জাতীয়

দেশপ্রেমিক জনতা কখনো এই সরকারকে মেনে নিবে না -খেলাফত মজলিস

এমদাদুল্লাহ্, বজ্রধ্বনি :

খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ বলেছেন, আওয়ামীলীগ গত ৭ জানুয়ারি বিরোধী দল ও মতকে কণ্ঠরোধ করে, জেল-নিপীড়ন চালিয়ে, অবৈধ সাজা দিয়ে সম্পূর্ণ গায়ের জোরে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিতর সমূচিত জবাব দিয়েছে। দেশপ্রেমিক জনতা কখনো এই সরকারকে মেনে নিবে না। (২৭ জানুয়ারি) শনিবার সকাল ৯টায় পল্টন কালভার্টরোডস্থ সীগাল রেস্টুরেন্টে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

শুরার অধিবেশনে বক্তারা বলেন, অবিলম্বে এই অবৈধ সংসদ ভেঙে দিয়ে দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। সীমান্তে বিনা উস্কানীতে বাংলাদেশী নাগরিকদের গুলি করে হত্যা করছে ভারতীয় বিএসএফ বাহিনী। গত ১০ বছরে ১হাজারেরও বেশি বাংলাদেশী নাগরিককে তারা হত্যা করেছে। সম্প্রতি এক বিজিবি সদস্যকে যশোর সীমান্তে বিএসএফ হত্যা করলেও আওয়ামীলীগ সরকার সামান্য প্রতিবাদ করার সাহস করতে পারেনি।

বক্তরা আরো বলেন, চাল, ডাল, তেল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সব জিনিসের দাম। মৌসুমী শাক-সব্জী ও ফলমূলের দামও এখন আকাশচুম্বী। সামনে আবারো গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা চলছে।

সরকারের প্রণীত শিক্ষানীতির বিতর্কিত অংশ বাতিলের দাবি জানিয়ে খেলাফত মজলিস নেতৃবৃন্দ বলেন, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডারের মতো সমকামিতার পশ্চিমা অপসংস্কৃতি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে স্বাভাবিক করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। কোমলমতি শিশু-কিশোর/ কিশোরীদের এমন বিষয়াদি শেখানো হচ্ছে যা এদেশের ধর্মীয় সংস্কৃতিক ও মূল্যবোধের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। পাঠ্যপুস্তকের প্রচ্ছদ থেকে ভিতরের কন্টেন্ট এমনভাবে রচিত হয়েছে যা আলিয়া মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা নষ্ট করেছে।

বক্তাগণ বলেন, হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলায় এখনো অনেক আলেম-উলামা ও রাজনীতিবিদ কারান্তরীণ রয়েছেন। যারা জামিনে আছেন তাদেরও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমরা সরকারের এমন দমন-নিপীড়নের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আলেম-উলামাসহ সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করছি।

আমীরে মজলিস মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মজলিসে শুরার অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক আবদুল্লাহ ফরিদ, অধ্যাপক সিরাজুল হক, উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মাওলানা জিয়াউল হক শামীম, মাওলানা ফেরদাউস বিন ইসহাক, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, এবিএম সিরাজুল মামুন, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক মো. আবদুল জলিল, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান, আহমদ আসলাম, মাওলানা সামছুজ্জামান চৌধুরী, মাষ্টার আবদুল মজিদ, অধ্যাপক এ এস এম খুরশীদ আলম, মাওলানা শেখ সালাহউদ্দিন, প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক কাজী মিনহাজুল আলম, সমাজকল্যাণ সম্পাদক ডা. রিফাত হোসেন মালিক, প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, যুব বিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান, ডা. আসাদুল্লাহ, খন্দকার শাহাবুদ্দিন আহমদ, মাওলানা আবদুল হক আমিনী, সহকারী প্রশিক্ষণ ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম, সহকারী অর্থ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, সহকারী সমাজকল্যাণ সম্পাদক বোরহান উদ্দিন সিদ্দিকী, সহকারী দফতর সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুল ইসলাম, সহকারী আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাইখুল ইসলাম, সহকারী উলামা বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আবদুল হাই, নির্বাহী সদস্য- মাওলানা সৈয়দ মুশাহিদ আলী, মাওলানা সাঈদ আহমদ, হাফেজ মাওলানা আবু সালমান, মাওলানা আবু হানিফ, হাজী নূর হোসেন, মাওলানা আফতাব উদ্দিন, সাখাওয়াত হোসাইন মোহন, মো. সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা কাজী ফিরোজুল ইসলাম, মাওলানা নুরুল হক, মাওলানা নেহাল আহমদ, অধ্যক্ষ আবদুল হান্নান, সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, মো. আবুল হোসেন, মুফতি আজিজুল হকসহ মজলিসে শুরার অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।

দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত উক্ত অধিবেশনে সংগঠনের সারাদেশের কাজের পর্যালোচনা করা হয়। এছাড়াও ৭টি বিষয়ে প্রস্তাব পাশ করা হয়েছে। প্রস্তাবগুলো হচ্ছে-

প্রস্তাব-১: গণপ্রত্যাখ্যাত প্রহসনের ডামি নির্বাচন প্রসঙ্গ।
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সাধারণ অধিবেশন ২০২৪ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গণে বিরাজমান সংকট জটিল আকার ধারণ করেছে। আওয়ামীলীগ গত ৭ জানুয়ারি বিরোধী দল ও মতকে কণ্ঠরোধ করে, জেল-নিপীড়ন চালিয়ে, অবৈধ সাজা দিয়ে সম্পূর্ণ গায়ের জোরে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে সক্ষম হলেও জনগণ ভোট বর্জনের মাধ্যমে তার সমূচিত জবাব দেয়। এই নির্বাচনসহ পূর্বের ৩টা নির্বাচনে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত বাংলাদেশের একটি দলের পক্ষে নগ্নভাবে যেভাবে হস্তক্ষেপ করেছে তা একটি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে হুমকির সম্মুখিন করেছে। পশ্চিমা শক্তি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুললেও বর্তমান সরকারের সাথে কাজ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনতা কখনো এই সরকারকে মেনে নিবে না। খেলাফত মজলিসের আজকের অধিবেশন এই অবৈধ সংসদ ভেঙে দিয়ে দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি পুনর্ব্যাক্ত করছে।

প্রস্তাব-২: অর্থনৈতিক সংকট ও দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় উচ্চমূল্য প্রসঙ্গ।
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সাধারণ অধিবেশন ২০২৪ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছে যে, দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এক চরম অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বৈদেশীক মুদ্রার রিজার্ভ অস্বাভাবিকভাবে কমে যাচ্ছে। যার কারণে প্রয়োজনীয় তেল-গ্যাস ও অন্যান্য পণ্য আমদানী ব্যাহত হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছে না। মেগা দুর্নীতির কারণে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ধ্বস নেমেছে। দলীয় বিবেচনায় পরিচালনা পরিষদ নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকগুলো খালি করে ফেলা হচ্ছে। একটি পরিবারের হাতে এখন দেশের ১০টি ব্যাংক। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে সীমাহীন দুর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচার দেশের অর্থনীতিকে রুগ্ন করে ফেলেছে। বর্তমানে বেকার সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। চাল, ডাল, তেল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সব জিনিসের দাম। মৌসুমী শাক-সব্জী ও ফলমূলের দামও এখন আকাশচুম্বী। সামনে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা চলছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের নাভি:শ্বাস উঠেছে। আজকের এ অধিবেশন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসহ সকল জিনিস সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসার জোর দাবী জানাচ্ছে।

