জাতীয়
আজ ফুলবাড়ী দিবস
আজ ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ী দিবস। ১৭ বছর আগে ২০০৬ সালের এই দিনে দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে উন্মুক্ত খনন পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরতদের ওপর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গুলি চালায়। এতে তিনজন নিহত ও দুই শতাধিক আহত হন।
ফুলবাড়ীতে কয়লা খনির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে ১৯৯৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নভিত্তিক কোম্পানি বিএইচপির সঙ্গে চুক্তি করে তৎকালীন সরকার। ১৯৯৭ সালে ফুলবাড়ীতে কয়লার সন্ধান পায় কোম্পানিটি। পরে এশিয়া এনার্জির সঙ্গে কয়লা উত্তোলনে সরকার ৩০ বছর মেয়াদি একটি অসম চুক্তি করে। চুক্তি অনুযায়ী, উত্তোলিত কয়লার মাত্র ৬ শতাংশ পাবে বাংলাদেশ, ৯৪ শতাংশ পাবে এশিয়া এনার্জি, যার ৮০ শতাংশ তারা রপ্তানি করবে।
২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট তেল-গ্যাস, খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি বহুজাতিক কোম্পানি এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী অফিস ঘেরাও কর্মসূচি দেয়। ফুলবাড়ী, বিরামপুর, পার্বতীপুর ও নবাবগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার মানুষ এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। ছোট যমুনা সেতুর পূর্ব পাশে পুলিশ ও বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) ওই মিছিলে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আমিনুল ইসলাম আমিন ও মো. সালেকিন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তরিকুল ইসলাম নিহত হন। শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের হরতাল-অবরোধ। ৩০ আগস্ট ছয় দফা সমঝোতা চুক্তি সই হয়।
ওই আন্দোলন চলাকালে গুলিবিদ্ধ অনেকেই পরবর্তী সময়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। এ রকমই একজন বাবলু রায়। তিনি জানান, তার কোমরে ঘা হয়েছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না। ছয় দফা চুক্তির বাস্তবায়ন দেখে যেতে পারলে তিনি মরেও শান্তি পেতেন।
তেল-গ্যাস, খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ‘ফুলবাড়ী দিবস’ এবং ফুলবাড়ীর সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠন ‘ফুলবাড়ী শোক দিবস’ হিসেবে পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করেছে।