নারায়ণগঞ্জমতামতরাজনীতি
ফুলবাড়ী দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি, নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, পৌনে তিন’শ বছর আগের ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানীর চক্রান্তের সাথে দেশীয়দের হাত মিলিয়ে চক্রান্ত করার ধারাবাহিকতা এখনো অব্যাহত আছে। সব সময়েই সরকারের সুবিধাভোগী ব্যক্তিবর্গ বিদেশী লুটেরা কোম্পানীর সাথে আতাত করে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়েছে।
১৯৯৭ সালে আওয়ামী লীগ শাসনামলে সরকার ব্রিটিশ কোম্পানী এশিয়া এনার্জির সাথে দেশে ভূগর্ভস্থ সম্পদ অনুসন্ধান করার জন্য চুক্তি করেছিল। পরে ২০০৫ সালে তারা অনুসন্ধান শেষ করলে বিএনপি সরকার ৩০ বছরের জন্য উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের জন্য এশিয়া এনার্জির সাথে নতুন করে চুক্তি করে।
তখন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, তারা ক্ষমতায় গেলে ফুলবাড়ী চুক্তি বাস্তবায়ন করবেন, উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের বিরুদ্দে আইন করবেন। অথচ তাদের ক্ষমতার পনের বছর হতে চলল কিন্তু আজো পর্যন্ত তারা ফুলবাড়ী চুক্তির বাস্তবায়ন করে নাই এবং উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের বিপক্ষে কোনও আইন পাশ করে নাই।
সদস্য সচিব ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদের জেলা সদস্য সচিব আবু নাইম খান বিপ্লব, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সংগঠক অঞ্জন দাস, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি হাফিজুর রহমান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহামুদ হোসেন ও দুলাল সাহা। সমাবেশর শুরুতে ফুলবাড়ী শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, সরকার বিদেশী কোম্পানীকে দিয়ে সুন্দরবন, ফসলি-জমি, প্রাণ প্রকৃতি ধ্বংস করে উন্নয়নের প্রচারণা চালাচ্ছে। ফুলবাড়ীতে সে সময় সরকার গণআন্দোলনকে প্রতিহত করতে পুলিশ ও বিডিআর দিয়ে নিরীহ জনগণের উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়ে তরিকুল, সালেকিন, আল আমিন সহ ছয় জনকে হত্যা করেছিল। ২৬ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত চলা আন্দোলনের সময় ফুলবাড়ীতে কোনও প্রশাসন ও এশিয়া এনার্জির কোনও কর্মকর্তা ছিল না। সবাই পালিয়ে গিয়েছিল।
জনগণের সে প্রতিরোধের কারণে সরকার তখন উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে আন্দোলনরত জনগণ ও জাতীয় কমিটির সাথে ৬দফা চুক্তি করতে বাধ্যহয়েছিল। এশিয়া এনার্জির সাথে সকল চুক্তি বাতিল করে তাদেরকে দেশ থেকে বহিস্কারের সিদ্ধন্ত গ্রহণ করেছিল।
কিন্তু আজকে এশিয়া এনার্জি তাদের নাম বদল করে আবারো দেশে বিভিন্ন অপ-তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে। সমাবেশের শেষে একটি একটি বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে।