লেখা-পড়া

গুচ্ছভুক্ত ‘এ’ ইউনিটে ভর্তির ফল প্রকাশ, ৬৬ শতাংশই ফেল!

দেশের ২৪টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য অনুষ্ঠিত গুচ্ছভুক্ত জিএসটির ‘এ’ ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ পরীক্ষায় পাসের হার ৩৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। অর্থাৎ প্রায় ৬৬ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। শিক্ষার্থীরা আজ রাত ১১ টা ৫৯ মিনিটে থেকে জিএসটির ওয়েবসাইটে ঢুকে তাদের ফলাফল জানতে পারবেন।

মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের কেন্দ্রীয় গ্যালারিতে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে জিএসটি সমন্বিত ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক ও যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ‘এ’ ইউনিটের ফলাফল ঘোষণা করেন।

অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০২৩-২৪ সেশনে প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য এ বছর ‘এ’ ইউনিটে এক লাখ ৭০ হাজার ৫৯৯ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করে। এর মধ্যে ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৯১ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। তার মধ্যে ৫০ হাজার ৭৬০ জন শিক্ষার্থী ৩০ নম্বরের উপরে পেয়ে কৃতকার্য হয়েছেন। যার হিসাবে পাসের হার ৩৩ দশমিক ৯৮ শতাংশ। পাসকৃত সকল শিক্ষার্থীকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি।

অনুত্তীর্ণ হয়েছে ৯৮ হাজার ৫৪৭ জন, যার হিসাবে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে ৬৫ দশমিক ৯৬ শতাংশ। এছাড়া ০.০৬ শতাংশ তথা ৮৪ জন শিক্ষার্থীর উত্তরপত্র বাতিল হয়েছে। ‘এ’ ইউনিটের গতবার পাসের হার ছিল ৪৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

শিক্ষার্থীরা আজ রাত ১১ টা ৫৯ মিনিটে থেকে জিএসটির ওয়েবসাইট (https://gstadmission.ac.bd/) থেকে ফলাফল জানতে পারবেন।

তিনি জানান, ‘এ’ ইউনিটে সর্বোচ্চ ৭৭ দশমিক ২৫ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন রেদুয়ানুল হক মারুফ। কৃতিত্বপূর্ণ এ শিক্ষার্থী ময়মনসিংহের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজের শিক্ষার্থী, রোল নং ২০২৫৩৭ এবং তার কেন্দ্র ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া ৭৫ নম্বরের উপরে ২ জন, ৭০ নম্বরের ওপরে ৪ জন, ৬৫ নম্বরের উপরে ২০ জন, ৬০ নম্বরের উপরে ৮৪ জন, ৫৫ নম্বরের উপরে ৪৪০ জন, ৫০ নম্বরের উপরে ২০২২ জন, ৪৫ নম্বরের উপরে ৬৭১৬ জন, ৪০ নম্বরের উপরে ১৬৩৪৬ জন, ৩৫ নম্বরের উপরে ৩১২১৭ জন এবং ৩০ নম্বরের উপরে ৫০৭৬০ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

বিভিন্ন কারণে এ বছর গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা একটি চ্যালেঞ্জ ছিল উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়াসহ নানা কারণে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এটি নিয়ে আপত্তি জানাচ্ছিলেন। তবে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের যাতায়াত, থাকা-খাওয়াসহ বিভিন্ন দুর্দশা লাঘবে ঐক্যবদ্ধভাবে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণে সকলে সম্মত হয়েছি। সব ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে চতুর্থবারের মতো ২৪টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

তিনি জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকার কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট- কেএনএফ এর নামে একটি স্বাক্ষরবিহীন পত্র জিএসটির সচিব বরাবর ডাকযোগে পাঠানো হয়েছিল। আমরা সেটিকে আমলে নিয়ে সর্বস্তরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নিই। এরই প্রেক্ষিতে সকল পরীক্ষা কেন্দ্রেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর খবর পাওয়া যায়নি। সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে পরীক্ষা সম্পন্ন করায় গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ যারা প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, মডারেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্তরের সামরিক-বেসমারিক, আধা-সামরিক, গোয়েন্দা সংস্থাসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহমুদ হোসেন, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর দে, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান, জীববিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. কামরুল ইসলাম প্রমুখ।  
উল্লেখ্য, আগামী ৩ মে ‘বি’ ইউনিটে মানবিক ও ১০ মে ‘সি’ ইউনিটে বাণিজ্য বিভাগ থেকে আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের বেলা ১১টা-১২টা পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close