সিদ্ধিরগঞ্জ

ফিলিস্তিনের রাফায় ইসরাইলের হামলার তীব্র নিন্দা ও বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনের হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হওয়ার পরও দক্ষিণ গাজার রাফায় ইসরায়েলি বাহিনীর ভারী বোমা হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইয়ুথ লীড গ্লোবাল ও গোদনাইল আলোকিত যুব শক্তি।

শুক্রবার (১০ মে) গোদনাইল চেয়ারম্যান অফিস সংলগ্ন আল-ফাতেহ জামে মসজিদের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এই নিন্দা জানান।

উপস্থিত ছাত্র-যুব-জনতার পক্ষে ইয়ুথ লীড গ্লোবাল এর প্রেসিডেন্ট ও গোদনাইল আলোকিত যুব শক্তি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম ইফতি বলেন, দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনের মুসলমানদের ঘর-বাড়ি ও ভূমি থেকে উৎখাত করে দখলদারিত্ব চালিয়ে আসছে। দীর্ঘ ৭৫ বছর যাবত ইসরাইলিরা নিরীহ ফিলিস্তিনে বর্বর গণহত্যা চালাচ্ছে। পুরো ফিলিস্তিনে গত বছর ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার বেসামরিক সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে এবং ৮০ হাজার মানুষকে আহত করা হয়েছে, যাদের ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু। লাখ লাখ মানুষকে বাস্তুচ্যূত করা হয়েছে। বর্বর সন্ত্রাসী ইসরাইলিদের হাত থেকে হাসপাতাল, মসজিদ, মাদরাসা, স্কুল-কলেজ, আশ্রয় কেন্দ্র কোনো কিছুই রেহাই পায়নি। গাজায় এ পর্যন্ত ৭টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এবং এসব গণকবর থেকে ৫২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ফিলিস্তিনের নির্যাতিত-নিপীড়িত মুসলমানদের ওপর অবৈধ ইসরাইলি বাহিনীর এসব আগ্রাসী হামলার নিন্দা জানানোর কোনো ভাষা আমাদের জানা নেই। আমরা নরপিশাচ ইসরাইলি বাহিনীর সকল বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, গাজায় হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত রাফাতে ১৫ লাখ বাস্তুচ্যূত নিরীহ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তারা সেখানে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। খাদ্য ও পানির অভাব দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই অমানবিক সঙ্কটের মধ্যেই দখলদার ইসরাইলি বাহিনী ভারী ট্যাংক নিয়ে রাফাহ ক্রসিংসহ কিছু এলাকা দখল করে হামলা শুরু করেছে এবং গাজায় খাদ্য সামগ্রী প্রবেশের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। সামরিক বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, এ অবস্থায় রাফায় পুরোমাত্রায় স্থল অভিযান চালালে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটবে এবং মানবিক বিপর্যয় দেখা দিবে, যা সামাল দেয়া কারো পক্ষেই সম্ভব নয়।

তিনি আরো বলেন, জাতিসঙ্ঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে জায়নবাদী ইসরাইলিরা অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক আইন-কানুন, রীতিনীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে। বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ এবং জাতিসংঘ দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর আগ্রাসন থামাতে বার বার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ফিলিস্তিন সমস্যার কোনো সমাধান হবে না।

ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আমরা জাতিসংঘ, ওআইসি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
ফিলিস্তিনে জাতিগত নিধন বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।

স্বাধীন ফিলিস্তিনি ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন-“হামাস”সহ আপামর জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সমর্থন জানাচ্ছি।

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন গোদনাইল চেয়ারম্যান অফিস আল-ফাতেহ জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব মুফতি ইসমাইল হাতেমী সাহেব, গোদনাইল আলোকিত যুব শক্তি সংগঠনের সভাপতি নুর মোহাম্মদ, ফুলজান আদর্শ স্কুলের প্রধান শিক্ষক জি এম সোলায়মান, ইয়ুথ লীড গ্লোবাল এর হেড অফ এইচ.আর মনিটরিং মেহেদী হাসান আশিক, সুজন-বন্ধু সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব জারিফ অনন্ত, গোদনাইল আলোকিত যুব শক্তি সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো.আশরাফুল আলম, মো.রাকিবুল হাসান, সিনিয়র সদস্য রাশেদ ইসলাম সবুজ, শহিদুল ইসলাম সুমন, দপ্তর সম্পাদক আরমান গাজী, পাঠাগার সম্পাদক রায়হান ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, সদস্য সায়মন, সাকিব, সজল, হাসান সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-যুব ও সাধারণ জনগণ।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close