
নিজস্ব সংবাদদাতা: নেতাদের গা ঘেঁষে দাঁড়ালেই নেতা হয় না। নেতা সে-ই হয়, যার কথায় মানুষ সাড়া দেয়। আমার গ্রুপ কাজ করছে যে কোথায় কতটা ভোট পেয়েছি। আমি ইনডিভিয্যুয়ালী সবাইকে নিয়ে বসবো। যে যে সেন্টারের দয়িত্বে ছিলেন তাদের জিজ্ঞাস করবো। ভোট কম হলেও প্রশ্ন করবো, বেশী হলেও প্রশ্ন করবো। কার পায়ের তলায় মাটি কতটুকু দেখতে চাই। কেন ভোটাররা আসলো না, ইচ্ছে করেই ভোটার না আনলে সমস্য। আর যদি আনতে পারলেন না, কিন্তু চেষ্টা করেছিলেন। তাহলে ও-ই এলাকায় আরও চাষ করতে হবে।
বুধবার (১৭ জানুয়ারী) বিকেলে জালকুড়ি নম পার্কে অনুষ্ঠিতব্য ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগ, সকল সহযোগী অঙ্গ সংগঠন ও স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নির্বাচনোত্তর পুণর্মিলনী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব এ. কে. এম. শামীম ওসমান এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন- সিদ্ধিরগঞ্জে নির্বাচনের দিন সকালে মহিলারা ভোট দিতে গিয়েছিলো। এক এক কেন্দ্রে প্রায় ৪০০-৫০০ মহিলা গিয়েছে। কিন্তু সেখানে গেলে বলা হয় যে, মোবইল নিয়ে ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। সে-ই ভোটাররা ফিরে গেলেন। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ, আমরা বলার পর তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন। কিছু জায়গায় পুলিশ, কিছু জায়গায় প্রিজাইডিং অফিসার বললো মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুঁকতে পারবেন না। উনাদের সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ফতুল্লা পাইলট স্কুলের কেন্দ্র থেকে আমাকে বলেছিলো ৩ লাক টাকা দেন, না হলে ভোট স্লো হয়ে যাবে। আমি ৩ টাকাও দেই নাই, দেখি না কি হয়। আমি ভেবেছিলাম হয়তো ভোট ৪১-৪২ হবে কিন্তু ৩২ হয়েছে। কিছু কিছু এলাকায় যেমন বক্তাবলীতে প্রচারণায় তেমন যেতে পারি নাই। কিন্তু বক্তাবলী চমৎকার রেজাল্ট করেছে। ৫০ ভাগ ভোট কাস্ট করেছে। ফতুল্লা, কুতুবপুর, কাশিপুর ভোট কাস্টিং এর নিচে আছে।
এমপি শামীম ওসমান বক্তব্যে আরও বলেন- আমার নিম্নে ২৫-৩০ হাজার ভোট নষ্ট করা হয়েছে। ভোটার এসেছে কিন্তু ভোট দিতে দেয়া হয় নি।এখানে সবাই জড়িত না, তবে কিছু জড়িত। নির্বাচনের দিন আমি কোথাও যাই নি। ৯৬ সালের নির্বাচনেও কোথাও যাই নাই। আমি আমার বাবা-মায়ের কবরস্থানে ছিলাম। হাদিসে শুনেছি এক বসায় যদি ৪১ বার দোয়া ইয়াসিন খতম দিলে কবর আযাব মাফ হয়। আমি ১২ টায় বসেছি, ৩টায় উঠেছি। আমার বাসায় সাংবাদিক গিয়েছিলেন, কিন্তু তারা কেউ বিরক্ত করেন নাই। নির্বাচনের দিন ভোট দিয়ে চলে এসেছি। কোনবার রেজাল্ট এনালইসিস করিনি। কিন্তু এবার এনালইসিস করেছি। কারণ আমি নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করি। আমি আর আগামীতে নির্বাচন করবো না। তবে বাবা-মায়ের অবর্তমানে, মুরুব্বিদের জায়গা যে নেত্রীকে দিয়েছি উনি যদি বলেন তাহলে তার বাইরে কিছু করতে পারবো না। এখনও সব সমস্যার সমাধান হয় নাই। ওরা বাংলাদেশের মানুষকে না খাইয়ে মারার পরিকল্পনা করছে। বড় বড় শক্তি এবার এক জঘন্য খেলা নিয়ে মাঠে নেমেছ। আপনারা চাইলে টাকা দিয়ে জিনিস আনতে পারবেন না। একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, এদিকে প্যালেস্টাইনের উপর ইসরাইলের হামলা, আবার শুনেছি ইরানেরাও হয়তো যুদ্ধে জড়াবে। এই ৩ যুদ্ধের কারণে বিশ্ব বাজারে পণ্যের দাম বাড়ছে। কারণ যখন তেলের দাম বাড়ে, তখন সব কিছূতেই দাম বাড়ে। এতে আমরাও এফেকটেড হচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এক ইঞ্চি জমিও ফেলে রাখবেন না। যা পারেন চাষ করেন। একটা বড় ক্রাইসিস আসছে আমাদে দেশে। ৭৪ সালে বাংলাদেশে প্রবল দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছিলো। নেত্রী দেশে আসার পর বাসন্দিকে খুঁজে দেখতে গিয়েছিলাম। নেত্রীর মা-বাবা সহ ভাইয়ের মৃত্যুতে দেশের কোন উন্নতি হয়েছে কিনা সেটা দেখতে। বাসন্তি একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। সে গায়ে জাল পেচিয়ে শুয়ে ছিলো। আর তার ছবি তুলে বলা হয়েছে বাংলাদেশের মহিলাদের গায়ে কাপড় নেই। এ-ই ধরণের খেলা হবে সামনে। আপনারা মানসিক প্রস্তুতি নেন। ভৌগলিকভাবে অনেক কিছু হচ্ছে। বার্মারা আমাদের রোহিঙ্গারা যেখানে আছে, সে-ই জায়গা দখলে নিয়ে নিচ্ছে। এ-ইগুলো সব ইন্টারনেশ্যনাল পলিটিক্সের সাথে কানেকটেড। আমরা আগামীতে ক্রাইসিস ওভারকাম করতে যাচ্ছি। নেত্রীর উপর আমাদের ভরসা আছে। আল্লাহ যদি ধৈর্য, ভালোবাসা কাউকে দিয়ে থাকেন তাহলে তিনি হলেন শেখ হাসিনা। ২১ বার তাকে মারতে চেয়েছিলো পারে নাই। তার উপর আল্লার রহমতের চাঁদর আছে। যারা মানুষ পুড়িয়ে মারে তাদের সাথে সয়তান আছে। নেত্রীর জন্য দোয়া করবেন। উনাকে আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য দরকার। নির্বাচনের আগে আমি কোন সরকারী অফিসারের সাথে নির্বাচন নিয়ে কথা বলি নাই। ফ্রি ও ফেয়ার নির্বাচন করবো বলেছি।
বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. শওকত আলী’র সঞ্চালনায় উক্ত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীল, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ্ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর যুবগীলের সভাপতি সাজনু, জেলা শ্রমিক লীগের আহবায়ক আব্দুল কাদির, জেলা কৃষক লীগের আহবায়ক ও সাবেক পিপি এড. ওয়াজেদ আলী খোকন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ফতুল্লা থানা যুবলীগের সভাপতি মীর সোহেল, জেলা ছাত্রলোগের সাবেক সভাপতি নিপু সহ অন্যান্য সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।