগঞ্জের মানুষদের জীবনকে দূর্বিসহ করে তুলেছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এসবের বিচার করাতো আপনার দায়িত্ব।

 

নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহীন মাহমুদের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এড. এবি সিদ্দিক, শিশু সংগঠক রথীন চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি এড. প্রদীপ ঘোষ বাবু, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন, বাসদের জেলা সংগঠক এসএস আবদুল কাদির, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন, শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমির সভাপতি মাইনুদ্দিন মানিক প্রমূখ।  

 

 

 

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়। ৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজো আদালতে পেশ করা হয় নাই। ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close