নারায়ণগঞ্জ

বার্ধক্যের কারণে মা-বাবাকে কখনো ভাগ করা যাবে না: জেলা প্রশাসক নারায়ণগঞ্জ

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেছেন, শত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও মা-বাবা তার সন্তানকে কখনো ভাগ করেননি। তাই বার্ধক্যের কারণে মা-বাবাকে কখনো ভাগ করা যাবে না। সরকার প্রবীণদের জন্য বয়স্ক ভাতাসহ নানা সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন। এতে করে পরিবার ও সমাজে প্রবীণদের মর্যাদা বেড়েছে। সেই সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে হবে।

রোববার (১ অক্টোবর) সকালে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে প্রবীণ দিবসে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণায় প্রবীণদের জন্য প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি পূরণে প্রজন্মের দায়বদ্ধতা’ শ্লোগানে প্রবীণ দিবসে জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজ সেবা কার্যালয় ও বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার উদ্যোগে র‌্যালি ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, প্রবীণদের সুরক্ষা নিশ্চিন্তে সামাজিক দায়দবদ্ধতা বেশি। এই দিবসের অঙ্গীকার হোক, প্রবীণদের প্রতি শুধু সন্তানদের ভালো ব্যবহার নয়, সমাজের সবার ভালো আচরণ হওয়া উচিত। সরকার সমাজের বাস্তবতায় বৃদ্ধ পিতা-মাতার সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ভরণ পোষণ আইন করেছেন। নবীণ-প্রবীণদের নিয়ে দেশ, সমাজ আমরা এগিয়ে যাবে।
জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান সরদারের সভাপতিত্বে সহকারী পরিচালক সোলায়মান হোসেনের সঞ্চালনায়  আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা সিভিল সার্জন এএফএম মুশিউর রহমান, বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘের নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক তালুকদার প্রমুখ। এসম উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হক, সমাজ সেবা অধিদপ্তরের প্রকল্প সমন্বয় পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ ভাসানী। আলোচনা সভার আগে র্যালি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে।
স্বাগত বক্তব্যে মোজাম্মেল হক তালুকদার বলেন, প্রবীণ জনগোষ্ঠি অবহেলিত। বৃদ্ধ মা-বাবার প্রতি সন্তানদের যত্মশীল হতে হবে। ছেলে-মেয়েদের নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে, যাতে কোন পিতা-মাতাকে প্রবীন নিবাসে যেতে না হয়। তিনি বলেন, ৯৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রবীণ হিতৈষী সংঘ জেলা শাখা প্রবীণদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তাদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
জেলা সিভিল সার্জন মুশিউর রহমান তার ক্তব্যে বলেন, প্রবীণ জনগোষ্ঠি স্বাস্থ্যগত সমস্যায় বেশি ভোগেন। প্রবীণদের কর্মক্ষম ও সুস্থ রেখে আমাদের দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। হাসপাতালগুলোতে প্রবীণদের জেষ্ঠ্য নাগরিক হিসেবে চিকিৎসা সেবা প্রদানের নির্দেশনা রয়েছে। প্রবীণরা যাতে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা পায় সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রবীণরা অবহেলিত নয়, তারা আমাদের সমাজ ও দেশের সম্পদ। তাই প্রবীণদের প্রতি যত্মবান ও দায়িত্বশীল হতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আসাদুজ্জামান সরদার বলেন, সরকার প্রবীণ জনগোষ্ঠির দায়িত্ব নিয়েছেন। বয়স্ক ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা, বিধবা ভাতাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা চালু করেছেন। তিনি বলেন, জেলায় ৭২ হাজার জনকে ৫০০ টাকা করে বয়স্ক ভাতা প্রদান করা হচ্ছে। প্রত্যেক উপজেলা হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতি থেকে প্রবীণদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হচ্ছে। প্রবীণ জনগোষ্ঠীর সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করতে সরকার পিতা-মাতার ভরণ আইন করেছেন।

 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close