সিলেট বিভাগ

৫ ধাপে কমলগঞ্জে ইউপি নির্বাচনঃনির্বাচনী মাইকের উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ জনসাধারণ

কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: ৫ম ধাপে আগামি ৫ জানুয়ারি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। শেষ পর্যায়ে এসে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের প্রচারনার মাইকের উচ্চ শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন জনসাধারণ।

নির্বাচনী প্রচারণায় মানা হচ্ছে না কোন আচরণবিধি। প্রতিদিন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে অতিরিক্ত মাইক দিয়ে প্রার্থীদের প্রচার চালানো হচ্ছে। মাগরিব ও এশার নামাজের সময়ও বন্ধ থাকে না মাইকের প্রচারনা। ফলে নামাজীদের সাথে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকা হার্ট, কান ও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দুপুর দুইটার পরেই মাইকে শুরু হয় প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা। চলে টানা রাত ৮টা পর্যন্ত। চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের নানা গুণগান সমৃদ্ধ স্লোগান প্রচার করা হয় মাইকে। কেউ নিজের কণ্ঠেই বলে যাচ্ছেন, কেউ আবার রেকর্ড করা স্লোগান ছেড়ে দিচ্ছেন। এতে এক রকমের অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ৯টি ইউনিয়নের জনসাধারণ। গত ২০ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে শুরু হয় প্রচারণা। ঠিক দুপুর ২ টার সময় থেকেই প্রার্থীদের সর্মথকেরা মাইকে প্রচারণার প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন। অনেক সময় ভিন্ন ভিন্ন প্রার্থীদের একই সড়কে অটোরিকশায় ৭-৮টি প্রচারণার মাইক চলে।

জনসাধারণকে শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে ওই সময়টুকু দুই হাত দিয়ে কান চেপে ধরতে দেখা গেছে। শহরের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে পথচারীরাও উচ্চ শব্দের যন্ত্রণা ভোগ করছেন। বাসা বাড়িতেও শিশু ও বয়স্কদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মাইকের উচ্চ শব্দ। উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ৫ম ধাপে আগামি ৫ জানুয়ারি কমলগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩৩, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১০৬ ও সাধারণ সদস্য পদে ৩২৭ জনসহ মোট ৪৬৬ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। উপজেলার কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টার পরও প্রতিদিন উচ্চ শব্দে মাইক বাজিয়ে প্রার্থীদের নানা প্রচারণা চালানো হয়। ফলে রাস্তার পাশে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হাসপাতাল, অফিস, ব্যাংক ও দাপ্তরিক কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে।

উপজেলার ব্যবসায়ী মনির হোসেন বলেন, প্রতিদিন প্রধান সড়ক দিয়ে ৭-৮টি মাইক উচ্চ শব্দে প্রচারণা চালায়। অনেক আবার গান বাজিয়ে প্রার্থীদের নানা স্লোগান দেন। দুপুর থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মারাত্মক যন্ত্রণা সহ্য করতে হচ্ছে। কাউকে বলেও লাভ নেই, এ বিষয়ে কেউই গুরুত্ব দিচ্ছে না। হাসপাতাল সড়কের বাসিন্দা মোশারেফ হোসেন বলেন, প্রার্থীদের প্রচার মাইক হাসপাতালের সামনে দিয়ে গেলেও থামে না। শব্দ দূষণে আমরাই অতিষ্ঠ, রোগীদের অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে।

শমশেরনগর হাজী উস্তার বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া বেগম জানায়, মাইকের উচ্চ শব্দের কারণে পড়ালেখায় বিঘœ ঘটছে। দুপুরের পর থেকে শব্দে কান ফেটে যায়। এ ব্যপারে একাধিক প্রার্থী জানান, প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে চার থেকে ৫জন সদস্য প্রার্থী ও দুই থেকে পাঁচজন মহিলা সদস্য প্রার্থীর প্রচারণা চলছে। শব্দ নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলা হলেও যিনি মাইকিংয়ের দায়িত্বে থাকেন, তাঁর ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে কতটুকো শব্দ ব্যবহার করা হবে। তবে নিয়ন্ত্রিত শব্দ দিয়ে প্রচারণা চালানোর কথা জানিয়েছেন কয়েকজন প্রার্থী। এ ব্যপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার বলেন, নীতিমালার চেয়েও প্রার্থীদের কাছে ভোটারের পছন্দ অপছন্দ বিবেচনা করতে হবে। উচ্চ শব্দ সবার জন্যই ক্ষতিকর। আমাদের ভ্রাম্যমাণ টিম রয়েছে মাঠে, তাঁরা প্রয়োজনে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারেন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close