প্রস্তাব-৩: সেক্যুলার শিক্ষানীতি ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিনাশী শিক্ষাক্রম প্রসঙ্গ।
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সাধারণ অধিবেশন ২০২৪ গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছে যে, জাতীয় শিক্ষাক্রমে ইসলামী আদর্শ ও মূল্যবোধ বিসর্জন দেয়া হয়েছে। বিজ্ঞান শিক্ষাকে সংকুচিত করা এই শিক্ষাক্রম মূল শিক্ষাকে গণশিক্ষার স্তরে নামিয়ে দিয়েছে। ট্রান্সজেন্ডারের মতো সমকামিতার পশ্চিমা অপসংস্কৃতি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে স্বাভাবিক করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে। কোমলমতি শিশু-কিশোর/ কিশোরীদের এমন বিষয়াদি শেখানো হচ্ছে যা এদেশের ধর্মীয় সংস্কৃতিক ও মূল্যবোধের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। পাঠ্যপুস্তকের প্রচ্ছদ থেকে ভিতরের কন্টেন্ট এমনভাবে রচিত হয়েছে যা আলিয়া মাদরাসা শিক্ষার স্বকীয়তা নষ্ট করেছে। অভিভাবকেরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। সামর্থ্যবানদের অনেকে আজ ইংরেজি মাধ্যমে সন্তানদেরকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। ডিভাইস নির্ভরতা ও পরীক্ষা না থাকাতে শিক্ষার্থীরা বাসায় পড়াশোনা করে না। মা-বাবার কথা শুনে না। আজকের এই অধিবেশন থেকে আমরা দাবি করছি, আধুনিকতার নামে নৈতিকতা বিসর্জন দেয়ার এ শিক্ষ্যাব্যবস্থার বিতর্কিত অংশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। ইসলামী আদর্শের আলোকে বিজ্ঞানমুখী জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে।

প্রস্তাব-৪: আলেম উলামাসহ বন্দি বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার প্রসঙ্গ।
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সাধারণ অধিবেশন গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, অবৈধভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে বিরোধী দল ও মতকে নির্মূল করতে চায় আওয়ামীলীগ সরকার। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের তফসিল ঘোষণার আগ থেকেই বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুনভাবে ৫শতাধিক মিথ্যা মামলা দিয়েছে সরকার। এসব মামলায় সারাদেশে ২০হাজারেরও অধিক নেতাকর্মী কারান্তরীণ রয়েছেন। ইতিমধ্যে পুরনো অনেকগুলো মামলার রায় তড়িঘড়িভাবে দিয়ে সাজা কার্যকর করছে ফ্যাসিস্ট সরকার। মিথ্যা মামলায় এখনো অনেক আলেম-উলামা কারান্তরীণ রয়েছেন। যারা জামিনে আছেন তাদেরও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। আমরা সরকারের এমন দমন-নিপীড়নের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আজকের এই অধিবেশন থেকে আমরা অবিলম্বে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও আলেম-উলামাসহ সকল রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করছি।

প্রস্তাব-৫: ভারতীয় আধিপত্যবাদ প্রসঙ্গ।
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সাধারণ অধিবেশন গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছে যে, সাম্প্রতিক জাতীয় নির্বাচনসহ পূর্বের ৩টা নির্বাচনে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত বাংলাদেশের একটি দলের পক্ষে নগ্নভাবে হস্তক্ষেপ করেছে। যার কারণে সুষ্ঠু নির্বাচন না হওয়া সত্বেও আওয়ামীলীগ বাংলাদেশের জনগণের ওপর জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আছে। জুলুম-নিপীড়ন চালাচ্ছে। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি নিজের আত্মজীবনীতে এর কিছুটা প্রকাশ করে গেছেন। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবাহিত তিস্তা, ফেনী নদীসহ অভিন্ন নদীগুলোর সুষ্ঠু পানিবণ্টন বাধাগ্রস্থ করছে ভারত। ফলে বন্যা ও খরার কারণে বাংলাদেশের ফসলাদি ও জনগণ চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। সীমান্তে বিনা উস্কানীতে বাংলাদেশী নাগরিকদের গুলি করে হত্যা করছে ভারতীয় বিএসএফ বাহিনী। গত ১০ বছরে ১হাজারেরও বেশি বাংলাদেশী নাগরিককে তারা হত্যা করেছে। সম্প্রতি এক বিজিবি সদস্যকে যশোর সীমান্তে বিএসএফ হত্যা করলেও আওয়ামীলীগ সরকার সামান্য প্রতিবাদ করার সাহস করেনি। নামমাত্র মূল্যে টোল দিয়ে ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারি যানবাহনের ট্রানজিট ও ট্রান্সিপমেন্টের সুবিধা নিচ্ছে, এতে আমাদের রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ভারত বাংলাদেশের ওপর একচেটিয়া বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে যার বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৭ গুণ। প্রতিবেশী রাষ্ট্র শ্রীলংকা, নেপাল ও মালদ্বীপের সরকার ভারতীয় আধিপত্যবাদ সাহসিকতার সাথে মোকাবেলা করতে পারলেও বাংলাদেশের অনির্বাচিত ও নতজানু সরকারের কারণে তা ব্যর্থ হয়েছে। আজকের এই অধিবেশন থেকে আমরা ভারতীয় আধিপত্যবাদী আচরণের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করছি। ভারতকে বাংলাদেশের ওপর আধিপত্যবাদী মানসিকতা পরিহার করে প্রতিবেশী ও বন্ধুত্বসুলভ আচরণের আহŸান জানাচ্ছি।

