আন্তর্জাতিক

সুদান ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের ১০০ দিন পেরুলেও থামার ইঙ্গিত নেই

সুদানের ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ের ১০০ দিন পেরুলেও যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ নেই। খার্তুমের দখল নিয়ে ১৫ এপ্রিল সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর (র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস-আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া যুদ্ধে রোববার ১০০ দিন পূর্ণ হয়েছে। তবু যুদ্ধ চলছেই। সহিংসতার আগুনে পোড়া এ সংঘাত শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ নাই। ইতোমধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। উলটো তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠছে দিন দিন।

যুদ্ধ এখন খার্তুম, দারফুর অঞ্চলের পাশাপাশি কর্ডোফান ও ব্লু -নীল রাজ্যের কিছু অংশেও যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৩ হাজার মানুষ মারা গেছে বলে জানায় সুদানের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। বাস্তচ্যুত হয়েছে ৩০ লাখেরও বেশি।

জাতিসংঘের মতে, প্রথম এক সপ্তাহেই বাস্তচ্যুত হয়েছে ২ লাখ মানুষ। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৭ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে।

এখানেই শেষ নয়। ১০০ দিনের যুদ্ধের পর পশ্চিম দারফুরে আবারও ভয়াবহ নৃশংসতা ঘটেছে বলে জানা যায়। আরএসএফ ও আরব মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে আইনজীবী, মানবাধিকার পর্যবেক্ষক, ডাক্তার ও অ-আরব উপজাতিদের হত্যার অভিযোগ উঠে আসে। স্থানীয় নাগরিকরা বলছেন, সরকারের সেনাবাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। আরএসএফ আরব মিলিশিয়ারা সঙ্গে হাত মিলিয়ে এ হত্যাকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছে বলে জানায় তারা।

তবে আরএসএফ এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, পশ্চিম দারফুরের সহিংসতা এক দশক পুরোনো উপজাতি সংঘাতের ফলাফল। আরএসএফের মুখপাত্র উইসিফ ইজ্জাত বলেন, ‘আরব মিলিশিয়ারা আরএসএফের সঙ্গে মিত্র হয়েছে এটা সম্পূর্ণ সত্য নয়।’ গণকবর, মৃত্যুদণ্ড ও পুড়িয়ে দেওয়া গ্রামগুলোর প্রতিবেদন জাতিসংঘ ও অধিকার গোষ্ঠীগুলো দ্বারা যাচাই ও নথিভুক্ত করা হয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসে বলেন, ‘সুদানের মানুষ ও যারা প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে গেছে তাদের সহায়তায় প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলান প্রয়োজন।’ কিন্তু আন্তর্জাতিক দাতারা সঙ্কট মোকাবিলায় ১.৫ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করতে এই পরিমাণ দ্বিগুণ করা প্রয়োজন বলে মনে করে মানবিক সংস্থাগুলো। এদিকে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, বিভিন্ন কূটনৈতিক উদ্যোগ সমাধানের জন্য যথেষ্ট নয়। হর্ন অব আফ্রিকার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ প্রজেক্টের সমন্বয়কারী অ্যালান বসওয়েল বলেন, এখানে কূটনীতির একটি মারাত্মক ব্যর্থতা রয়েছে। আমরা খুব বেশি প্রতিযোগিতা ও খুব কম সহযোগিতা দেখতে পাচ্ছি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!
Close