কুড়িগ্রামে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি। অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্র ও তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও এখনো বিপৎসীমার নিচেই রয়েছে। এতে করে প্লাবিত হয়ে পড়েছে জেলার নিম্নাঞ্চলসহ চরাঞ্চলেগুলো। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন অন্তত ৬০ হাজার মানুষ।
এদিকে, অনেক চরাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও নিচু এলাকার কাঁচা পাকা সড়ক তলিয়ে থাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এসব এলাকার অনেকে এখন উঁচু স্থান ও নৌকায় বসবাস করছেন।
শনিবার (১৫ জুলাই) দুপুরে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস জানায়, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার এবং কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার ও দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উলিপুর উপজেলা বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বালাডোবা চরের বাসিন্দা আব্দুল মজিদ বলেন, ‘পানির কারণে বউ-বাচ্চাকে উঁচু স্থানে রাখছি। নৌকায় করে ঘরের অন্যন্য জিনিসপত্র খুলে নিচ্ছি। গতকাল ১০ কেজি চাল পাইছি। চাল পেলে কি হবে রান্না করা খুব কষ্ট। খাবার পানিরও খুব কষ্ট, কনেক দূর থেকে পানি এনে খাইতে হয়। সবমিলিয়ে অনেক কষ্টে আছি ভাই।’
একই ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাডোবা চরের হাসিনা বেগম বলেন, ‘রাত থেকে আমার এক বছর বয়সী বাচ্চাটা অসুস্থ। প্রচুর জ্বর সর্দি হইছে ওর। কোথাও কোনো ডাক্তার নাই। বাচ্চাটা শুধু কান্না করছে। তার কান্না দেখে খুব কষ্ট লাগছে। তাই আজ নৌকায় মোল্লার হাটে নিয়ে যাচ্ছি ওকে। ’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি বর্তমানে কিছুটা স্থিতিশীল অবস্থায় থাকলেও এখনো দুধকুমার ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী ২-১ দিনের মধ্যে এই দুই নদীর পানি কমতে শুরু করবে। তবে ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়তে পারে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাঈদুল আরীফ জানান, পানিবন্দী মানুষের জন্য ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুত রয়েছে। গতকাল ৬০০ পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে। আজও ত্রাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।