অপরাধফতুল্লা

ফতুল্লা মডেল থানায় ৫০ হাজার টাকায়  ছিনতাইয়ের আসামীকে গাঁজা দিয়ে চালান!

আমি কারও কাছ থেকে টাকা নেইনি: এসআই শহীদুল, খোঁজ নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: এএসপি জহিরুল

ইউসুফ আলী প্রধানঃ
২৯ আগস্ট, দুপুর ১২টা নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলাধীন ফতুল্লার মাসদাইরে হৃদয় নামে এক যুবকের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ভুক্তভোগীর মা ফারজানা বেগম। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে হৃদয়কে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। বিষয়টি পুলিশকে জানালে নানান তালবাহানা শুরু করে তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে অভিযোগের বাদির কাছ থেকে কয়েকধাপে প্রায় ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা নিয়ে রীতিমতো হতাশ অভিযোগের বাদি ফারজানা বেগম।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ আগস্ট দুপুর ১২টায় মাসদাইর গুদারাঘাট এলাকা থেকে ২৫ হাজার টাকা নিয়ে বাসায় যাওয়ার পথে বিবাদী রাকিব (২৫), আসিফ (২৫) ও সাঈদ (২৬) মিলে বাদি ফারজানা বেগমের ছেলে রাকিবের পথরোধ করে এলোপাথারীভাবে মারধরে করে ২৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ বিষয়ে অভিযোগের ২নং বিবাদী রাজিবের (৩৫) কাছে জানালে পরবর্তীতে আবারও ওই রাকিব (২৫), আসিফ (২৫) ও সাঈদ (২৬) মিলে ফারাজানা বেগমের বাড়িতে প্রবেশ করে তার ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে। এ বিষয়ে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) শহিদুলকে অবগত করলে সে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং বিবাদীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস প্রদান করে।
এদিকে, থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার জেরে বাদির ছেলে হৃদয়কে অপহরণ করে অভিযোগের বিবাদীরা। ফারাজানা বেগমকে মুঠোফোনে জানানো হয় তার ছেলেকে জীবিত ফেরত চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে তাদের ১ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এসব কিছু এসআই শহিদুলকে জানানো হলেও সে বিবাদীদের গ্রেফতার না করে নানান তালবাহানা শুরু করে। এমতাবস্থায় বিবাদীদের গ্রেফতার করতে হলে খরচ লাগবে বলে ভুক্তভুগী ফারজানা বেগমকে জানান উপ পরিদর্শক শহীদুল। এ নিয়ে ধাপে ধাপে বাদি ফারজানা বেগমের কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা নেন এসআই শহীদুল।
এমনসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম বলেন, টাকা নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি কারও কাছ থেকে কোন টাকা পয়সা নেইনি। বরং এরইমধ্যে অভিযুক্ত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং বাকিদেরকেও গ্রেফতার করা হবে।
অপরদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযোগের ১নং বিবাদী রাকিবকে গাঁজা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হবে জানিয়ে ভুক্তভুগী ফারজানা বেগমের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা দাবি করে এসআই শহীদুল। পরবর্তীতে ধাপে ধাপে প্রায় ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ১ কেজি গাঁজা দিয়ে রাকিবকে মামলা দেয় শহীদুল। অথচ, রাকিবের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ছিনতাই ও ভাংচুর।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) নাজমুল হাসান বলেন, সেবাই পুলিশের ধর্ম। পুলিশের কাজ মানুষকে সেবা দেওয়া। পুলিশের সেবা নিতে কোন টাকা পয়সা লাগে না। যদি আমাদের কোন পুলিশ সদস্য কোন ভুক্তভুগীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকে তাহলে সে যেই হোক না কেনো খোঁজ নিয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close