প্রস্তাব- ৬: গাজায় ইসরাইলের ভয়াবহ গণহত্যা ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা প্রসঙ্গ।
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সাধারণ অধিবেশন তীব্র ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করেছে যে, অর্ধশতাব্দীরও বেশি কাল ধরে ইহুদীবাদী ইসরাইল ফিলিস্তিনীদের ওপর অকথ্য নির্যাতন, গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। গত ৮ অক্টোবর ২০২৩ এর পর থেকে নতুন করে শুরু হওয়া ইসরাইলী আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের গাজায় এই পর্যন্ত ২৫ হাজারের বেশি মুসলিমকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের দুই তৃতীয়াংশ হচ্ছে নারী ও শিশু। ৬২ হাজারের বেশি মানুষকে আহত করা হয়েছে। গাজার ৭০ ভাগ অর্থ্যাৎ ৪ লক্ষাধিক বিল্ডিং আজ বিধ্বস্ত। ৮৫ ভাগ লোক আজ বাস্তুচ্যুত। খাদ্য, পানীয় ও চিকিৎসার অভাবে বিপর্যস্ত আজ গাজাবাসী। এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও বর্বর ইসরাইলী বাহিনী বিমান হামলা বন্ধ রাখেনি। মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা কিছু শক্তি অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলকে অব্যাহত মদদ যুগিয়ে যাচ্ছে। ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধে সহযোগীতা করায় আমরা এসব রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা প্রকাশ করছি। আজকের এই অধিবেশন থেকে আমরা অবিলম্বে ইসরাইলী হামলা বন্ধের জন্যে আরবলীগ, ওআইসি, জাতিসংঘ সহ সকল আন্তর্জাতিক মহলকে

কে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। আন্তর্জাতিক আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ মামলা দায়ের এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে সহযোগীতার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকা সহ সকল মানবতাবাদী রাষ্ট্রসমূহকে আমরা অভিনন্দন জানাচ্ছি। ফিলিস্তিনের প্রতিবেশি হওয়া সত্বেও মধ্যপ্রাচ্যের আরব রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যারা নির্বিকার ভূমিকা পালন করছে আমরা তাদের প্রতি ঘৃণা ও ধিক্কার জানাচ্ছি।

প্রস্তাব-৭: শোক প্রস্তাব।
খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সাধারণ অধিবেশন ২০২৪ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য শায়খুল হাদিস মাওলানা তাজুল ইসলাম, ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি মাওলানা আবুল হাসান মাজহারী, বরিশাল পশ্চিম জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মাহবুবুর রহমান রতন, কিশোরগঞ্জ জেলা নির্বাহী সদস্য হাফেয মাওলানা হাফিজ উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা নির্বাহী সদস্য মাওলানা মুহিবুর রহমান নিজাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের গেন্ডারিয়া থানা সাধারণ সম্পাদক মাস্টার মুজিবুর রহমান, খুলনা সোনাডাঙ্গা থানা শাখার নির্বাহী সদস্য মাওলানা বাহাউদ্দিন, কুমিল্লা জেলা সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কামরুল হুদা মনির, বিশিষ্ট আলেম মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, নোয়াখালীর বিশিষ্ট আলেম মাওলানা শফী উল্লাহ, বিশিষ্ট দায়ী প্রফেসর হামিদুর রহমান, প্রবীণ সাংবাদিক ড: রেজোয়ান সিদ্দিকী, গত ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ মরক্কো বেশ কয়েকটি প্রদেশে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত ও গত ২৩ অক্টোবর ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দূর্ঘটনায় হতাহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করছে। আজকের সাধারণ অধিবেশ থেকে আমরা সকলের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে মাগফিরাত কামনা করছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close