জাতীয়ঢাকা

ঢাবিতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ১৫ জন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান ও ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকতের সামনে প্রকাশ্যেই সংঘর্ষে জড়ান তাদের অনুসারীরা। এতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) আনুমানিক রাত ১২টার পর ‘ধাক্কাধাক্কির’ মত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে বলে জানা যায়। রাতে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত দফায় দফায় চলে সংঘর্ষ। এরপর শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এ দুই নেতার সামনে আবারও সংঘর্ষে জড়ান তাদের অনুসারীরা।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জগন্নাথ হলে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ও ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় উভয়পক্ষই রড, লাঠি, স্ট্যাম্প নিয়ে হামলা পাল্টা হামলা চালাতে থাকে। সংঘর্ষের সূত্রপাতের সময় ঘটনাস্থলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।

একপর্যায়ে সংঘর্ষ থামাতে ব্যর্থ হয়ে এ চার নেতাই দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে শোডাউন দেন।

সংঘর্ষে অপুর্ব চক্রবর্তী, পল্লব মন্ডল, অর্পণ কুমার বাপ্পি, বিপ্লব পাল, বর্ষণ রয়, অভিষেক ভাদুড়ি, জয় দাসসহ আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তজা মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে, অপূর্ব চক্রবর্তীর মাথায় আটটি সেলাই লেগেছে।
তিনি বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি আছেন।
এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, মাতাল অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা গণেশ আমার গায়ের ওপর পড়লে সাময়িক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। পরে আমি মীমাংসা করে দিয়ে চলে আসি। পরে আমার গ্রুপের সঙ্গে পূর্বশত্রুতার জেরে হলের অন্যান্য কয়েকটি গ্রুপ একত্রিত হয়ে বাইরে থেকে লোক নিয়ে হামলা করেছে। বাইরে থেকে যাদের আনা হয়েছে তাদের শনাক্ত করতে হবে।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। হামলা মারামারি হয়েছে এমনটি আমি শুনিনি। তবে জানতে পেরেছি কিছু শিক্ষার্থীদের মধ্যে সামান্য বিষয় নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু মারামারির বিষয়ে আমি এখনো শুনিনি। এমন কিছু হয়ে থাকলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।

এ ঘটনার সূত্র ধরেই আজ আবার মারামারিতে জড়ায় দুই পক্ষ। আজকের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের এক অনুসারী বলেন, দুপুরের পর ইনান ভাইয়ের কাছে তানভীর হাসান সৈকত ভাইয়ের অনুসারীরা জগন্নাথ হলে ঘটে যাওয়া গতকাল রাতের মারামারির ঘটনার বিচার দিতে আসছিলেন। এ সময় পলাশ রায় সৌরভ নামে একজন ইনান ভাইয়ের সঙ্গে উচ্চস্বরে এবং বেয়াদবির স্বরে কথা বলায় ইনাম ভাইয়ের অনুসারীদের কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী ক্ষেপে যায় এবং তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তা মারামারিতে রূপ নেয়।
আজকের সংঘর্ষের ব্যাপারে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, একটা ঝামেলা হয়েছে মধুর ক্যান্টিনে, এরকমটা আমি শুনেছি। ওখানে আমার যারা ক্যান্ডিডেট ছিল তাদেরকে আমি বিস্তারিত খতিয়ে দেখে আমাকে জানাতে বলেছি। ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার পর আমরা দেখবো, কে অপরাধী। অপরাধী যেই হোক না কেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গতকালের মারামারির ঘটনায় জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, রাতে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৩-৪ জন আহত হয়েছেন। আমি তাদের রাতেই দেখে এসেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। হলেও ভাঙচুর হয়েছে সাধারণত হামলায় যা যা হয়। একজন লাফ দিয়েছে। তাকেও দেখে এসেছি। সে আপাতত সুস্থ আছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close